পাকিস্তানের কাছে হেরে সবার আগে বিদায় বাংলাদেশের
৩১ অক্টোবর ২০২৩
লড়াইটা ছিল টানা হারের বৃত্তে থাকা দুই দলের মধ্যে। কিন্তু লড়াইটা হলো বড্ড একপেশে। বাংলাদেশকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করে সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। আর ব্যাটারদের হতশ্রী পারফরমেন্সের পর বোলারদের নিষ্প্রভ বোলিংয়ে ৭ উইকেটে হেরে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ দলের মধ্যে সবার আগে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে সাকিব আল হাসানের দল।
প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারানোর পর টানা ছয় ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। আর বাবর আজমের দল পেল তৃতীয় জয়। বাংলাদেশকে পেয়ে নেট রান-রেটও খানিকটা বাড়িয়ে দিল তারা।
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর ব্যাটাররা ইনিংস বড় করতে না পারায় পাকিস্তানকে মাত্র ২০৫ রানে লক্ষ্য দিতে পারে বাংলাদেশ, যা ১০৫ বল বাকি থাকতেই পৌঁছে যায় ১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নামা পাকিস্তানের ইনিংসের তৃতীয় বলেই রান-আউটের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ক্রিজের বেশ দূরে থাকা আবদুল্লাহ শফিককে সাজঘরে পাঠাতে ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত।
তাসকিন-শরিফুলদের নখদন্তহীন বোলিংয়ে একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার-বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৮ ওভারেই শতরান পার করেন ওপেনাররা। ১২৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ বিশ্বকাপে তৃতীয় অর্ধ-শতক হাঁকনো শফিককে ৬৮ রানে এলবিডব্লিউর করে। ৯ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকেও ফেরান ডানহাতি এই স্পিনার।
অপরপ্রান্তে বোলারদের ওপর ঝড় চালাতে থাকেন আরেক ওপেনার ফখর জামান। আসরের প্রথম ম্যাচের পর দলে ফেরার সুযোগ কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি তিনি। মিরাজের তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৭৪ বলে ৭ ছক্কা ও ৩ চারে ৮১ রানের ম্যাচসেরা এক মারকুটে ইনিংসে নিজের প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে আবারও সমর্থকদের হতাশ করে বাংলাদেশের টপ-অর্ডার। ম্যাচের পঞ্চম বলেই তানজিদ হাসান তামিমকে শূন্য রানে এলবিডব্লিউ করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে শততম উইকেট তুলে নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
এদিনও ব্যর্থ শান্ত। শাহিনের পরের ওভারেই ফরোয়ার্ড স্কয়ার-লেগে উসামা মিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। হারিস রউফকে বাউন্ডারি মারার পরেই বলেই উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
ছয় ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলের হাল ধরেন লিটন দাস ও পাঁচে ব্যাট করতে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে লিটন নিজের উইকেট বিলিয়ে দিলে ভাঙে ৭৯ রানের জুটি। ইফতিখারের বল মিড-উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা আগা সালমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে হতভম্ব হয়ে যান লিটন নিজেই। হাঁটা শুরু করার আগে ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেন অনেকটা সময়।
পঞ্চম উইকেটে সাকিবকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়ার চেষ্টা করেন রিয়াদ। আসর জুড়ে দারুণ ছন্দে থাকা ডানহাতি এই ব্যাটার তুলে নেন নিজের ২৮তম অর্ধ-শতক। তবে শাহিনের দারুণ এক ডেলিভারি রিয়াদের ডিফেন্স ভেদ করে স্ট্যাম্প ভাঙলে শেষ হয় ৫৬ রানের ইনিংসটি।
দুই ম্যাচ পর দলে ফেরা তাওহিদ হৃদয় দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু পরের বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ দেখেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
পুরো আসরে প্রথমবারের মতো এদিন হাসে সাকিবের ব্যাট। অষ্টম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু লিটন, রিয়াদের মতো তিনিও ইনিংস বড় করতে পারেননি। দলীয় ১৮৫ রানে রউফের শর্ট বলে মিড-উইকেটে ক্যাচ দিয়ে সাকিব ফেরেন ৪৩ রানে।
১৯ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৫ ওভার ১ বলে ২০৪ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ তিন উইকেট নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। শাহিন নেন ৩ উইকেট।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে]
মন্তব্য করুন: