স্মরণীয় জয়ে দুর্দান্ত নেতৃত্ব; মুগ্ধ করলেন শান্ত
২৩ ডিসেম্বর ২০২৩
কয়েকদিন আগেই তার নেতৃত্বে দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডকে প্রথমবার টেস্টে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সেই নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ পেল আরেকটি ‘প্রথম’ এর দেখা। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জয় এলো ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ম্যাচজুড়ে পেসারদের জয়জয়কার দেখা গেলেও নাজমুল হোসেন শান্তর কিছু অনলফিল্ড সিদ্ধান্ত স্বাগতিকদের ৯৮ রানে থামিয়ে দেওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে। দুর্দান্ত নেতৃত্বে নজর কেড়েছেন শান্ত।
নেপিয়ারের পেস স্বর্গে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে শুরুতেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন শান্ত। তবে তিনিও কি ভেবেছিলেন, উইকেট থেকে পেসাররা এতটা সুবিধা পাবেন? সম্ভবত না। প্রথম তিন ওভারে সাবলীল ব্যাটিং করছিল নিউ জিল্যান্ডের দুই ওপেনার। বাউন্ডারিও হয়েছে তিনটি। চতুর্থ ওভারেই রাচিন রবীন্দ্রকে ফিরিয়ে শুরুটা করেন তানজিম সাকিব। এই তরুণ পেসারের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে কিউইরা। টপাটপ উইকেট পড়তে থাকে। এর মাঝেই উইল ইয়ং এবং টম ল্যাথাম জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন। ঠিক সেই সময় দারুণ একটা সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক শান্ত।
প্রথম স্পেলে উইকেটশূন্য শরীফুল ইসলাম দ্বিতীয় স্পেলে এসেই বোল্ড করে দেন ল্যাথামকে। পরের ওভারে উইল ইয়ংকে ফিরিয়ে ওয়ানডেতে নিজের ৫০তম শিকার ধরেন। এরপর ভেতরে ঢোকা দারুণ ডেলিভারিতে উড়িয়ে দেন মার্ক চ্যাপমানের বেলস। তার দ্বিতীয় স্পেল ছিল ৩-০-৬-৩! কিউইদের ধসিয়ে দিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন শান্ত। দ্বিতীয় স্পেল করতে বল তুলে দেন তানজিম সাকিবের হাতে। তার এই সিদ্ধান্তটাও দারুণভাবে কাজে লেগে যায়। তানজিম প্রথম বলেই আউট করে দেন টম ব্লান্ডেলকে। এরপর পালা আসে সৌম্য সরকারের।
পার্টটাইম মিডিয়াম পেসার সৌম্য তীক্ষ্ণভাবে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জশ ক্লার্কসনকে। এছাড়া অ্যাডাম মিল্নে আর আদিত্য অশোককেও শিকার করেন সৌম্য। বাংলাদেশি পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ মুস্তাফিজুর রহমানই ছিলেন বিবর্ণ। সবচেয়ে বেশি ৩৬ রান দিয়ে পেয়েছেন মাত্র ১ উইকেট। মাত্র ৩১.৪ ওভারে ৮৯ রানে গুটিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং রিশাদ হোসাইন মিলে মাত্র ৪ ওভার বোলিং করতে পেরেছেন। পেসারদের দিয়েই আজ বাজিমাত করেছেন শান্ত।
রান তাড়ায় নেমেও শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ম্যাচ উইনিং নক। সৌম্য রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার পর উইকেটে এসে খেলেছেন ৪২ বলে ৫১ রানের অপরজিত ইনিংস। উইনিং শটও এসেছে তার ব্যাট থেকেই। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সতীর্থদের নিয়ে উচ্ছাস শোনা গেল শান্তের কণ্ঠে, “ছেলেরা যেভাবে খেলেছে তাতে আমি গর্বিত। সিরিজ শুরু হওয়ার আগে, আমরা সিরিজ জেতার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে জিততে পারিনি, আজকে জিততে পেরেছি। বোলাররা অনেক কিছু শিখেছে। তারা ভালো জায়গায় বল করেছে, উইকেটের পেছনে ছুটেনি। বোলাররা আজ যেভাবে বল করেছে, শান্তি পাওয়ার মতো।”
মন্তব্য করুন: