ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে ভারতের ছয়ে ছয়
২৯ অক্টোবর ২০২৩
শুরুটা করেছিলেন ইংলিশ বোলাররা আর শেষটা করলেন ভারতীয়রা। রোহিত শর্মার ব্যাটে লড়াই করার মতো সংগ্রহ গড়ার পর বল হাতে বোলারদের মনোমুগ্ধকর বোলিংয়ে ইংলিশদের ১০০ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
টানা ছয় ম্যাচে ছয় জয়ে সেমি-ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল স্বাগতিকদের। অন্যদিকে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে।
রোববার লক্ষ্ণৌয়ে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশদের ২৩০ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি স্বাগতিকরা। কিন্তু মোহাম্মদ শামি আর যশপ্রীত বুমরাহর বোলিং তোপের পাশাপাশি কুলদীপ যাদব আর রবীন্দ্র জাদেজার স্পিনে ১২৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড।
প্রথম চার ওভারে ২৬ রান তোলার পরই ছন্দপতন। বুমরাহর পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ৩০ রানে ইনসাইড-এজে বোল্ড হন ডাভিড মালান। পরের বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন জো রুট।
দুই ওভার পরই ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানেন শামি। ওভারের শেষ বলে ভাঙেন ১০ বল খেলে কোনো রান না করতে পারা বেন স্টোকসের মিডল-স্ট্যাম্প। নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে জনি বেয়ারস্টোকে সাজঘরে ফেরান তিনি। প্রথম স্পেলে চার ওভার বল করে মাত্র ৫ রান দেন আসরে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা এই পেসার।
দলীয় ৫২ রানে যাদবের অসাধারণ এক ঘূর্ণিতে বোকা বনেন জস বাটলার। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা বাঁহাতি লেগ স্পিনারের বল অফ-স্ট্যম্পের বেশ বাইরে পড়ে বাঁক নিয়ে ভাঙে ইংলিশ অধিনায়ক মিডল-স্ট্যাম্প।
ষষ্ঠ উইকেটে মঈন আলীকে নিয়ে লিয়াম লিভিংস্টোন প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই শামি প্রথম বলে কট-বিহাইন্ড করেন মইনকে । দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রান করে যাদবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে লিভিংস্টোন সাজঘরে ফিরলে শেষ হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের জয়ের আশা। শেষের ব্যাটাররা ব্যবধান কিছুটা কমালেও তিন অঙ্কের রানেই হারতে হলো ইংলিশদের।
ছয় ম্যাচে পাঁচ হার নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশের নিচে তলানিতে রয়েছে ইংল্যান্ড।
দিনের শুরুতে অবশ্য এবারের বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে ভারতের অন্য এক রূপ দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। অধিনায়ক রোহিত ছাড়া অর্ধ-শতকের মুখ দেখেননি অন্য কোনো ব্যাটার।
দলীয় ২৬ রানে শুবমান গিলের স্ট্যাম্প ভাঙেন ক্রিস ওকস। এক রান পরেই ডেভিড উইলির বল এগিয়ে এসে তুলে মারতে গিয়ে মিড-অফে থাকা স্টোকসের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন আসরে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ডানহাতি এই ব্যাটার।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শ্রেয়স আইয়ারও। চতুর্থ উইকেট জুটিতে রাহুলকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন ম্যাচসেরা রোহিত। ইংলিশ বোলারদের দেখে শুনে খেলে তুলে নেন আসরে তার দ্বিতীয় ফিফটি। এ জুটি দলের বিপর্যয় যখন প্রায়ই কাটিয়ে উঠেছিল তখনই আবার আঘাত হানেন উইলি। দলীয় ১৩১ রানে রাহুলকে ফিরিয়ে ভাঙেন ৯১ রানের জুটি।
পঞ্চম উইকেটে সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন রোহিত। ৮৭ রানে আদিল রশিদের বলে ডিপ-উইকেটে লিভিংস্টোনের দারুণ ক্যাচে প্যাভিলিয়নের পথ দেখেন ভারত অধিনায়ক।
জাদেজাও ফেরেন দ্রুতই। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন যাদব। ফিফটি থেকে এক রান দূরে থাকতে উইলির তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
পুরো ইনিংসে স্পিনারদের বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান অধিনায়ক বাটলার। রশিদ ছাড়া বাকি দুই স্পিনার মঈন আলী ও লিভিংস্টোন কোনো উইকেট না পেলেও ভারতের রান আটকে রাখতে দলকে সহায়তা করেন। ১০ ওভার বল করে ৩৫ রানে ২ উইকেট নেন রশিদ। ওকস নেন দুটি উইকেট।
শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রানে থামে ভারতীয়দের ইনিংস। তখনও বোঝা যায়নি যে এই সংগ্রহ নিয়েই ১০০ রানের জয় পাবে রোহিতরা।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে]
মন্তব্য করুন: