মুশফিককে অবসর নিতে বাধ্য করেছিল কারা?

২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মুশফিককে অবসর নিতে বাধ্য করেছিল কারা?

মুশফিকুর রহিম এমনিতেই প্রচারের আলো থেকে নিজেকে দূরে রাখেন। গণমাধ্যমে তাকে খুবই কম দেখা যায়। সংবাদ সম্মেলনেও আসেন কালেভদ্রে। তেমনই গত বুধবার রংপুরকে হারিয়ে বিপিএলের ফাইনাল নিশ্চিত করার পর মিরপুরের সংবাদ সম্মেলনে এলেন মুশফিক। নানা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মন্তব্যের পাশপাশি তিনি এদিন মুখ খোলেন আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি থেকে তার অবসর নিয়ে। মুশফিকের বক্তব্য, তিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেননি!

২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টের মাধ্যমে মুশফিক টি-টুয়েন্টি থেকে অবসর ঘোষণা করেন। সেই পোস্টে তিনি বলেছিলেন, বাকি দুই ফরম্যাটে জোর দিতেই তিনি টি-টুয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। এরপর সর্বশেষ দুটি বিপিএলে তিনি দুর্দান্ত পারফর্ম করে যাচ্ছেন। গতবার সিলেট স্ট্রাইকার্সের ফিনিশারের ভূমিকায় খেলে ১৫ ইনিংসে ৩৯ গড় আর ১৩২ স্ট্রাইকরেটে করেন ৩৫৭ রান। আর চলতি আসরে ফরচুন বরিশালের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৪ ইনিংসে মুশফিকের রান ৩৩ গড় ও ১২৩ স্ট্রাইক রেটে ৩৬৭।

আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়া আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার তামিম ইকবাল চলতি আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের একজন। তাই সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক মুশফিককে প্রশ্ন করেন, আপনি এখন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান স্কোরারদের মধ্যে আছেন, তামিম ইকবাল তো সবার ওপরে, কিন্তু আপনারা দুজনই জাতীয় দলে আর টি-টোয়েন্টি খেলেন না…”। প্রশ্নকর্তাকে থামিয়ে দিয়ে মুশফিক বলেন, রিটায়ার কি করেছিলাম ভাই?

মুশফিকের এমন জবাব শুনে কয়েক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মিরপুর স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষ। মুশফিক নিজেই সেই নিরবতা ভেঙে বললেন, হ্যাঁ, রিটায়ার করেছিলাম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি এ পর্যন্তই ছিল, যেটা দ্রুতই অন্য রূপ পায়। ১৩ মিনিটের সংবাদ সম্মেলন শেষে মুশফিককে ঘিরে সাংবাদিকদের একটা জটলা তৈরি হয় সংবাদ সম্মেলন কক্ষের বাইরে। সেখানে এই প্রসঙ্গ তুলতেই বোমা ফাটান মুশফিক।

এটা তো এখন ভালো খেলার পর বলছেন। আগে তো কেউ এটা বলেননি। আমি শুধু একটা প্রশ্ন করি, আমি কি টি-টুয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছি নিজের ইচ্ছায়? এতটুকু শুধু বলার আছে। যখন অবসর নিয়েছিলাম, তার আগের এক মাস একটু দেখে নিয়েন। আর কিছু বলার নেই।

মুশফিকের কথায় ফিরে তাকানো যেতে পারে ২০২২ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে। ওই সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টুয়েন্টি এশিয়া কাপের দলে মুশফিককে সুযোগ দেওয়া নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। বিসিবির সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম দাবি করেছিল, এশিয়া কাপ শেষেই এই ফরম্যাট থেকে মুশফিককে ছেঁটে ফেলা হবে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রিকেট সমর্থকেরাও মুশফিকের সমালোচনায় মেতেছিলেন।

সেই এশিয়া কাপে মুশফিকের পারফর্ম্যান্স ছিল খুবই খারাপ। দুই ম্যাচে করেন ৫ রান। শুধু তাই নয়, অবসরের আগে ৬ ইনিংসর ৫টিতেই তিনি দুই অংকে যেতে পারেননি। এতে সমালোনার পালে আরও হা্‌ওয়া লাগে, যা মুশফিকের কান পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবসর ঘোষণা করেন মুশফিক। অথচ, তার সাম্প্রতিক ফর্ম বলে দিচ্ছে, এখনো তিনি টি-টুয়েন্টি খেলতে পারেন। সংবাদ সম্মেলন কক্ষ থেকে ড্রেসিংরুমে যেতে যেতে সে সময়ের কথাটাই হয়তো মনে করিয়ে দিলেন মুশফিক।

মন্তব্য করুন: