চট্টগ্রামে ক্যাচ মিসের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি ফিল্ডাররা
৩১ মার্চ ২০২৪
চট্টগ্রাম টেস্টে ছয় ব্যাটারের ফিফটিতে রান পাহাড়ে উঠেছে শ্রীলঙ্কা। তবে রান পাহাড়ে উঠতে সফরকারী ব্যাটারদের যতোটা না কৃতিত্ব, তার চেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে বাংলাদেশ ফিল্ডারদের। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত নির্বিষ বোলিংয়ের সঙ্গে চুড়ান্ত পর্যায়ের বাজে ফিল্ডিংয়ের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সহজ ক্যাচ হাতছাড়া, একটু কঠিন ক্যাচের সুযোগগুলোকে তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হওয়া, কিংবা রান-আউটের সুযোগ মিসে প্রথম ইনিংসে ৫৩১ রানে সংগ্রহ পেয়েছে লঙ্কানরা।
বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিং প্রদর্শনীর শুরুটা হয় শনিবার ম্যাচের প্রথম দিনই। সিলেট টেস্টের মতো এদিনও সহজ ক্যাচ মিস করেন স্লিপে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়। দিনের ষষ্ঠ ওভারেই অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের বলে তিনি নিশান মাদুশকার ক্যাচ তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন। সে সময় ৯ রানে ব্যাট করছিলেন মাদুশকা। শেষ পর্যন্ত এই ওপেনারের ইনিংস থামে ৫৭ রানে।
এরপর বাজে ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ মিসের তালিকায় যোগ দেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামা সাকিব আল হাসান। এবার জীবন পান আরেক ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে। বোলার সেই হাসান। ২২তম ওভারের শেষ বলে ডানহাতি এই পেসারের বাউন্সার হুক করতে গিয়ে ফাইন-লেগে তোলেন করুনারত্নে। বাউন্ডারি লাইনে থাকা সাকিব বলের লাইন বুঝতে না পেরে ক্যাচের জন্য বেশ এগিয়ে যান। কিন্তু দেশসেরা অল-রাউন্ডার বল তো তালুবন্দী করতে পারেননি উল্টো তার হাত ফসকে তা ছক্কা হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২২ রানে জীবন পাওয়া করুনারত্নের ইংনিস থামান সেই হাসানই। অভিষেক উইকেটে লঙ্কান ওপেনারকে ফেরান ৮৬ রানে।
জীবন পাওয়া ছাড়াও করুনারত্নের রান-আউটের সুযোগ হাতছাড়া করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম দিনের খেলায় জীবন পান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসও। মিরাজের বলে প্রথম স্লিপে থাকা শাহাদাত হোসেন দিপুর হাতের পাশ দিয়ে গেলেও তিনি তা ছুঁতেই পারেননি। তবে ১০ রানে জীবন পেলেও ২৩ রানের বেশি করতে পারেননি ম্যাথিউস।
এরপর দিনের বাকি অংশে ও দ্বিতীয় দিনে ক্যাচের আরও কিছু সুযোগের সৃষ্টি হলেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। তবে রোববার মধ্যাহ্ন বিরতির পর স্লিপে দাঁড়ানো শান্ত, দিপু ও জাকির হাসান যেভাবে হাস্যকরভাবে ক্যাচ মিস করেন তা উদাহরণ হয়ে থাকবে।
ইনিংসের ১২১তম ওভারে খালেদের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন প্রভাত জয়াসুরিয়া। কিন্তু সহজ এই ক্যাচটি তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক শান্ত। শুধু শান্ত বললে ভুল, স্লিপে দাঁড়ানো তিনজন মিলেই ক্যাচটি মিস করেন। শান্তর হাত থেকে ছুটে যাওয়া বলটি দিপু লাফিয়ে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার হাত থেকে সেটি পড়ে গেলে জাকির লাফিয়ে ধরার চেষ্টা করলে তা মিস করেন।
ব্যক্তিগত ৬ রানে জীবন পাওয়া প্রভাতকে আবারও ২৩ রানে জীবন দেয় বাংলাদেশ। এবারের বোলার তাইজুল ইসলাম এবং ক্যাচ মিস করেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস।
১৪৯তম ওভারে গত ম্যাচে জোড়া শতক হাঁকানো কামিন্দু মেন্ডিসকে জীবন দেন হাসান। এবারও বোলার তাইজুল। পুরো ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকা বাঁহাতি এই ব্যাটার স্লগ-সুইপে বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টা করলে ডিপ মিডউইকেটে হাওয়ায় থাকা বলটি তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন হাসান। ৬১ রানে জীবন পেয়ে এদিনও সেঞ্চুরির দিকেই এগুচ্ছিলেন কামিন্দু। কিন্তু শেষ ব্যাটর রান-আউটে কাটা পড়লে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
মন্তব্য করুন: