এমন পরাজয়ে কোনো গৌরব নেই: বাজবল নিয়ে বয়কট
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে বিশাখাপত্তনম টেস্টে ভারতের দেওয়া লক্ষ্য ৭০ ওভারের মধ্যে তাড়া করে জিততে চেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু তা তো হয়নি, উল্টো এর আগেই অল-আউট হয়ে যায় ইংলিশরা। আর এই ম্যাচে রান তাড়ায় দলের এরকম আগ্রাসী ব্যাটিং মোটেও পছন্দ হয়নি জেফ বয়কটের। সাবেক এই ইংলিশ অধিনায়কের মতে, ম্যাচে জিততে না পারলে এরকম বিনোদনদায়ী ক্রিকেট একপ্রকার মূল্যহীন।
হায়দরাবাদে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১৯০ রানে পিছিয়ে থাকার পরেও দ্বিতীয় ইনিংসে ওলি পোপের ১৯৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসের পর টম হার্টলির ৭ উইকেট শিকারে ২৮ রানে ম্যাচ জিতে বেন স্টোকসের দল। আর বিশাখাপত্তনমে দ্বিতীয় টেস্টে ৩৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ম্যাচের চতুর্থ দিনে ২৯২ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা, ম্যাচ হারে ১০৬ রানের ব্যবধানে।
মূলত নিউ জিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আক্রমণাত্মক মেজাজে টেস্ট খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড। মারকাটারি ব্যাটিংয়ে দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক ম্যাচেই ফল বের করে আনত ইংলিশরা। আর কোচ ম্যাককালামের ডাক নাম ‘বাজ’ হওয়ায় ইংল্যান্ডের এভাবে খেলার ধরনকে বলা হতে থাকে ‘বাজবল’।
বিশাখাপত্তনম টেস্টে হারের পর ইংলিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে লেখা কলামে বাজবল কৌশলকে কাঠগড়ায় তোলেন বয়কট। আক্রমণাত্মক খেলার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকায় স্টোকসের দল ম্যাচটি ভারতকে জিতিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন ইংলিশ এই ব্যাটিং কিংবদন্তি।
“ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকস আক্রমণ, আক্রমণ ও আক্রমণে বুঁদ হয়ে রয়েছে। তারা যেন বলছে, ‘যদি আমরা জিততে নাও পারি, আমরা বরং গৌরবময় ব্যর্থতার পর্যায়ে থাকব।’ কিন্তু ব্যর্থতা বা পরাজয়ে কোনো গৌরব নেই। বাজবল বিনোদনের ভালো একটা মাধ্যম যখন এটা কাজে দেয়। আজ ইংল্যান্ড ম্যাচ ছুড়ে এসেছে। বাজবল ব্যর্থ ছিল।”
রান তাড়ায় করতে নেমে ৯ জন ইংলিশ ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে যান। কিন্তু জ্যাক ক্রলি ছাড়া কেউই চল্লিশের বেশি পার করতে পারেননি। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করে ডানহাতি এই ওপেনার ফেরেন ৭৩ রান করে। ব্যাটাররা উইকেটে থিতু হতে না পারার কারণেই ইংল্যান্ড ম্যাচ খুইয়েছে বলে মনে করেন টেস্টে ৮ হাজারের বেশি রান করা বয়কট।
“ওভারপ্রতি পাঁচ করে রান করা বিনোদনদায়ক। কিন্তু অনেক ব্যাটার ভালো শুরুর পর তাদের উইকেট ছুড়ে এসেছে। প্রায় ৪০০ রান তাড়া করে জেতার সেরা উপায় হলো ব্যাটারদের একজনের বড় সেঞ্চুরি করা। ভালো বোলারদের তাড়া করতে যাওয়া এবং দ্রুত রান করাটা ঝুঁকির।”
কলামে আলাদা করে জো রুটের কথা বলেন বয়কট। দ্বিতীয় ইনিংসে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে ১১ হাজারের বেশি রান করা এই ব্যাটারের ব্যাটিং ধরন দেখে হতাশা প্রকাশ করেন ইংলিশ কিংবদন্তি।
“বাজবলের কারণেই রুট তার উইকেট হারিয়েছে। ব্যাটিংয়ে নামার পর থেকে সে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করছিল এবং খুব তাড়াতাড়িই সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেয়। সে মাত্র ১৬ রান করেছে। টেকনিক্যালি ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটার সাধারণত ব্যস্ত খেলোয়াড়, যে ভালো স্ট্রাইক রেটে রান করে। কিন্তু নেমেই মেরে খেলার চেষ্টা তাকে তার স্বাচ্ছন্দের জায়গা থেকে বের করে নিয়ে গিয়েছিল।”
পাঁচে নেমে প্রথম বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে রিভার্স সুইপে চার মারেন রুট। এক বল পর একই শটে আরেকটি বাউন্ডারির দেখা পান। পরের ওভারে আরেক স্পিনার অক্ষর প্যাটেলের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকান। তবে অশ্বিনের পরের ওভারেই আবারও এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে আউট হয়ে যান রুট।
মন্তব্য করুন: