অবশেষে স্মিথের স্বপ্ন পূরণ

১০ জানুয়ারি ২০২৪

অবশেষে স্মিথের স্বপ্ন পূরণ

অবশেষে ঠিক হয়েছে ডেভিড ওয়ার্নার পরবর্তী যুগে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিংয়ে দায়িত্ব সামলাবেন কে তার নাম। বিগত কয়েকদিন ধরে চলা সব আলোচনা শেষে স্টিভ স্মিথকেই উসমান খাজার সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।    

বুধবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের একাদশ ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। সেখানেই দলটির প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি জানান, একদম পাকাপাকি ভাবেই ওপেনিংয়ে খেলবেন স্মিথ। আর তার জায়গায় চার নম্বরে ব্যাট করবেন অল-রাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন। এছাড়াও ম্যাচের জন্য ঘোষণা করা ১৩ সদস্যের দলে বাড়তি ওপেনার হিসেবে আছেন ম্যাট রেনশো।

পাকিস্তানের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত সিডনি টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে এক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ওপেনিংয়ে নামার ইচ্ছার কথা জানান স্মিথ। অথচ নিজের খেলা ১০৫ টেস্ট ও ১৬ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কখনোই ইনিংস শুরু করেননি তিনি।

আর তার এই প্রবল আগ্রহ ও ইচ্ছার কারণেই ডানহাতি এই ব্যাটারকে ওপেনিংয়ে পাঠানোর কথা জানিয়ে বেইলি বলেন, "স্টিভ (স্মিথ) অবশ্যই এটা করতে প্রবলভাবে তাড়না অনুভব করছে, খুবই উদ্যমী আগ্রহী। দলের ভেতর বেশ কজন প্রকাশ্যে বলেছে, তারা এটা (ওপেনিং) করতে চান না। তাই এটা ভালো একটা ব্যাপার যে স্টিভ নিজে থেকেই এগিয়ে এসেছে এবং বলেছে, সে এটা করতে চায়। এটা নিয়ে কোচদের সঙ্গে আমরা নির্বাচকরাও আড়ালে কথা বলছিলাম।"

তবে ৩৪ বছর বয়সী স্মিথকে তার চার নম্বর পজিশন থেকে সরানোর পক্ষে ছিলেন না অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করার পর সাংবাদিকদের তিনি জানান, বর্তমান ব্যাটিং-অর্ডার – তিনে মারনাস লাবুশেন, চারে স্মিথ, পাঁচে ট্র্যাভিস হেড ও ছয়ে মিচেল মার্শের মধ্যে খুব প্রয়োজন ছাড়া রদবদল করতে চান না। অবশ্য বর্তমান অধিনায়ক স্মিথকে ওপেনিংয়ে পাঠাতে না চাইলেও সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক স্মিথকে ওপেনিংয়ে খেলানোর পক্ষেই ছিলেন। তার মতে, ওপেনিংয়ে নামলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার চারশ রানের রেকর্ডও ভেঙে দিতে পারেন স্মিথ।

আরও পড়ুন: সুযোগ পেলে বিশ্বের সেরা ওপেনার হবেন স্মিথ: ক্লার্ক

২০১০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্পিনার হিসেবে টেস্ট দলে অভিষেক হয় স্মিথের। এরপর সেখান থেকে নিজেকে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটার হিসেবে গড়ে তোলেন। ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি ব্যাট করেছেন চার নম্বর পজিশনে। ৬৭ ম্যাচে ৬১ দশমিক ৫০ গড়ে রান করেছেন ৫ হাজার ৯৬৬। পাঁচ নম্বর পজিশনে ১৯ ম্যাচে ৫৭ দশমিক ১৮ গড়ে করেছেন ১ হাজার ২৫৮ রান। তবে তিনি সবচেয়ে সফল ছিলেন তিন নম্বরে। ১৭ ম্যাচে আট শতক ও ৬৭ দশমিক ০৭ গড়ে রান করেন ১ হাজার ৭৪৪।

মিডল-অর্ডারে দারুণ সফল হওয়া সত্ত্বেও নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে স্মিথের ওপেনিং করার তাড়না মুগ্ধ করেছে বেইলিকে। একই সঙ্গে এটি গ্রিনকে চার নম্বরে জায়গা করে দিতে সহজ হয়েছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, "মিডল-অর্ডারে এক বা একাধিক পজিশনে দারুণ সফল হওয়ার পরও ওপেন করতে চাওয়ার ইচ্ছা, সেই তাড়না ক্ষুধা থাকা এবং নতুন ভিন্ন কিছু করে দেখতে চাওয়াটা নিঃস্বার্থ একটা ব্যাপার। এটা ক্যামকে (গ্রিন) সুযোগ করে দিয়েছে এমন একটা পজিশনে জায়গা (চার নম্বর) করে দেওয়ার, যেখানে সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খুবই সফল হয়েছে। আমাদের মনে হয়, টেস্ট দলে এটিই তার জন্য ভালো একটা জায়গা।"

আগামী ১৭ জানুয়ারি অ্যাডিলেইডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া। আর এই ম্যাচ দিয়েই নিজের স্বপ্ন পূরণে মাঠে নামতে চলেছেন স্মিথও।

প্রথম টেস্টের অস্ট্রেলিয়া দল:

প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), উসমান খাজা, স্টিভ স্মিথ, মারনাস লাবুশেন, ক্যামেরন গ্রিন, ট্র্যাভিস হেড, মিচেল মার্শ, অ্যালেক্স ক্যারি, মিচেল স্টার্ক, ন্যাথান লায়ন, জশ হেজেলউড, ম্যাট রেনশো, স্কট বোল্যান্ড।

মন্তব্য করুন: