‘ঘৃণিত ক্রিকেটার’ থেকে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা মিচেল মার্শ

৩১ জানুয়ারি ২০২৪

‘ঘৃণিত ক্রিকেটার’ থেকে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা মিচেল মার্শ

অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ মানুষই নাকি তাকেঘৃণা করতেন! ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এমন কথা নিজেই বলেছিলেন মিচেল মার্শ। তখন কি কেউ ভেবেছিল, সেই ঘৃণিত ক্রিকেটারই নিজের খারাপ সময় কাটিয়ে অস্ট্রেলিয়া দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন হয়ে উঠবেন? তিন ফরম্যাটে দারুণ এক বছর কাটিয়ে প্যাট কামিন্স স্টিভ স্মিথের মতো তারকাকে পেছনে ফেলে অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন মার্শ।

২০২৩ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের পারফরমেন্সের উপর ভিত্তি করে ছেলেদের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের জন্য অ্যালেন বর্ডার পদক দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। এই সময়ের মধ্যে টেস্টে ৬৬ গড়ে ৫৯৪ রান করেন মার্শ। ওয়ানডেতে ১১৪ স্ট্রাইক-রেটে প্রায় ৪৮ গড়ে ৮৫৮ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি সিরিজে ৯২ ৭৯ রানের দুটি অপরাজিত ইনিংসও খেলেন এই অল-রাউন্ডার।

বর্ষসেরার লড়াইয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের চেয়ে ৭৯ ভোট বেশি পান মার্শ। আর তিন নম্বরে রয়েছেন স্টিভেন স্মিথ। এদিন বর্ষসেরা ক্রিকেটারের খেতাব ছাড়াও বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের পুরষ্কারও জিতেন মার্শ। অন্যদিকে, বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের শেন ওয়ার্ন পদক জিতেছেন অফ-স্পিনার ন্যাথান লায়ন। বাঁহাতি পেসার জেসন বেরেনডর্ফ হয়েছেন বর্ষসেরা টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটার।

মার্শের ক্রিকেট ক্যারিয়ার অনেকটাই গল্পের মতো। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্ট দিয়ে তিনি অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরেছিলেন। প্রথম ইনিংসে বল হাতে ৪৬ রানে উইকেট নেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে ডানহাতি এই অল-রাউন্ডার বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার অনেকেই আমাকে ঘৃণা করে। অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের ক্রিকেটকে অনেক ভালোবাসে। তারা এটা নিয়ে অনেক উৎসাহী। এটাতে কোনো সন্দেহ নেই যে আমি টেস্টে অনেক সুযোগ পেয়েছি এবং আমি তা কাজে লাগাতে পারিনি। তবে আশা করছি তারা আমাকে সম্মান দেবে কারণ আমি আমি বারবার ফিরে আসি।

সেই ম্যাচের পর মার্শ সাদা পোশাকে আবারও অনিয়মিত হয়ে পড়লেও রঙিন পোশাকে অস্ট্রেলিয়া দলের নিয়মিত মুখ ছিলেন। এরপর ২০২৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্ট দিয়ে দলে ফেরেন এই অল-রাউন্ডার। নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে ১১৮ বলে ১১৮ রান করে দলকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন। পাশাপাশি নিজেকে গড়ে তোলেন দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে। এরপর ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুই সেঞ্চুরি ৪৯ গড়ে ৪৪১ রান করেন।

বুধবার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অ্যালেন বর্ডার পদক গ্রহণের সময় আবেগাপ্লূত হয়ে পড়েন ৩২ বছর বয়সী মার্শ। নিজ স্ত্রী, দলের অধিনায়ক কামিন্স কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, “আমি প্রায়শই আমার স্ত্রীকে বলতাম যে আমি শুধু আরেকটা সুযোগ পেতে চাই। এটা বেশ ভালো ছিল। সে (স্ত্রী) আমাকে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছিল।

অজি অধিনায়ক কামিন্সের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মার্শ আরও বলেন, “আমি কখনও একটু মোটা ছিলাম কারণ আমি বিয়ার পছন্দ করি। তবে তুমি আমার মাঝে সবসময় সেরাটা দেখতে। তুমি আমার জীবন বদলে দিয়েছ। তোমার সহযোগিতা এবং তোমার নেতৃত্বের জন্য প্যাটি (কামিন্স) তোমার অধীনে খেলা স্বপ্নের মতো।

মন্তব্য করুন: