চার মাসে ৩০টি ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপ মিস করার শঙ্কায় তাসকিন

চার মাসে ৩০টি ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপ মিস করার শঙ্কায় তাসকিন

কাঁধের চোট নিয়েই গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ খেলেছিলেন তাসকিন আহমেদ। এরপর আড়াই মাস বিশ্রাম শেষে বিপিএল দিয়ে মাঠে ফিরেন। এরপর থেকে একটানা খেলে গেছেন শ্রীলঙ্কা সিরিজ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এবং জিম্বাবুয়ে সিরিজ। এই একটানা খেলার খেসারত হিসেবে চোটে পড়েছেন দেশের সেরা এই পেসার। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি খেলতে পারবেন কিনা- তা নিয়ে জেগেছে শঙ্কা। অনেকেই বলছেন, তাসকিনকে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই একটানা খেলিয়ে যাওয়ার ফল এই ইনজুরি।

পরিসংখ্যান বলছে, গত চার মাসে ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক মিলিয়ে সাদা বলে ৩০টি ম্যাচ খেলেছেন তাসকিন। এর মাঝে ১১টি ওয়ানডে আর বাকি ১৯টি বিশ ওভারের ফরম্যাটের ম্যাচ। ইনজুরি থেকে ফিরে বিপিএলের সবশেষ আসরে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে তিনি ১২টি ম্যাচ খেলেছেন। এরপর ঘরের মাঠের শ্রীলঙ্কা সিরিজে খেলেছেন তিনটি করে ওয়ানডে আর টি-টুয়েন্টি। লাল বলের ক্রিকেট থেকে আপাতত বিরতি নেওয়ায় লঙ্কানদের বিপক্ষে তার টেস্ট খেলতে হয়নি।

শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষেই তাসকিন যোগ দেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল)। এপ্রিল মাসজুড়ে ছিল প্রচণ্ড গরম। এই গরমের মাঝেই তাকে একের পর এক ম্যাচ খেলিয়ে গেছে আবাহনী। ওয়ানডে ফরম্যাটের ডিপিএলে ৮ ম্যাচ খেলে তিনি মোট ৬১.৫ ওভার বোলিং করেছেন! অর্থাৎ প্রতি ম্যাচে গড়ে তিনি বল করেছেন ৮ ওভার। ডিপিএল শেষ না হতেই ডাক পড়ে জিম্বাবুয়ে সিরিজে। খর্বশক্তির দলটির বিপক্ষে তাকে প্রথম চার ম্যাচ খেলানো হয়েছে। চতুর্থ ম্যাচে চোট পাওয়ায় রোববার শেষ ম্যাচে খেলতে পারেননি।

বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে দেশের সেরা পেসারের সাইড স্ট্রেইন ইনজুরি আবার ফিরে এসেছে। রোববার তার স্ক্যান করানো হয়েছে। সোমবার সকালে মিলবে রিপোর্ট। সোমবারই আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা হওয়ার কথা। এর আগে আজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে যা বললেন, তাতে উৎকণ্ঠার যথেষ্ট কারণ আছে।

আজকেই আমরা খোঁজ নিয়েছি, ওর একটা ইনজুরি আছে। কালকে সকালে রিপোর্ট পাওয়ার পর দেখতে হবে যে, কতদিন ওর লাগতে পারে (ফিট হতে)। দ্রুত ওকে সারিয়ে তোলার সুযোগ আছে কি না। নরম্যালি তো দুই থেকে তিন সপ্তাহের বিশ্রাম দেবে। যদি এটা দুই সপ্তাহ হয়, তাহলে কী করব, তিন সপ্তাহ হলে কী করব, এটাকে দ্রুত করার কোনো উপায় আছে কি না।

বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, দরকার হলে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলব, এখনই যোগাযোগ করব। যদি দ্রুত সারিয়ে তোলা যায়, তাহলে এক ব্যাপার, আর যদি দেখা যায় যে আসলেই দেরি হবে, তাহলে আমাদের অন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কালকে (সোমবার) অফিসিয়ালি রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করব।

জিম্বাবুয়ে সিরিজে চার ম্যাচ খেলে ৮ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হয়েছেন তাসকিন। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ওভারপ্রতি দিয়েছেন মাত্র ৪.৫৬ রান। বোলিং গড় ৯.১২। এই তাসকিনকে শেষ পর্যন্ত যদি না পাওয়া যায়, সেটা হবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা। সেইসঙ্গে কিছু প্রশ্নও থেকে যাবে। দেশের সেরা পেসারের প্রতি কি যথেষ্ট যত্নবান ছিল বিসিবি? চোট থেকে ফেরার পর তাকে দিয়ে এতগুলো ম্যাচ খেলানো কতটা যৌক্তিক ছিল? কিংবা বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে না পারা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই কেন তাকে একের পর এক ম্যাচ খেলাতে হবে?

মন্তব্য করুন: