৫২ কোটি রুপিতে আইপিএলে ভারতকে বিশ্বকাপ হারানো ত্রয়ী

১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

৫২ কোটি রুপিতে আইপিএলে ভারতকে বিশ্বকাপ হারানো ত্রয়ী

এইতো ঠিক এক মাস আগের কথা, আসর জুড়ে একের পর এক প্রতিপক্ষকে রীতিমত গুঁড়িয়ে দিয়ে ১২ বছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ভারত। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শিরোপা জয়ের মঞ্চও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু উপস্থিত প্রায় লাখ ৩০ হাজার স্বাগতিক সমর্থককে নিস্তব্ধ করে দিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নেয় অস্ট্রেলিয়া। আর রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের অভিযানে মূল ভূমিকা রাখেন ট্র্যাভিস হেড, মিচেল স্টার্ক অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।

এবার এক মাস পর ১৯ ডিসেম্বর দুবাইয়ে ২০২৪ আইপিএলের নিলামে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী এই ত্রয়ীকে মোট ৫২ কোটি লাখ রুপিতে দলে নিয়েছে দুটি ভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি।

যেই কামিন্সের খুরধার মস্তিষ্কের অধিনায়কত্বের কাছে ভারত বিশ্বকাপ হেরেছে, তাকেই রেকর্ড গড়ে ২০ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে দলে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। কিন্তু এই রেকর্ডের ঘণ্টাখানেক পরেই বিশ্বকাপ ফাইনালে উইকেট নেওয়া স্টার্ককে টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে দলে ভেড়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। অন্যদিকে, নিলামের শুরুতে বিশ্বকাপ ফাইনালের ম্যাচসেরা হেডকে কোটি ৮০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছিল হায়দরাবাদ।

গত ১৯ নভেম্বরের ফাইনালে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান কামিন্স। আর শুবমান গিলকে ফিরিয়ে ভারতীয়দের ইনিংসের প্রথম আঘাতটা হানেন স্টার্ক। এরপর ৪২তম ওভারে দলীয় ২০৬ রানে লোকেশ রাহুলকে (৬৬) ফিরিয়ে স্বাগতিকদের আরও চাপে ফেলেন বাঁহাতি এই পেসার। ১০ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে উইকেট শিকার করে ভারতীয়দের রানের চাকা অনেকটাই আটকে রাখেন স্টার্ক।

অন্যদিকে, আগের দুই ম্যাচে শতক হাঁকানো শ্রেয়াস আইয়ারকে ফিরিয়ে ফাইনালে নিজের ঝলক দেখানো শুরু করেন কামিন্স। আর ৫৪ রান করা বিরাট কোহলিকে বোল্ড করে দিয়ে পুরো স্টেডিয়ামকেই নিস্তব্ধ করে দেন অজি অধিনায়ক। বল হাতে কৃপণতার পাশাপাশি নিয়মিত বোলিং পরিবর্তন থেকে শুরু করে ফিল্ডিং সাজানো, সবকিছুতেই দারুণ পারদর্শিতার পরিচয় দেন কামিন্স। আসর শেষে যার প্রশংসা ঝরে ভারতীয় স্পিনার রবীচন্দ্র অশ্বিনের কণ্ঠেও।

তবে ফাইনালে এই দুই পেসারের আলো একাই নিজের দিকে টেনে নেন হেড, যার শুরুটা করেন দুর্দান্ত এক ক্যাচে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে সাজঘরে ফিরিয়ে। এরপর লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৭ রানেই উইকেট হারিয়ে দল যখন দারুণ চাপে, তখন দলকে বাঁচাতে মারনাস লাবুশেনের সঙ্গে গড়েন ১৯২ রানের অসাধারণ এক জুটি। এক প্রান্তে লাবুশেন সামাল দিচ্ছিলেন ভারতীয় ব্যাটারদের আর অপর প্রান্তে ব্যাট চালিয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন হেড। বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় শতক হাঁকিয়ে যখন ১২০ বলে ১৩৭ রানের স্মরণীয় এক ইনিংস খেলে ডাগআউটে ফিরছিলেন তখন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল মাত্র রান।

এবারের আইপিএলের নিলামে আগে থেকেই সবার চোখ ছিল হেড, কামিন্স আট বছর পর আইপিএলে ফেরা স্টার্কের দিকে। আর এই ত্রয়ীর পেছনে মোট ৫২ কোটি রুপি ব্যয় করাটা আসলেই যথার্থ কি না তা হয়তো আসর শেষেই দেখা যাবে।

মন্তব্য করুন: