‘সবসময়ই আমাদের টার্গেট পরবর্তী বিশ্বকাপ’
২৮ অক্টোবর ২০২৩
ইডেন গার্ডেন্সে বসে বাংলাদেশের পরাজয় দেখছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ক্যামেরা গ্যালরিতে ঘুরতেই দেখা গেল, একজন দর্শকের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘সবসময়ই আমাদের টার্গেট পরবর্তী বিশ্বকাপ’।
রসিক ক্যামেরাপারসন জানেন কি না সেটা তো বলা মুশকিল, তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গন নিশ্চয়ই জানে, প্ল্যাকার্ডে থাকা এই বক্তব্যটি আসলে কার। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জঘন্য পারফর্মেন্সের পর এমনই কিছু বলেছিলেন বিসিবি সভাপতি স্বয়ং। চলতি বিশ্বকাপে একের পর এক লজ্জাজনক পারফরমেন্সে তার কথাটারই যেন সত্যতা প্রমাণিত হচ্ছে বারবার।
অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নজিরবিহীনভাবে দল রেখে দেশে ফিরেছিলেন যাতে গুরু নাজমুল আবেদিন ফাহিমের কাছে পরামর্শ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অবদান রাখতে পারেন। সেটা তো পারেনইনি, বরং ব্যর্থতার ষোলকলা পূরণ হলো ডাচদের কাছে ৮৭ রানের বিশাল পরাজয়ে। সেদিন মিরপুর শের-ই-বাংলায় সমর্থকদের দুয়ো ধ্বনি শুনেছিলেন সাকিব। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৪ বলে ৫ রান করে আউট হয়ে ফেরার সময় ইডেনের গ্যালারি থেকেও তাকে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে তিরস্কার করেছে। টানা চার ম্যাচ হারের পরও ইডেনে প্রচুর বাংলাদেশি সমর্থক গিয়েছিলেন সাকিবদের সমর্থন দিতে। আইসিসির সহযোগী সদস্য দলের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ তাদের জন্য কতটা যে বেদনার- সেটা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশে সবসময়ের লক্ষ্য যে পরবর্তী বিশ্বকাপ- চলতি আসরে সেটার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে প্রতি ম্যাচেই। প্রতি ম্যাচেই চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ৭ নম্বরে খেলানো হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজকে। শনিবার তাকেই উঠিয়ে আনা হলো তিনে। নাজমুল হোসেন শান্তকে নেমে যেতে হলো চারে। টুর্নামেন্ট জুড়েই চলছে এমন পরীক্ষা নিরীক্ষা। কারণ সম্ভবত একটাই- বিসিবির লক্ষ্য পরবর্তী বিশ্বকাপ! এটা নিশ্চিত যে, প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপে দল নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রথম নজির স্থাপন করল বাংলাদেশই।
১৮ কোটি মানুষের দেশটিতে ক্রিকেট অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। যদিও সিনিয়র পর্যায়ের ছেলেরা এখনো কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট তো দূরের কথা, আঞ্চলিক শিরোপাও জিততে পারেনি। এই খেলাটির সঙ্গে দেশের মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। বিশ্বকাপের কয়েকমাস আগে দারুণভাবে থিতু হওয়া একটা দল কেন এভাবে বদলে গেল – দর্শক-সমর্থকদের কাছে তার জবাবদিহি তো করতেই হবে বোর্ড কিংবা অধিনায়ক-কোচকে।
মন্তব্য করুন: