নিসাঙ্কা-আসালাঙ্কার ব্যাটে সিরিজে ফিরল শ্রীলঙ্কা
১৫ মার্চ ২০২৪
সিরিজ জয়ের অভিযানে ব্যাট হাতে তাওহীদ হৃদয়ের দৃঢ়তার পর বোলারদের নৈপুণ্যে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। শুরুতেই প্রতিপক্ষের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে চাপেও রেখেছিল তাদের। কিন্তু পাতুম নিসাঙ্কা ও চারিত আসালাঙ্কার দুর্দান্ত এক জুটিতে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় শ্রীলঙ্কা। এই জুটি ভাঙার পর বাংলাদেশের আশা জাগলেও বাকি কাজটা করে দেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। টাইগারদের অপেক্ষার প্রহর বাড়িয়ে ৩ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল সফরকারীরা।
শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সৌম্য সরকারের ৬৮ ও হৃদয়ের অপরাজিত ৯৬ রানের সুবাদে ২৮৬ রানের সংগ্রহ পায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ চাপে থাকা দলকে টেনে তোলেন নিসাঙ্কা ও আসালাঙ্কা। চতুর্থ উইকেটে এই দুই ব্যাটার ১৮৫ রান যোগ করার পর দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে শ্রীলঙ্কা।
২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা সফরকারীদের ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আভিস্কা ফার্নান্দোকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হানেন শরীফুল ইসলাম। এরপর পঞ্চম ওভারে নিজের করা প্রথম বলে দারুণ ছন্দে থাকা লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসকে (১৬) তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে সাজঘরের পথ দেখান শরীফুল।
৪৩ রানে ৩ উইকেট হারানো দলের ত্রাণকর্তা হয়ে আসে নিসাঙ্কা-আসালাঙ্কা জুটি। তবে এক্ষেত্রে লিটন দাসকেও কিছুটা কৃতিত্ব দিতে হয়। ব্যাট হাতে ব্যর্থ লিটন দশম ওভারে ৭ রানে থাকা আসালাঙ্কার ক্যাচ না ফেললে গল্পটা ভিন্নও হতে পারত। তবে এরপর এই দুই ব্যাটারকে বোলাররা আর তেমন চাপে ফেলতে পারেনি।
একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে দ্রুতগতিতে জয়ের দিকে এগুতে থাকে লঙ্কানরা। ১০০ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক তুলে নেন নিসাঙ্কা। শেষ ৫ ম্যাচে ডানহাতি এই ব্যাটারের এটি তৃতীয় সেঞ্চুরি। তবে ১১৪ রান করা এই ওপেনারকে তলে নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরানোর ইঙ্গিত দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
অপর প্রান্তে সেঞ্চুরির দিকে এগুতে থাকা আসালাঙ্কাকে (৯১) কট-বিহাইন্ড করে ওয়ানডেতে নিজের শততম উইকেট তুলে নেন তাসকিন। আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো জানিত লিয়ানেকে (৯) ফেরান তানজিম হাসান সাকিব। তবে ২৩ রানে ৩ উইকেট হারালেও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও দুনিত ভেল্লালেগের দৃঢ়তায় জয় পায় শ্রীলঙ্কা।
এর আগে দিনের শুরুতেই বাংলাদেশকে চাপে ফেলেন লিটন। গত ম্যাচের মতো এদিনও দিলশান মাদুশঙ্কার বলে কোনো রান করেই ডানহাতি এই ব্যাটার সাজঘরে ফেরেন। ইংনিংসের তৃতীয় বলে স্কয়ার লেগে থাকা দুনিত ভেল্লালেগেকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪তম ডাক মারেন লিটন।
প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিতে সৌম্য সরকারকে নিয়ে লঙ্কান বোলারদের বিপক্ষে পাল্টা আক্রমণে যান শান্ত। তবে ১৩তম ওভারে দারুণ খেলতে থাকা শান্তকে (৪০) সাজঘরে ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেট ৭৫ রানের এই জুটিটি ভাঙেন মাদুশঙ্কা।
অধিনায়ক ফিরলেও দারুণ সব শটে ৫২ বলে ৯ চারে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন সৌম্য। এরপর দ্রুততম বাংলাদেশী হিসেবে বাঁহাতি এই ব্যাটার ওয়ানডেতে ২ হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন। তবে হৃদয়ের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন সৌম্য।
হাসারাঙ্গার করা ২২তম ওভারে রিভার্স-সুইপে বাউন্ডারি মারতে গিয়ে ৬৮ রানে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ দেখেন সৌম্য। দুই বলে পর ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ২৫ রান করা মুশফিকুর রহিমকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন হাসারাঙ্গা।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ৭৪ বলে ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। শেষ দিকে তাসকিন সঙ্গে হৃদয়ের ২৩ বলে ৫০ রানের জুটিতে গড়ে বড় সংগ্রহ দাঁড় করান। দায়িত্বশীল ইনিংসে ১০২ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় হৃদয় অপরাজিত থাকেন ৯৬ রানে।
মন্তব্য করুন: