হৃদয়-রিয়াদের পাওয়ার হিটিংয়ে বাংলাদেশের জয়
৫ মে ২০২৪
ভালো শুরুর পর ঝিমিয়ে পড়লেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও ধরলেন প্যাভিলিয়নের পথ। বারবার হানা দিল বৃষ্টি। সব বাধা কাটিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে দলকে পথ দেখালেন মাহমুদউল্লাহ আর ম্যাচসেরা তাওহীদ হৃদয়। ৬ উইকেটের জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ২-০ ব্যবধানে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রোববার রান তাড়ায় নেমে বাংলাদেশকে ঝড়ো সূচনা এনে দেন লিটন দাস আর তানজিদ তামিম। তবে দ্রুতই কেন যেন দুজনেই ঝিমিয়ে পড়েন! আইনস্লি এনডলোভুর করা ৬ষ্ঠ ওভারে ১৯ বলে ১৮ রান করা তানজিদ ক্যাচ দিলে ৪১ রানে ভাঙে জুটি। স্কোরবোর্ডে ৫৬ রান উঠতেই নেমে আসে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি থামার পর ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন অধিনায়ক শান্ত। ১৫ বলে ১৬ রান করে জঙ্গুয়ের বলে তুলে দেন ক্যাচ। এরপর পালা লিটন দাসের। জঙ্গুয়ের করা ১০ম ওভারের শেষ বলটি স্লোয়ার এবং বেরিয়ে যাচ্ছিল।
ঝিমুতে ঝিমুতে ২৫ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ২৩ রান করা লিটন ছক্কা মারতে গিয়েছিলেন। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে জোনাথন ক্যাম্পবেলের হাতে জমা পড়ে। লিটন এর আগে একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচেও গিয়েছিলেন। এরপর তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে জমে ওঠে জাকের আলীর জুটি। এনগারাভার বলে জাকের (১৩) বেশ অদ্ভুতভাবে বোল্ড হলে ২৩ বলে ৩১ রানের জুটি ভাঙে। শেষ পাঁচ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩৬ রানের। উইকেটে আসেন মাহমাউদউল্লাহ। হৃদয় ছিলেন আগের মতোই আগ্রাসী।
দুজনে মিলে শুরু করেন পাওয়ার হিটিং। মুহূর্তেই গ্যালারি হয়ে ওঠে উন্মাতাল। মুজারাবানির করা ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে দুর্দান্ত কাভার ড্রাইভে চার মেরে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মাহমুদউল্লাহ। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ১৬ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ২৬ রানে। অন্যদিকে হৃদয় ২৫ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত। পঞ্চম উইকেটে দুজনের ২৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৯ রানের জুটিতে ৯ বল এবং ৬ উইকেট হাতে রেখে সহজেই জয় পায় বাংলাদেশ।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৮ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। ধীর শুরুর পর চতুর্থ ওভারে দলীয় ১৫ রানেই তারা প্রথম উইকেট হারায়। রিভিউ নিয়ে টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে (২) এলবিডাব্লিউ করে ফেরান তাসকিন আহমেদ। শুরু হয় ব্যাটিং বিপর্যয়। ৮ম ওভারে আরেক ওপেনার জয়লর্ড গাম্বিকে (১৭) অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর তালুবন্দি করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এরপরই জোড়া আঘাত হানেন লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। ফিরে যান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (৩) আর ক্লাইভ মাডান্ডে (০)। তিনে নামা ক্রেইগ আরভিনকে (১৩) লিটন দাসের তালুবন্দি করেন শেখ মাহেদি। ১১ ওভারে ৪২ রানে ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ব্রায়ান বেনেট আর জোনাথান ক্যাম্পবেল। ৬ষ্ঠ উইকেটে দুজনে গড়েন ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটি। এই জুটিতেই ১৭তম ওভারে জিম্বাবুয়ের স্কোর একশ ছাড়ায়। ২৪ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ৪৫ রান করা ক্যাম্পবেলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন শরীফুল ইসলাম। লুক জঙ্গুয়েকে (২) হৃদয়ের তালুবন্দি করে দ্বিতীয় শিকার ধরেন তাসকিন। সাইফউদ্দিনের করা শেষ ওভারে ১৮ রান নেওয়া জিম্বাবুয়ে থামে ৭ উইকেটে ১৩৮ রানে। ২৯ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন বেনেট। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আর রিশাদ দুটি করে উইকেট নেন। আর একটি করে নিয়েছেন শরীফুল, মাহেদী এবং সাইফউদ্দিন।
মন্তব্য করুন: