রুটের ‘বাজবল’ খেলার কোনো মানেই হয় না: মাইকেল ভন
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ব্যাট হাতে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে যেন কিংবদন্তির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন ইংল্যান্ডের জো রুট। লাল বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে এখন পর্যন্ত করেছেন দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার রান। এরপরেও তার মতো অভিজ্ঞ এক ব্যাটার ভারতের বিপক্ষে বিশাখাপত্তনম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে রীতিমত এক খ্যাপাটে ইনিংস খেলায় তার উপর চটেছেন অনেকেই। রুটের মতো একজন ব্যাটারের ‘বাজবল’ খেলার কোনো দরকার দেখছেন না দেশটির সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন।
হায়দরাবাদ পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারতের পাতানো ফাঁদে তাদেরকে ফেলে দারুণ শুরু করেছিল বেন স্টোকসের দল। তবে বিশাখাপত্তনমে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৯৯ রানের রেকর্ড লক্ষ্য তারা করতে নেমে ২৯২ রানেই থেমে যায় ইংলিশরা। ব্যাটাররা ভালো শুরু পেলেও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। ব্যতিক্রম ছিলেন না রুটও। ২ চার ও ১ ছক্কায় তার ১৬ রানের ইনিংস শেষ হয় মাত্র ১০ বলেই।
আরও পড়ুন: এমন পরাজয়ে কোনো গৌরব নেই: বাজবল নিয়ে বয়কট
লক্ষ্য তাড়ায় পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে রিভার্স-সুইপে চার মারেন রুট। এক বল পর একই শটে আরেকটি বাউন্ডারির দেখা পান। পরের ওভারে আরেক স্পিনার অক্ষর প্যাটেলের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকান। তবে অশ্বিনের পরের ওভারেই আবারও এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে আউট হন ৩০টি টেস্ট শতক হাঁকানো এই ব্যাটার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক কলামে ২০০৫ সালের অ্যাশেজজয়ী অধিনায়ক ভন ইংল্যান্ডের বাজবলের ব্যাপক সমালোচনা করেন। এভাবে খেলতে থাকলে টেস্টে ভালো কিছু করে দেখাতে পারলেও তেমন কিছু জিততে পারবে না বলে মনে করেন তিনি। রুটকে নিয়ে আলাদা করে ভন লেখেন, “ব্যাটারদের দেখে মনে হয়েছে তারা শুধু একভাবেই খেলতে পারে। প্রথম বল থেকেই তারা পঞ্চম গিয়ারে শুরু করে। তাদের কেউ কেউ এভাবে খেললে আমার কোনোই আপত্তি নেই। কারণ, তারা এসবে ভালো। তবে জো রুটের এসব ভুলে যাওয়া উচিত। জো রুটের মতো করে খেলেই সে ১০ হাজার টেস্ট রান করেছে। তার ‘বাজবলার’ হওয়ার দরকার নেই।”
রুটকে এই বিষয় থেকে বের করতে টিম ম্যানেজমেন্টেরও এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন ভন। একই সঙ্গে ডানহাতি এই ব্যাটারকে স্পিনের বিপক্ষে দেশটির ইতিহাসের সেরা একজন ব্যাটার হিসেবে আখ্যা দিয়ে সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, “ম্যানেজমেন্টের কেউ রুটের কাঁধে হাত রেখে বলবে ‘দয়া করে নিজের খেলাটাই খেলো’। আমার মনে হয় এটা পানির মতো পরিষ্কার যে, সে বাজবলে বেশি মাথা ঘামিয়েছে। এই রোমাঞ্চ আর বিনোদনের যে তত্ত্ব, বিশেষ করে স্পিনের বিপক্ষে (রুটের নিজের মতো খেলা গুরুত্বপূর্ণ)। গ্রাহাম গুচের পর রুটই স্পিনের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটার।”
ভনকে সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে দ্বিতীয় ইনিংসে রুটের ব্যাটিং। রুটকে নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলে বাকিদের আক্রমণাত্মক খেলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে খেলেছে, এটা তো রুট নয়। এভাবে উইকেট ছুড়ে দিলে ইংল্যান্ড ভারতে জিতবে না। আমি বুঝেছি, কিছু একটা হয়েছে। যখন দুই ইনিংসেই রিভার্স সুইপে প্রথম রান করেছে। সে এভাবে খেলে না। সে সময় নেয়, এরপর ঝুঁকি নেয়। জোয়ের সেই শক্ত ভিতটা হতে হবে, যাকে ঘিরে বাকিরা খ্যাপাটে আক্রমণ চালাবে।”
রুটের এমন খেলা নিয়ে এর আগে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন স্টোকসও। সে সময় ইংলিশ অধিনায়ক জানিয়েছিলেন, কাউকে নির্দিষ্ট কোনোভাবে খেলতে বলা হয়নি, প্রত্যেকেই নিজের কাজটি জানেন।
মন্তব্য করুন: