প্রোটিয়াদের রুদ্ররূপ সাকিবদের জন্য অশনি সংকেত
২১ অক্টোবর ২০২৩
৪২৮, ৩১১ -এর পর ৩৯৯। দক্ষিণ আফ্রিকা এবারের বিশ্বকাপে দেখাচ্ছে তাদের রুদ্ররূপ। শনিবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করল তারা। প্রোটিয়াদের এই ভয়ংকর ব্যাটিং দেখে বাংলাদেশ দলের শঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আগামী মঙ্গলবার একই ভেন্যুতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যে দক্ষিণ আফ্রিকা!
২০১৯ বিশ্বকাপে এই দক্ষিণ আফ্রিকাকেই ২১ রানে হারিয়ে আসর শুরু করেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার বাংলাদেশ। দ্য ওভালে টাইগারদের ৩৩০ রান তাড়া করে সেবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেমেছিল ৩০৯ রানে। এবার তো পরিস্থিতি আলাদা। আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা বাংলাদেশ পরের তিন ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ধুঁকেছে। বিশেষ করে টপ-অর্ডারের ব্যাটিং ধ্বসে পড়েছে বারবার। ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ওপেনিং জুটি ভালো করলেও পরের কেউই আর দাঁড়াতে পারেননি।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে দারুণভাবে থিতু হয়ে যাওয়া একটা দল হুট করেই যেন ছন্নছাড়া হয়ে গেল। টুর্নামেন্টে ভালো করার প্রস্তুতি আর পরিকল্পনার চেয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, কোচ-নির্বাচকদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গণমাধ্যমে দেওয়া ক্রিকেটারদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যগুলোই চলে আসে আলোচনায়।
আসর শুরুর পরও তো কম নাটক হয়নি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কোনো প্রেস কনফারেন্সে আসেননি। অন্য সব দলের অধিনায়করাই যেটা করেছেন। সাকিবের চোট নিয়েও এখন পর্যন্ত চলছে লুকোচুরি। স্ক্যানের ফল নিয়ে কোনো তথ্য জানানো হচ্ছে না। ভারতের বিপক্ষে খেলেননি, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবেন কিনা কেউ জানে না।
বাংলাদেশ ব্যাটিং অর্ডারে চলছে নিয়মিত রদবদল। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক যতই বলুন ক্রিকেটাররা যে কোনো পজিশনে খেলতে প্রস্তুত, আসলে তারা ভিন্ন পজিশনে সেট হতে পারছে না। বিশ্বকাপের আগে দারুণ ফর্মে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ মাঠে নামার আগেও হয়তো জানেন না, তাকে কোন পজিশনে তাকে খেলতে হবে। চলতি বছর রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া আরেক টপ-অর্ডার নাজমুল হোসেন শান্তরও হয়েছে একই হাল। তিনিও জানেন না, কোথায় তাকে ভূমিকা রাখতে হবে। এসব কাণ্ড দেখে ক’দিন আগে অনিল কুম্বলে বলেছিলেন, “আপনি যদি বিশ্বকাপে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন, তবে সেটা বড় মুশকিলের ব্যাপার!”
তবু বাংলাদেশ প্রতি ম্যাচেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও হয়তো একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। নেদারল্যান্ডসের কাছে অঘটনের হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা আজ যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল, সেটা নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত। নিজেদের পারফর্মেন্স ভালো করতে না পারলে সাকিব আল হাসানরা একটাই প্রার্থনা করতে পারেন, সেদিন মুম্বাইয়ে যেন দক্ষিণ আফ্রিকা ফের তাদের ‘চোকার্স’ রূপটা দেখিয়ে দেয়।
মন্তব্য করুন: