সাকিব-তামিমকে তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ
২৯ জানুয়ারি ২০২৪
ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে দুই মাসের বেশি। এখনও বিশ্বকাপ ব্যর্থতার ‘তদন্ত’ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)! তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া সাকিব আল হাসানের দল মাত্র দুটি ম্যাচ জিততে পেরেছিল। যা স্মরণকালে বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ। সেই আসরের ব্যর্থতা নিয়ে এখনও তদন্ত শেষ হয়নি। সিলেটে চলমান বিপিএলের মাঝেই সোমবার সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালের সাথে কথা বলেছে তদন্ত কমিটি।
দেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে ছাড়াই বিশ্বকাপে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তামিমের চোট ছিল। তিনি হয়তো বিশ্বকাপের সব ম্যাচ খেলতেও পারতেন না। এমতাবস্থায় তাকে বাদ দেওয়া হয় বিশ্বকাপ দল থেকে। ভারতে রওনা হওয়ার আগে একটি টিভি চ্যানেলে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দেন অধিনায়ক সাকিব। যার বেশিরভাগ জুড়ে ছিল তার একসময়ের ‘বন্ধু’ আর বর্তমান সময়ের ‘শত্রু’ তামিমকে নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ। দলের দুই সেরা তারকার এই মতবিরোধের প্রভাব পড়ে দলের ওপর। বিশ্বকাপে চরম বাজে পারফর্মেন্স উপহার দেয় বাংলাদেশ দল।
কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে নাজমুল হোসেন শান্ত স্পষ্ট করে বলেছেন, তামিমকে ঘিরে সাকিবের ওসব বক্তব্যের প্রভাব পড়েছিল দলের ওপর। বিশ্বকাপ দল থেকে তামিমের বাদ পড়ায় হতবাক হয়েছিল ক্রিকেটবিশ্ব। ওয়াসিম আকরাম, অনিল কুম্বলে, ইরফান পাঠান, ওয়াকার ইউনিসের মতো সাবেক সুপারস্টারেরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। যার দায় চাপে সাকিবের ওপর। গত ১৯ নভেম্বর বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর ২৯ নভেম্বর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। যাতে এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে আছেন বিসিবির দুই পরিচালক মাহবুবুল আনাম ও আকরাম খান।
ভারত বিশ্বকাপ ব্যর্থতার কারণ খতিয়ে দেখতে প্রায় সবার সঙ্গেই কথা বলেছে এই তদন্ত কমিটি। বাকি ছিলেন শুধু সাকিব-তামিম। সাকিবের ছিল রাজনৈতিক ব্যস্ততা, আর তামিমের চোট। অবশেষে সোমবার সিলেটে গিয়ে দুজনের সঙ্গে আলাদাভাবে বসেছিলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এই কমিটিতে এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে আছেন দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের এনায়েত হোসেন বলেন, “আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড, আমরা এখন তার শেষ পর্যায়ে আছি। শিগগিরই এটা (প্রতিবেদন) ক্রিকেট বোর্ডকে জমা দিয়ে দেব। যেহেতু ওরা এখানে (সিলেটে), পেয়েছি দুজনকেই।”
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য অবশ্য তদন্ত কমিটিকে কোনো সময় বেঁধে দেয়নি বিসিবি। সব ঠিক থাকলে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় বিসিবির সভায় বিশেষ কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। তার আগে সাকিব-তামিমের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে অবশ্য কিছু বলতে রাজি হননি এনায়েত হোসেন, “দুজনকে নিয়ে আলাদা আলাদা বসেছিলাম। আলোচনা গতিশীল ছিল। ফলপ্রসূ হয়েছে কি না, সেটা এই মুহূর্তে বলতে পারব না। শুধু সাকিব-তামিমের বিষয়ে নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সব বিষয় নিয়েই কথা হয়েছে। তাদের কাছেও আমরা পরামর্শ চেয়েছি।”
বাংলাদেশের ক্রিকেটের দুই সুপারস্টার সাকিব-তামিম একসময় বন্ধু ছিলেন। এখন তাদের সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। কেউ কারও সঙ্গে কথাও বলেন না। এনায়েত হোসেনের কাছে প্রশ্ন যায় সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব নিয়েও। এটি সমাধান করা সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নে এনায়েত হোসেন বলেন, “আপনি যে দ্বন্দ্বের কথা বলছেন আমরা সেটা আমলে আনছি না। এটা স্থায়ী কিছু না। তবে সবকিছুই সমাধানযোগ্য, যদি আপনি সমাধান করতে চান এবং সমাধান করতে জানেন।”
মন্তব্য করুন: