নিউ জিল্যান্ড সিরিজে বিশ্বকাপ ভাবনা বাংলাদেশের
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
নিউ জিল্যান্ড পাঠিয়েছে প্রায় দ্বিতীয় সারির দল। বাংলাদেশেও নেই অভিজ্ঞ সব খেলোয়াড়। তবুও বৃহস্পতিবার ঢাকায় শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজের গুরুত্ব কমছে না সামনে বিশ্বকাপ বলেই। নিউ জিল্যান্ডকে দেশের মাটিতে গত দুই সিরিজের মতো আবার হারানোর লক্ষ্য আছে তো বটেই। তবে বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপের আগে কয়েকজনকে বাজিয়ে দেখা আর কয়েকজনের ফর্ম ফিরে পেতে সাহায্য করা।
প্রায় ১০ বছর পর দেশের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও নিউ জিল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজ। বাংলাদেশে হওয়া শেষ দুই সিরিজের কোনো ম্যাচেই টাইগারদের হারাতে পারেনি কিউইরা। তারা শেষ জয় পেয়েছে ২০০৮ সালের ১৪ অক্টোবরে। এমনকি মিরপুরে খেলা শেষ আটটি ওয়ানডের সাতটিতেই জয় বাংলাদেশের।
সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে দলের নিয়মিত ছয় ক্রিকেটার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম, অল রাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং তিন পেসার তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলামকে।
আগামী মাসে ভারতে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজে তাই কয়েকজন ক্রিকেটারকে পরীক্ষা করে নেওয়ার দারুণ সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে মূল ক্রিকেটাররা ফেরা না পর্যন্ত পজিশন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না তারা।
চোট সেরে নিয়মিত ওপেনার তামিম ইকবালের পাশাপাশি ছয় মাস পর জাতীয় দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ এবং প্রায় দেড় বছর পর ফিরেছেন সৌম্য সরকার।
তামিমের লক্ষ্য অবশ্যই বিশ্রামের পর ফর্মটা ঝালাই করে নেওয়া। তবে মাহমুদউল্লাহ আর সৌম্যর লড়াইটা অন্য। সিরিজে খুব ভালো করে বিশ্বকাপের দলের জন্য দাবি জানিয়ে রাখতেই চাইবেন তারা।
তবে ফর্মে ফেরার সবচেয়ে বড় লড়াইটা করতে হবে খোদ প্রথম দুই ম্যাচের অধিনায়ক লিটন দাসকে। ২০২২ সালটা দুর্দান্ত কাটানো এই টপ অর্ডারের ব্যাট কথা বলছে না এই বছরে। অধিনায়কের দায়িত্ব সামলেও লিটনের চেষ্টা থাকবে বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচগুলোতে হারানো ফর্ম ফিরে পাওয়া।
অন্যদিকে নিউ জিল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলের মাত্র পাঁচ ক্রিকেটার খেলবেন এ সিরিজে। অধিনায়ক লকি ফার্গুসনের সঙ্গে রয়েছেন বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গত সপ্তাহে ওয়ানডে ক্রিকেটে ফেরা ট্রেন্ট বোল্ট। ২০২৩ সালে কিউইদের হয়ে দারুণ ছন্দে থাকা অল-রাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র এবং লেগ-স্পিনার ইশ সোধি। আর এ বছর একদিনের ক্রিকেটে কিউইদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক উইল ইয়ং।
বোল্টের লক্ষ্য অবশ্যই থাকবে বিশ্বকাপের আগে ম্যাচ প্র্যাকটিস। অন্যরা ভারতের প্রায় কাছাকাছি আবহাওয়া আর কন্ডিশন মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টাটাই বেশি করবেন।
সিরিজ শুরুর আগে স্বভাবতই আসছে বাংলাদেশের গত দুই সিরিজে কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করার পরিসংখ্যান। তবে দুই দলের অধিনায়কই ২০১০ ও ২০১৩ সালের সিরিজে কী হয়েছে তা নিয়ে ভাবতে চান না।
ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন অধিনায়ক লিটন। বুধবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি যখন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি আমার প্রথম কাজ ম্যাচ জেতা। সবার এই লক্ষ্যই থাকে। দিন শেষে ১০০ করলে বা ৫ উইকেটে পেয়ে ম্যাচ না জিতলে এটার মূল্য থাকে না। সব খেলোয়াড় পারফর্ম করতে চাইবে। একদিনে সবাই পারফর্ম করবে না, হয়তো দু–একজন করবে। এটাই ক্রিকেট, এটাই হয়ে আসছে, সামনেও এটাই হবে। সবাই চেষ্টা করবে, যার কপাল থাকবে, দিন থাকবে, সে ভালো করবে। মূল লক্ষ্য থাকবে ম্যাচ জেতা।”
দলকে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দেওয়া ফার্গুসন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দেখুন, প্রতিটি সিরিজই আমরা জয়ের জন্য খেলি। বাংলাদেশ তাদের কন্ডিশনে খুবই ভালো এবং আমাদের জন্য এখানে এটি বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। ছেলেরা সিরিজ জয়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। তবে যাই হোক, আমরা জানি এটি প্রথম ম্যাচের প্রথম বল দিয়েই শুরু হবে। ফলে আগামীকাল কী আসছে সেটির দিকে নজর দেওয়া এবং কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।”
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার দিবা-রাত্রির ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর ২টায়।
মন্তব্য করুন: