বিশ্বকাপে চোখের সমস্যা নিয়ে খেলেছিলেন সাকিব

২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

বিশ্বকাপে চোখের সমস্যা নিয়ে খেলেছিলেন সাকিব

বিশ্বকাপের ঠিক আগে এক সাক্ষাৎকারে তামিম ইকবাল প্রসঙ্গে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, পুরো ফিট না হয়ে মাঠে নামা মানে দেশের সঙ্গে প্রতারণা। দেশসেরা এই অলরাউন্ডার এখন জানালেন, ভারতে তিনি নিজেই চোখের সমস্যা নিয়ে খেলেছেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো।

ভারতে হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশ নয়টি ম্যাচ খেলে মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে। হেরেছে নেদারল্যান্ডসের মতো দলের কাছেও। ব্যাটে-বলে সাকিব নিজের সামর্থ্য দেখাতে পারেননি। ৭ ইনিংস ব্যাটিং করে ২৬.৫৭ গড় এবং ৮২.৩০ স্ট্রাইকরেটে তার সংগ্রহ মাত্র ১৮৬ রান। ফিফটি পেয়েছেন মাত্র একটি। বল হাতে ৭ ম্যাচে ৯টি উইকেট পেয়েছেন। সেরা পারফর্মেন্স ৩০ রানে ৩ উইকেট। ব্যাটে কিংবা বলে তিনি বাংলাদেশের সেরা হতে পারেননি।

বিশ্বকাপের মাসখানেক পর ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েসবসাইট ‘ক্রিকবাজ’ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব জানান, বিশ্বকাপের মাঝে তিনি বাঁ চোখে ঝাপসা দেখছিলেন। এটা নাকি হয়েছিল মানসিক চাপের জন্য। ব্যাট করার সময় তাই তিনি বল ঠিকঠাক দেখতে পারছিলেন না। মেডিক্যাল সায়েন্স চোখকে মস্তিষ্কের সম্প্রসারিত অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মানসিক চাপ চোখের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। মানসিক চাপের ফলে যে স্ট্রেস হরমোন নিঃসৃত হয়, সেটা দৃষ্টিশক্তিকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে। এটিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি’ বলা হয়ে থাকে।

সাকিবের ভাষায়, “একটি বা দুটি ম্যাচে নয়, টুর্নামেন্টজুড়েই আমি এই সমস্যায় ভূগছিলাম। ব্যাটিংয়ের সময় আমি ভীষণ সমস্যা অনুভব করেছি। ডাক্তারের কাছে গিয়ে জানতে পারি, আমার কর্নিয়া বা রেটিনায় পানি জমেছে। চিকিৎসক আমার চোখের জন্য ড্রপ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন মানসিক চাপ কমাতে। আমি নিশ্চিত নই (চোখের সমস্যার জন্য) এটাই (মানসিক চাপ) কারণ ছিল কিনা। বিশ্বকাপের পর আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ফের চোখ পরীক্ষা করাই, তখন কোনো স্ট্রেস ছিল না। আমি ডাক্তারকে বলেছিলাম যে বিশ্বকাপ নেই তাই স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস নেই।”

সাকিবের মানসিক চাপের কারণ অনুমান করা কঠিন নয়। বিশ্বকাপের আগে তামিমকে ঘিরে তিনি যেসব নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিলেন, তাতে টুর্নামেন্টে ভালো করার চাপ বেড়ে গিয়েছিল। তারপর বিশ্বকাপের মাঝে তো হাথুরুসিংহের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো ছিলই। সব মিলিয়েই দলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সাকিব নিজেও পুরো ফিট না থেকেই একের পর এক ম্যাচ খেলে যান। শেষদিকে আঙুলের চোটে পড়ায় দুটি ম্যাচ খেলা হয়নি। অনেক আশা নিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া বাংলাদেশ দল মুখ থুবড়ে পড়ে। 

তবে এবার বিশ্বকাপ ব্যর্থতার দায় সাকিব চাপিয়েছেন দলের ওপর। ক্রিকবাজের কাছে সাকিব দাবি করেন, “বিশ্বকাপে আমি অধিনায়ক হিসেবে যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম সেটা হলো,  আমি যে দর্শনে খেলতে চেয়েছিলাম, দল সেভাবে প্রস্তুত ছিল না। আপনি যদি দেখেন, শুধু বিশ্বকাপের সময় নয়, ২০২৩ সাল জুড়েই আমাদের ওয়ানডে পারফর্মেন্স মোটেও ভালো ছিল না।”

সাকিবের এই বক্তব্যের পর দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে- পুরো ফিট না হয়ে মাঠে নামলে যদি দেশের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়, সাকিব কি প্রতারণা করেননি?

মন্তব্য করুন: