পুরো দেশ সৌম্যর বিপক্ষে ছিল, কিন্তু ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট: হাথুরুসিংহে
২৬ ডিসেম্বর ২০২৩
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবারও রাজকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটালেন সৌম্য সরকার। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৬৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে জানান দিলেন, এখনও তিনি ফুরিয়ে যাননি। শেষ ওয়ানডেতে বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে দলের ঐতিহাসিক জয়ে ভূমিকা রাখেন। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে চোখের সমস্যায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে যান। তার দারুণ পারফর্মেন্স স্বস্তি দিচ্ছে প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। টি-টুয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে তাই আলোচনায় উঠে এলেন সৌম্য।
ঘরোয়া ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য কোনো পারফর্ম না করেই নিউ জিল্যান্ড সফরে সুযোগ পেয়েছিলেন সৌম্য। এতে প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে আর নির্বাচকদের ব্যাপক সমালোচনাও হয়েছে। প্রথম ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হয়ে বিপদ আরও বাড়ান সৌম্য। বল হাতে দেন ৬ ওভারে ৬৩ রান! তাই দ্বিতীয় ওয়ানডে সৌম্যর জন্য ছিল শেষ সুযোগ। এবার ব্যর্থ হলে আর হয়তো তার সুযোগ হতো না। শেষ সুযোগটাই কী দারুণভাবেই না কাজে লাগালেন এই ওপেনার। তার প্রত্যাবর্তনে চান্ডিকা হাথুরুসিংহের চাইতে সুখী মানুষ আর কে আছে?
বুধবার থেকে মাঠে গড়াচ্ছে টি-টুয়েন্টি সিরিজ। এর আগে মঙ্গলবার নেপিয়ারে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আসেন টাইগার কোচ হাথুরুসিংহে। সৌম্য প্রসঙ্গে তিনি বললেন, “সে যেভাবে পারফর্ম করেছে, আমি খুশি। আমি জানতাম, সে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ইনিংস খেলার সামর্থ্য রাখে। সে এটা করে দেখিয়েছে। আমরা সবাই বলি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট। ফর্ম অনেক কিছুর কারণেই প্রভাবিত হয়। বিশেষ করে আপনার মাথায় কী চলছে, সেটাও একটা বিষয়। আপনার মাথা যদি পরিষ্কার থাকে, আপনি যদি আপনার ভূমিকা বুঝতে পারেন, পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে প্রত্যেক খেলোয়াড়ই তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারে। তার মাথাটা একেবারে পরিষ্কার।”
চান্ডিকা হাথুরুসিংহে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচ হতেই ফের জাতীয় দলের সংস্পর্শে আসতে শুরু করেন তার প্রিয় শিষ্য সৌম্য। অনেকবার সৌম্যকে নিয়ে অনুশীলন করিয়েছেন হাথুরু। তাই সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠল, সৌম্যর রাজকীয় প্রত্যাবর্তনে তার অবদান কতটা? জবাবে হাথুরু বলেন, “‘আমি নই, সে নিজেই নিজেকে ফিরিয়েছে। দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে এটা সৌম্যর জন্য ছিল ‘হয় মারো, না হয় মরো’। এটাই প্রমাণ করে, সে মানসিকভাবে কতটা শক্তিশালী। সে জানত, পুরো দেশ তার বিপক্ষে ছিল। সে যদি ব্যর্থ হতো, তাহলে কী হতো, সেটা আমরা জানি না। আমরা যে কাজটা ভালো করেছি, আমরা তার ওপর বিশ্বাস রেখেছি, তাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছি এবং পুরো দল তাকে সমর্থন দিয়েছে। এতেই মনে হয়, সে ফর্ম ফিরে পেয়েছে।”
শুধু এই সিরিজই নয়, সৌম্যকে নিয়ে এখন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ দল। আগামী বছর জুন-জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই আসরে সৌম্য খেলবেন কিনা- এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ কোচ বলেন, “টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তার পারফর্ম করতে না পারার মতো কোনো কারণ নেই।”
মন্তব্য করুন: