শান্তর শতকে শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
১৩ মার্চ ২০২৪
শ্রীলঙ্কার দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে বেশ বড় ধাক্কাই খেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে দুই অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে সেই ধাক্কা সামলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের বীরোচিত ইনিংসে সফরকারীদের ৬ উইকেটে হারিয়ে দারুণভাবে সিরিজ শুরু করেছে টাইগাররা।
বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পেলেও স্বাগতিক বোলারদের দৃঢ়তায় বেশি বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি শ্রীলঙ্কা। শেষ পাওয়ার প্লেতে ৩৫ রানে লঙ্কানদের শেষ ৫ উইকেট তুলে নিলে ২৫৫ রানে তাদের ইনিংস থামে। জবাবে ২৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন শান্ত ও রিয়াদ। এরপর মুশফিককে নিয়ে ১৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ৩২ বল হাতে রেখে দলকে জয় এনে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৫৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই বোল্ড হন লিটন দাস। নিজের দ্বিতীয় ওভারে আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারকেও (৩) তুলে নেন দিলশান মাদুশঙ্কা। তাওহীদ হৃদয়ও ফেরেন মাত্র ৩ রান করেই। ষষ্ঠ ওভারের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে থাকা দলের হাল ধরেন শান্ত ও রিয়াদ। পাল্টা আক্রমণে দ্রুতগতিতে রান তুলে দলকে বিপদমুক্ত করেন এই দুই ব্যাটার।
চতুর্থ উইকেটে এই জুটি ৬২ বলে ৬৯ রান যোগ করার পর স্কয়ার লেগ থেকে দৌড়ে মাদুশঙ্কা দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিলে ব্যক্তিগত ৩৭ রানে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ। তবে অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ফিরলেও আরেক অভিজ্ঞ মুশফিককে নিয়ে লঙ্কান বোলারদের শাসন করে ৫২ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় অর্ধ-শতক তুলে নেন শান্ত।
অন্যদিকে, ৫৯ বলে ৬ চারে ক্যারিয়ারের ৪৯তম ফিফটি তুলে নেন মুশফিকও। লাহিরু কুমারার করা ৩৮তম ওভারের শেষ বলে কাভার অঞ্চল দিয়ে বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে অধিনায়ক হিসেবে ১০৮ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৮৪ বলে ৭৩ রানে। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে শান্ত অপরাজিত থাকেন ১২২ রানে।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেন পাতুম নিসাঙ্কা ও আভিষ্কা ফার্নান্দো। তানজিম হাসান সাকিবের পেস তোপে তা আর ধরে রাখতে পারেনি সফরকারীরা। প্রথম পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার আগের বলে ফার্নান্দোকে (৩৩) ফিরিয়ে ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ডানহাতি এই পেসার। নিজের করা পরের দুই ওভারে তুলে নেন আরেক ওপেনার নিসাঙ্কা (৩৬) ও সাদিরা সামারাবিক্রমাকেও (৩)।
দ্রুত তিন উইকেট হারালেও চতুর্থ উইকেটে চারিত আসালাঙ্কাকে নিয়ে লঙ্কানদের বড় সংগ্রহের পথে রাখার চেষ্টা করেন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। তবে মিরাজের ঘূর্ণিতে তা আর বেশি দূর এগোয়নি।
পঞ্চম উইকেটে মেন্ডিস ও জানিত লিয়ানাগের পাল্টা আক্রমণে ৬৮ বলে ৬৯ রান যোগ করে লঙ্কানদের বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যেতে থাকলে বাধা হয়ে দাঁড়ান তাসকিন। ৫৯ রান করা অধিনায়ক মেন্ডিসকে ফিরিয়ে ডানহাতি এই পেসার ম্যাচে নিজের প্রথম আঘাত হানেন। এরপর দ্রুতই ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (১৩) ও মহীশ তিকশানার (১) উইকেটও তুলে নেন তাসকিন।
৬৯ বলে ৬৭ রান করা লিয়ানাগেকে ফিরিয়ে ম্যাচে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন শরীফুল। বাঁহাতি এই পেসার লঙ্কানদের লেজের দিকটা ছেঁটে দিলে তাদের ইনিংস গুটিয়ে যায় ৪৮ ওভার ৫ ওভারে। বাংলাদেশের তিন পেসারই এদিন ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন।
মন্তব্য করুন: