দ. আফ্রিকাকে মাটিতে নামাল ভারত
৫ নভেম্বর ২০২৩
বিশ্বকাপ জুড়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী দেখানো দক্ষিণ আফ্রিকা দাঁড়াতেই পারল না ভারতের টুর্নামেন্ট সেরা বোলিং আক্রমণের সামনে। সেমি-ফাইনালের আগে দুই দলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইটা হলো বড্ড একতরফা। বিরাট কোহলির রেকর্ড শতকের পর বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের ২৪৩ রানে উড়িয়ে গিয়েছে স্বাগতিকরা। আর টানা অষ্টম জয়ে শীর্ষে থেকেই সেমি-ফাইনালে যাচ্ছে রোহিত শর্মার দল।
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনারদের বিধ্বংসী শুরুর পর কোহলির ৪৯তম সেঞ্চুরি এবং শেষ দিকে রবীন্দ্র জাদেজার এক ঝোড়ো ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩২৭ রানের লক্ষ্য দেয় রোহিত শর্মার দল। তবে আসরজুড়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালানো দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা ২১ ওভার ১ বলে ৮৩ রানেই গুটিয়ে যায়।
প্রোটিয়া ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানেন মোহাম্মদ সিরাজ। ইনসাইড-এজে আসরের সর্বোচ্চ রান-সংগ্রাহক কুইন্টন ডি ককের স্ট্যাম্প ভাঙেন ডানহাতি এই পেসার। ১১ রান করা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে ফেরান জাদেজা। পরের ওভারেই এইডেন মারক্রামকে সাজঘরে ফেরান ফর্মের তুঙ্গে থাকা মোহাম্মদ শামি। এখানেই ম্যাচ থেকে ছিঁটকে যায় প্রোটিয়ারা।
উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই আসরজুড়ে ব্যাট হতে ঝড় তোলা হাইনরিখ ক্লাসেনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন জাদেজা। পরের ওভারেই গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাসি ফন ডার ডুসেনকে রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউ করেন শামি।
১১ রান করে ডেভিড মিলার ফিরলে জাদেজা-কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণিতে আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি প্রোটিয়াদের ইনিংস। সর্বোচ্চ ১৪ রান করেন মার্কো ইয়েনসেন। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ভারতীয় স্পিনার হিসেবে বিশ্বকাপে ৫ উইকেট নেন জাদেজা। শামি ও যাদবের শিকার দুটি করে উইকেট।
এর আগে দিনের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত। শুবমান গিলকে সঙ্গে নিয়ে একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার-বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মাত্র ৪ ওভার ৩ বলেই দলের খাতায় ৫০ রান যোগ করেন ভারতীয় অধিনায়ক। কাগিসো রাবাদার প্রথম ওভারে ২৪ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রানে রোহিত সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি। কেশব মহারাজের দারুণ এক ঘূর্ণিতে ২৩ রানে প্যাভিলিয়নের পথ দেখেন আরেক ওপেনার গিলও।
৯৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে শ্রেয়স আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন কোহলি। তবে দারুণ খেলতে থাকা আইয়ার এদিনও নিজের শতকের সুযোগ হাতছাড়া করেন। লুঙ্গি এনগিডিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড-অনে থাকা মারক্রামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৭৭ রানে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। লোকেশ রাহুল ও সূর্যকুমার যাদবের ইনিংসও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকা কোহলি এদিন কোনো ভুল করেনি। দেখেশুনে খেলে ১১৯ বল ও ১০ চারে তুলে নেন এই বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় শতক। নিজের ৩৫তম জন্মদিনটা স্মরণীয় করে রাখেন ওয়ানডে ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারের সর্বোচ্চ ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়ে।
শেষ দিকে জাদেজার ১৫ বলে ২৯ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানের সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। ম্যাচসেরা কোহলি অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা অতিরিক্ত হিসেবে ২৬ রান দিয়েছে। এর মধ্যে ওয়াইড থেকেই এসেছে ২২ রান। প্রায় সব বোলার খরুচে বোলিং করলেও ব্যতিক্রম ছিলেন মহারাজ ও রাবাদা। দুজনই ১০ ওভার বল করে ১টি করে উইকেট শিকার করতে যথাক্রমে রান দেন ৩০ ও ৪৮।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে]
মন্তব্য করুন: