বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ‘বুড়োদের’ বরিশাল
১ মার্চ ২০২৪
ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স কখনো হারে না- বিপিএলের ইতিহাসে এটা যেন মিথ হয়ে গিয়েছিল। সেই অচলায়তন এবার ভেঙে গেল ফরচুন বরিশালের কাছে। যে দলটিতে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বেশি থাকায় ‘বুড়োদের দল’ বলে কটুক্তিও করতেন অনেকে। সেই বরিশালই আজ কুমিল্লাকে ৬ উইকেটে উড়িয়ে বিপিএলের দশম আসরের শিরোপা উঁচিয়ে ধরল। দলের এই দুর্দান্ত অর্জনে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। ভয়ংকর কুমিল্লা যেন বরিশালের সামনে দাঁড়াতেই পারল না!
মিরপুর শের-ই-বাংলায় শুক্রবার রান তাড়ায় নেমে বরিশালকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ইকবাল আর মেহেদি মিরাজ। ৮ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৭৬ রান। মূলতঃ এখানেই ম্যাচ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় বরিশাল। মঈন আলীকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে বোল্ড হন তামিম। এর আগে খেলেন ২৬ বলে ৩ চার ৩ ছক্কায় ৩৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। তামিম আউট হওয়ার পর বরিশালের রান তোলার গতি কমে আসে। ২৬ বলে ২৯ রান করে আউট হন মিরাজ।
ব্যক্তিগত ১১ রানে সহজ ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া কাইল মেয়ার্সের সঙ্গে জুটি জমে ওঠে মুশফিকুর রহিমের। ১৫তম ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে দুই চার দুই ছক্কায় উড়িয়ে মেয়ার্স তোলেন ২১ রান। তৃতীয় উইকেটে মুশফিক-মেয়ার্সের ৪২ বলে ৫৯ রানের ওই জুটিতে জয়ের দূয়ারে পৌঁছে যায় বরিশাল। মেয়ার্স করেন ৩০ বলে ৪৬ রান আর মুশফিক ১৩। শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রানের। উইকেটে আসেন ডেভিড মিলার। ৬ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বরিশাল। মাহমুদউল্লাহ ৭ আর মিলার ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৪ রান তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলীয় ৬ রানেই সাবেক চ্যাম্পিয়নদের প্রথম উইকেটের পতন হয়। দ্রুতই ধসে পড়ে টপ অর্ডার। সুনিল নারাইন (৫), অধিনায়ক লিটন দাস (১৬), তাওহীদ হৃদয় (১৫), জনসন চার্লস (১৫), মঈন আলী (৩) কেউই বড় স্কোর গড়তে পারেননি। ৭৯ রানেই নেই ৫ উইকেট। তাই মিডল অর্ডারের মহিদুল ইসলাম অংকনের ৩৫ বলে ৩৮ রানের ওয়ানডে মেজাজের ইনিংস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। শেষদিকে উইকেটে আসেন আন্দ্রে রাসেল। ১৭তম ওভারে ওবেদ ম্যাককয়কে ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলেন এই ক্যারিবিয়ান।
জেমস ফুলারের করা পরের ওভারে রাসেল দেখান নিজের আসল রূপ। তিন ছক্কায় ওই ওভার থেকে নেন ২১ রান। ওই ওভার শেষে রাসেলের নামের পাশে ৮ বলে ২৬! এর পরের ওভারেই সব আলো নিজেদের দিকে টেনে নেন সাইফউদ্দিন। তার প্রথম পাঁচ বলের তিনটি ছিল ওয়াইড এবং একটি নো বল। স্ট্রাইকে থাকা আন্দ্রে রাসেল দ্বিতীয় বৈধ বলটিতে সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ পেয়েও নেননি বড় শট খেলার জন্য। কিন্তু ওই ওভারে সাইফউদ্দিন এতটাই দুর্দান্ত বোলিং করলেন, কোনো বাউন্ডারিই এলো না। স্রেফ ৭ রান এসেছে ১০ বলের এই ওভার থেকে। রাসেল ১৪ বলে ২৭ আর জাকের আলী ২৩ বলে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন।
মন্তব্য করুন: