ফিলিস্তিন ইস্যুতে উসমান খাজাকে সমর্থন জানালেন কামিন্স

মেলবোর্ন টেস্টে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে জুতায় শান্তির প্রতীক 'জলপাইয়ের শাখা মুখে কালো ঘুঘু' সংবলিত একটি স্টিকার লাগিয়ে মাঠে নামতে চেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা। কিন্তু আইসিসির বাধায় সেটি পায়ে পরে আর মাঠে নামতে পারছেন না বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে তার সতীর্থ মারনাস লাবুশেন ব্যাটে ধর্মীয় বার্তার ইঙ্গিত দেয় এমন একটি ঈগলের স্টিকার লাগিয়ে ঠিকই মাঠে নামবেন। আর দলের এই দুই ব্যাটারের ভিন্ন দুই বার্তা বহন করা স্টিকারের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখছেন না বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। একই সঙ্গে খাজার উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার বক্সিং ডে টেস্টের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে লাবুশেনের ঈগল এবং খাজার ঘুঘুর কথা। এই দুটি বিষয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি না জানতে চাওয়া হলে কামিন্স বলেন, “না, আসলে নেই। আমি এ দুটির (চিহ্ন) প্রয়োগের ব্যাপারে গভীরভাবে জানি না। তবে এটা সহজ-সরল একটা ব্যাপার, একটা পায়রা। আমরা সত্যিই উজিকে (খাজা) সমর্থন করি। আমার মতে, সে যা বিশ্বাস করে সেটির পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। আর সে এটি সম্মানজনক উপায়েই করছে।”

তবে খাজার পাশে থাকলেও আইসিসির নিয়ম মেনে নিয়েছেন কামিন্স। খেলার বাইরে পরিবেশ আন্দোলনের মতো ইস্যুতে বেশ সোচ্চার এই অজি অধিনায়ক বলেন, “প্রতিটি জীবনের মূল্য সমান- আমার মনে হয় না এই কথাটি অপমানসূচক। পায়রার ব্যাপারেও আমি তাই বলব। এটিই উজি (খাজা)। সে যেভাবে এগিয়েছে তাতে করে সে মাথা উঁচু রাখতে পারে। তবে এখানে নিয়ম আছে। আমি যা শুনেছি আইসিসি বলেছে, তারা এটির অনুমতি দেবে না। তারাই নিয়ম বানায়, ফলে আপনাকে তা মেনে নিতে হবে।”

পার্থে টেস্টে অনুশীলনের সময় খাজার জুতায় “স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার” এবং “প্রতিটি জীবনের মূল্য সমান” স্লোগান দেখা যায়। তবে ম্যাচে এই জুতা পরে মাঠে নামলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি পেতে হবে এমন বার্তা দেওয়া হলে বাঁহাতি এই ব্যাটার টেপ দিয়ে তা ঢেকে রাখেন। কিন্তু ম্যাচে অনুমতি না নিয়ে কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামার কারণে শাস্তি হিসেবে আইসিসির তিরষ্কারের মুখে পড়তে হয় খাজাকে। তাই মেলবোর্ন টেস্টে 'জলপাইয়ের শাখা মুখে কালো ঘুঘু'র স্টিকার লাগিয়ে মাঠে নামতে চাওয়ার অনুমতি চান তিনি।

আরও পড়ুন: ‘এলজিবিটি’ বৈধ হলে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতিতে বাধা কেন – প্রশ্ন হোল্ডিংয়ের

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারস অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে খাজাকে অনুমতি দিলেও বেঁকে বসে আইসিসি। সংস্থাটির এক মুখপাত্র বলেন, “পোশাক ও সরঞ্জাম বিষয়ক আইনের ‘এফ’ ধারা অনুযায়ী, এই ধরণের ব্যক্তিগত বার্তা প্রদর্শনের কোনো অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে মাঠের বাইরে বা ভিন্ন কোনো প্ল্যাটফর্মে খেলোয়াড়দের যে কোনো ধরণের মানবাধিকারমূলক বিষয়ে প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে বাধা নেই।”

অন্যদিকে, আইসিসির এরকম আচরণকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ফাস্ট বোলার মাইকেল হোল্ডিং ভণ্ডামি বলে আখ্যা দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ লম্বা সময় ধরেই ব্যাটের পেছনে একটি ঈগলের স্টিকার লাগিয়ে খেলে আসছেন লাবুশেন। যা, বাইবেলের একটি পদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে।