বিশ্বকাপে দর্শকখরার কারণ কী?
২১ অক্টোবর ২০২৩
ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ, অথচ দর্শক নেই! এই অস্বাভাবিক দৃশ্যটাই দেখা যাচ্ছে চলতি ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসরে। ভারতের মানুষ যে কতটা ক্রিকেট পাগল সেটা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু বেশিরভাগ ম্যাচেই গ্যালারি পূর্ণ হচ্ছে না। ইতোমধ্যে টুর্নামেন্টের দুই সপ্তাহ কেটে গেছে। ইংল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে আসর জমিয়ে তুলেছে আফগানিস্তান ও নেদারল্যান্ডস। কিন্তু ভারতে বিশ্বকাপে দর্শক খরার কারণ কী?
ইংল্যান্ড আর নিউ জিল্যান্ডের মধ্যে উদ্বোধনী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল আহমেদাবাদের ১ লাখ ৩২ হাজার ধারণক্ষমতার নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। আয়োজকরা জানান, এই ম্যাচের জন্য টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৪৫ হাজার। একটা বড় সংখ্যক টিকিট বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও উদ্বোধনী ম্যাচে আহমেদাবাদের গ্যালারিতে প্রায় ৮০ হাজার আসন ছিল ফাঁকা। সময় গড়ানোর সঙ্গে কিছু দর্শক সংখ্যা অবশ্য বেড়েছে। যেমন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড-আফগানিস্তান ম্যাচে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক ছিল।
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১৯ বিশ্বকাপে ভিন্ন চিত্র দেখা গিয়েছিল। ওই বিশ্বকাপে ৯৫ শতাংশ টিকেট বিক্রি হয়েছিল। অবশ্য ইংল্যান্ডের স্টেডিয়ামগুলো ভারতের তুলনায় বেশ ছোট, তাই তুলনা করাটা কঠিন হবে। আহমেদাবাদের ৪৫ হাজার দর্শক যদি লর্ডসে যেত, তাহলে গ্যালারি পূর্ণ হয়েও বাইরে আরও ১৪ হাজার মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।
ভারত বিশ্বকাপে টিকিট বিক্রির অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই প্ল্যাটফর্মগুলোতে গ্যালারির কিছু অংশের টিকিট শেষ হয়ে গেছে দেখালেও বাস্তবে ওই অংশের বড় অংশ ফাঁকা থাকছে।
চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের দিনেও হাজার হাজার টিকিট ছাড়া হয়েছিল। অথচ আগে ধারণা করা হয়েছিল যে সব টিকিট শেষ!
এছাড়া বিশ্বকাপের দেড় মাস আগেও ম্যাচের সময়সূচি চুড়ান্ত না হওয়ায় বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা তৈরিতে সমস্যায় পড়ে যান। টিকিট ছাড়া হয় ছয় সপ্তাহেরও কম সময় আগে।
বিশ্বকাপে দর্শক না হওয়ার পেছনে ভিসা সমস্যাও একটা বড় কারণ। পাকিস্তানি দর্শকরা তো ভিসা না পাওয়ায় ভারতে যেতেও পারেননি। এমনকি দেশটির সাংবাদিকরাও ভিসা সমস্যায় পড়েছেন। দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণেই এমনটা ঘটেছে। আবার অনেকে বলছেন, ওয়ানডে ক্রিকেট যে ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে, বিশ্বকাপে দর্শক খরা তার বড় প্রমাণ। আইপিএলে কিন্তু গ্যালারি ভরতে বেগ পেতে হয় না। কারণ আইপিএলের ম্যাচগুলো সন্ধ্যায় শুরু হয়। স্থানীয়রা কাজ শেষ করে দেখতে পারে।
ভারতের ম্যাচগুলোতে ভরা গ্যালারি প্রমাণ করে যে, দেশটির জনগন নিজের দেশের ক্রিকেট ভালোবাসে। কিন্তু অন্য দলগুলোর ক্ষেত্রে তাদের সেই ক্রিকেট প্রেম থাকে না। অন্যদিকে ইংল্যান্ড বিভিন্ন জাতির মানুষ থাকায় ২০১৯ বিশ্বকাপের স্বাগতিকদের ম্যাচ ছাড়াও অন্য ম্যাচে গ্যালারি ভরেছে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মেলবোর্নেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও ৯০ হাজার দর্শক হয়েছিল।
মন্তব্য করুন: