দ. আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

১৬ নভেম্বর ২০২৩

দ. আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

পেসারদের নৈপুণ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কম রানে আটকে ফেলে অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। রান তাড়ায় হোঁচট খেলেও ছোটো লক্ষ্য দেখে তাড়া করতে পারল তারা। উইকেটের জয়ে রেকর্ড অষ্টমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। আর পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলেও শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে যাওয়া হলো না দক্ষিণ আফ্রিকার।

বৃহস্পতিবার কলকাতা ইডেন গার্ডেন্সে দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১২ রানে আটকে রাখার মূল কৃতিত্ব পেসারদের। ডেভিড মিলার স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অসাধারণ শতক না করলে ম্যাচ অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে বেগ পোহাতে হয়েছিল কেশব মহারাজ তাব্রাইজ শামসির স্পিন ঘূর্ণিতে। তবে ট্র্যাভিস হেড আর ওয়ার্নারের ঝড়ে শুরুতেই অনেকটা এগিয়ে যাওয়ায় বাকিদের ছোটো ছোটো অবদানে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া।

প্রথম ছয় ওভারে স্কোরবোর্ডে ৬০ রান যোগ করে ওয়ার্নার-হেড জুটি। কাগিসো রাবাদার করা ষষ্ঠ ওভারে আসে ২১ রান। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ওয়ার্নারকে (২৯) বোল্ড করেন এইডেন মারক্রাম। কোনো রান না করেই রাবাদার বলে কাভার অঞ্চলে ফন ডার ডুসেনের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন মিচেল মার্শ।

জেরাল্ড কুটসিয়ার করা ১১তম ওভারের প্রথম বলে ডিপ পয়েন্টে হেডের ক্যাচ ছাড়েন হেন্ড্রিকস। জীবন পেয়ে চড়াও হোন অজি এই ওপেনার। টানা তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪০ বলে অর্ধ শতক পূরণ করেন হেড। তাব্রাইজ শামসির বলে আরও একবার জীবন পেয়েও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। স্মিথের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৫রানের জুটি গড়েন। নয়টি চার দুই ছক্কায় ৪৮ বলে ৬২ রান করে কেশব মহারাজের বলে বোল্ড হন হেড।

দলীয় ১৩৩ রানে মার্নাস লাবুশেনকে (১৮) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন শামসি। চার রানের ব্যবধানে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বোল্ড হয়ে সাঝঘরে ফিরলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। এক প্রান্তে আগলে থাকা স্মিথ ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিল দেখতে থাকেন।

জশ ইংলিশের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৫৯ বলে ৩৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে সে ধাক্কা সামাল দেন স্মিথ। দলীয় ১৭৪ রানে ৬২ বলে ৩২ রান করে জেরাল্ড কুটসিয়ার বলে ডি ককের হাতে ধরা পড়েন ডানহাতি এই ব্যাটার।

১৯৩ রানে জশ ইংলিশকে (২৮) ফুল লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড করেন কুটসিয়া। মারক্রামের করা ৪৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কামিন্সের ক্যাচ ছাড়েন ডি কক।

অষ্টম উইকেট জুটিতে মিচেল স্টার্ক (১৬*) কামিন্সের (১৪*) ২২ রানের পার্টনারশিপে ৪৭ ওভার বলে উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অজিরা।

এর আগে মেঘলাচ্ছন্ন আকাশের নিচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় প্রোটিয়ারা। স্টার্কের বলে কোনো রান করেই সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। দলীয় রানে আসরজুড়ে দারুণ ছন্দে থাকা কুইন্টন ডি কককে ফেরান হ্যাজেলউড। পুরো পাওয়ার প্লে জুড়ে ব্যাটারদের হাত খুলতেই দেননি স্টার্ক-হ্যাজেলউড জুটি। প্রথম ১০ ওভারে দেন মাত্র ১৮ রান। এতে অবদান ছিল ফিল্ডারদেরও।

একাদশ ওভারে আবার আঘাত হানেন স্টার্ক। এবার তুলে নেন এইডেন মারক্রামকে। পরের ওভারেই রাসি ফন ডার ডুসেনকে সাজঘরে ফেরান হ্যাজেলউড। চতুর্থ উইকেটে মিলারকে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন হাইনরিখ ক্লাসেন। কিন্তু ফিফটি থেকে ক্লাসেন রান দূরে থাকতে তাকে ফিরিয়ে ৯৪ রানের জুটি ভাঙেন ট্র্যাভিস হেড। পরের বলেই তিনি মার্কো ইয়েনসেনকে হেড এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললে আবার চাপে পরে প্রোটিয়ারা।

সপ্তম উইকেটে জেরাল্ড কুটসিয়াকে নিয়ে দলের সংগ্রহ দুইশ দিকে নিয়ে যেতে থাকেন মিলার। ১৭২ রানে কুটসিয়াকে ফিরিয়ে ৫৩ রানের এই জুটি ভাঙেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। লোয়ার-অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে তখনও লড়াইটা চালিয়ে যান মিলার। তুলে নেন আসরে তার প্রথম শতক।

মিলারের ১১৬ বলে চার ছক্কায় ১০১ রানের উপর ভর করে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর দুই বল বাকি থাকতে প্রোটিয়াদের ইনিংস থামে ২১২ রানে। আগুন ঝরানো বোলিংয়ে স্টার্ক কামিন্স নেন ৩টি করে উইকেট।

মন্তব্য করুন: