সাকিবের সামনে ‘বিড়াল’ বিসিবি মুস্তাফিজের জন্য ‘বাঘ’
২৪ এপ্রিল ২০২৪
ভালোমন্দ মিলিয়েই আইপিএল কাটছে মুস্তাফিজুর রহমানের। দুর্দান্ত শুরুর পর এখন তিনি কিছুটা চাপে আছেন। সর্বশেষ দুই ম্যাচে বেদম মার খেয়েছেন। টুর্নামেন্টের হিসেবে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় পেরিয়ে যায়নি। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তো মুস্তাফিজকে সেই সময়টুকু দিচ্ছে না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ (!) টি-টুয়েন্টি সিরিজের জন্য তাকে ফেরানো হচ্ছে দেশে।
মুস্তাফিজের ছুটির মেয়াদ বাড়াতে বিসিবিকে অনুরোধ করেছিল চেন্নাই সুপার কিংস। এরপর মাত্র একদিন তার ছুটি বাড়িয়েছে বিসিবি! ১ এপ্রিলই মুস্তাফিজের আইপিএল শেষ হয়ে যাবে। তারপর দেশে ফিরে খর্বশক্তির জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে হবে। দেশের অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক এমনকী একাধিক বোর্ড কর্মকর্তাও মনে করেন, জিম্বাবুয়ে সিরিজের চেয়ে মুস্তাফিজকে আইপিএলে খেলানো উচিত ছিল। কিন্তু বিসিবি কোনো কথাই কানে তোলেনি। বরং জালাল ইউনুসদের মুখে শোনা গেছে হাস্যকর সব অজুহাত।
বিসিবির অবস্থান বলুন আর দৃঢ়তা বলুন, এর কোনোটাই কিন্তু সাকিব আল হাসানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। গত বিশ্বকাপের পর থেকে একটিমাত্র আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন সাকিব আল হাসান- শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি খেলেছেন গত বছরের জুলাইয়ে। সেই সাকিব আল হাসানের নাম নেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের আগে তিন দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্পের জন্য ১৭ সদস্যের দলে। তার মানে সাকিবের কোনো প্রস্তুতির দরকার নেই? নাকি দলীয় শৃঙ্খলা আর সিস্টেমকে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিলেন? বিসিবিকে যেন চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন- 'পারলে কিছু কর'!
জিম্বাবুয়ে সিরিজে সাকিব খেলুক বা না খেলুক, তার প্রতি বিসিবির নতজানু অবস্থান পরিস্কার হয়ে গেছে। সাকিবের এখন কোনো ইনজুরি সমস্যা নেই, রাজনৈতিক ব্যস্ততাও নেই। তিনি পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। ঠিক এ কারণেই তাকে প্রস্তুতি ক্যাম্পের দলে রাখা হয়নি! কিংবা সাকিব নিজেই থাকতে চাননি। বিসিবিও পারেনি মুস্তাফিজের মতো সাকিবকে দেশে ফিরতে বাধ্য করতে। বিষয়টি এমন হয়ে গেছে যে- সাকিবের ইচ্ছা হয়েছে, তাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন! যদি মন চায়, তাহলে দেশে ফিরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই-একটা ম্যাচ খেলে সবাইকে ধন্য করতে পারেন।
সাকিব ভালো করেই জানেন, তাকে ছাড়া বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলতে যাবে না। এমনটা হলে দেশে তোলপাড় শুরু হবে। এজন্যই হয়তো ক্ষণে ক্ষণে বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে, জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে তিনি বাধ্য নন। জাতীয় দলের সিরিজ থাকলেও তিনি খেলতে বাধ্য নন। বিসিবি তো আর মুস্তাফিজের মতো সাকিবকে দেশে ফেরাতে পারে না। বেঁধে দিতে পারে না সময়সীমা। কোনো সিরিজ খেলাতে বাধ্য করতে পারে না। সাকিব যেন নিজেই ক্রিকেট বোর্ড। অনেকটা ‘যা খুশি তাই’ করে চলেন তিনি জাতীয় দলে। বিসিবি তার সামনে ‘বিড়াল’ সাজে; মুস্তাফিজের সামনে ‘বাঘ’।
মন্তব্য করুন: