সাকিব-তামিম না থাকলেই ছন্দে থাকে বাংলাদেশ
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
নক্ষত্রেরও একদিন পতন হয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটের দুই উজ্জ্বল নক্ষত্র সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবাল খান কি পতনের দ্বারপ্রান্তে? ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে থাকা এই দুই তারকা দেশের ক্রিকেটকে আর কী দিতে পারবেন- তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তারা আর কত বিতর্কের জন্ম দেবেন? বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যে সর্বনাশ হয়েছিল, তাতে সাকিব-তামিমের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের ভূমিকা কারও অজানা নয়। সাম্প্রতিক রেকর্ড বলছে, এই দুজনের না থাকাই এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য মঙ্গলজনক!
সর্বশেষ দুই বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের দারুণ কিছু অর্জনে ছিলেন না এই দুই মহারথী। পরিসংখ্যান দিয়েই বিষয়টি পরিস্কার করা যাক। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সগর্বে উড়ল বাংলাদেশের বিজয় নিশান। যে দলটি লাল বলে নড়বড়ে, সেই দলটিই নিউ জিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে টেস্ট হারাল প্রথমবার। ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ী সেই দলটিতে ছিলেন না দেশের ক্রিকেটের দুই বড় নাম সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবাল খান। ২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর। সিলেটে নিউ জিল্যান্ডকে ১৫০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। রচিত হলো ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের ইতিহাস। সেই ম্যাচেও ছিলেন না সাকিব-তামিম।
এরপর বাংলাদেশ দল গেল সাদা বলের ক্রিকেট খেলতে নিউ জিল্যান্ড সফরে। দলে নেই সাকিব আর তামিম। তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওয়ানডে জিতে গড়ল ইতিহাস। যে ইতিহাস গড়ার পথে একমাত্র সিনিয়র হিসেবে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। এখানেই শেষ নয়, নাজমুল হোসেন শান্তরা যে আরও চমক জমিয়ে রেখেছিলেন তা কে জানত? কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার ছাড়াই টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে ফের ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম টি-টুয়েন্টি জয় বলে কথা। তাও অধিনায়ক সাকিবকে ছাড়াই।
এই পরিসংখ্যান দিয়ে সাকিব-তামিমের অবদানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আজকের পর্যায়ে আনতে এই দুজনের অবদান অসীম। একজন নিজেকে নিয়ে গেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অল-রাউন্ডারদের কাতারে; অন্যজন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশের সেরা ব্যাটার হিসেবে। বছরের পর বছর ওপেনিংয়ের একপ্রান্ত আগলে হয়ে উঠেছেন ‘রানমেশিন’। বাংলাদেশের অনেক স্মরণীয় জয় এসেছে তাদের হাত ধরে। তবে প্রকৃতির নিয়মেই একদিন নতুনের আগমন ঘটে। থেমে যেতে হয় পুরনোদের। সাকিব-তামিমরাও হয়তো একদিন থেমে যাবেন। তবে শেষ বেলায় এসে নিজেদের বিতর্কের বিষয়বস্তুতে পরিণত করাটা খুব বেশি প্রয়োজন ছিল কি?
মন্তব্য করুন: