`তরুণ` ধোনির ৩ ছক্কাতেই মুম্বাইয়ের সর্বনাশ
১৫ এপ্রিল ২০২৪
তারকাখ্যাতি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের জন্য মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচকে বলা হয়ে থাকে আইপিএলের ‘এল ক্লাসিকো’। বরাবরের মতো এবারও টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দুই দলের মহারণের জন্য মুখিয়ে ছিল দর্শকরা। প্রায় চারশ রানের ম্যাচে সেঞ্চুরি হয়েছে একটি, ঝড়ো ফিফটি আছে দুজনের, দারুণ বোলিং করে চার উইকেটও নিয়েছেন একজন – এক কথায় জমজমাট ম্যাচের জন্য যা দরকার তার সবটাই ছিল।
এত সব দারুণ পারফরম্যান্সের ভিড়েও ম্যাচের মূল পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন চেন্নাইয়ের এক ‘তরুণ’ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার! এমনটাই বলেছেন দলের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। আর সেই তরুণের নাম হচ্ছে মহেন্দ্র সিং ধোনি। ৪২ বছর বয়সী অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ৪ বলে ৩ ছক্কায় ২০ রানের অপরাজিত ইনিংসটি শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল নির্ধারণে বেশ বড় ভূমিকা রেখেছে। রোহিত শর্মার দুর্দান্ত এক শতকের পরেও শেষ পর্যন্ত চেন্নাই ম্যাচ জেতে ২০ রানে।
রোববার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে চেন্নাই ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে ক্রিজে আসেন ধোনি। ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক মাঠে নামতেই পুরো গ্যালারি ছেয়ে যায় ‘ধোনি’, ‘ধোনি’ স্লোগানে। দেখে বোঝার কোনো উপায় ছিল না যে খেলাটা আসলে প্রতিপক্ষের মাঠে হচ্ছে।
ক্রিজে এসে প্রথম বলেই মুম্বাই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটের সামনে দেওয়া ডেলিভারিটিকে সোজা গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেন ধোনি। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়েন দর্শকরা। পরের বলটিতেও ছক্কা হাঁকান ডানহাতি এই ব্যাটার।
ধোনির তাণ্ডবে ততক্ষণে হয়তো খেই হারিয়ে ফেলেন পান্ডিয়া। পরের বলটি করে বসলেন ফুল টস। আর বলটিকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে আনন্দের জোয়ারে ভাসান দর্শকদের। শেষ বলে ঠিকঠাক টাইমিং মেলাতে পারায় দুই রান নিয়ে ২০৬ রানে চেন্নাইয়ের ইনিংস শেষ করেন দলের সাবেক অধিনায়ক।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৬৩ বলে রোহিত ১১ চার ও ৫ ছক্কায় ১০৫ রানের দারুণ এক অপরাজিত ইনিংস খেললেও দলকে জেতাতে পারেননি। অপর প্রান্ত থেকে তেমন সহায়তা না পাওয়ায় মুম্বাইয়ের ইনিংস থামে ১৮৬। তবে এখানে চেন্নাইয়ের বোলারদেরও কৃতিত্ব কম নয়। ৪ ওভারে ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে অবদান রাখেন মাথিসা পাথিরানা। কিন্তু এদিন বেশ বিবর্ণ ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। আসরজুড়ে দারুণ ছন্দে থাকা বাঁহাতি এই পেসার ৪ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে নেন এক উইকেট।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ধোনির ইনিংসটিকে প্রশংসায় ভাসিয়ে চেন্নাই অধিনায়ক বলেন, “তরুণ একজন উইকেটকিপার ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকে নেমে তিনটি ছক্কা মেরেছেন… আমার মনে হয়, এটা দারুণ সহায়তা করেছে এবং আমার মনে হয়, দিনশেষে এটিই মূল পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।”
শুধু রুতুরাজই নয়, মুম্বাই অধিনায়কও পুরো ম্যাচে ধোনির প্রভাবের কথা স্বীকার করেন। চেন্নাইয়ের বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকেটের পেছনে থাকা ধোনিকেও কৃতিত্ব দিয়ে পান্ডিয়া বলেন, “তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে এবং উইকেটের পেছনে তাদের একজন ছিল, যে তাদেরকে বলে দিচ্ছিল, কী কী কার্যকর হচ্ছে এখানে। এটাও তাদেরকে সহায়তা করেছে।”
মন্তব্য করুন: