বাবা ভীষণ রাগ করতেন, মা দিয়েছিলেন শর্ত

বাবা ভীষণ রাগ করতেন, মা দিয়েছিলেন শর্ত

বাংলাদেশের ওপেনিং স্লটে সম্ভাবনাময় এক তরুণের নাম তানজিদ হাসান তামিম। মাত্র পাঁচ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে ডাক পেয়েছেন টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচে দুই ফিফটি করে নিজের প্রতিভা জানান দিয়েছেন। এবার সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিসিবির পাঠানো ভিডিওবার্তায় শোনালেন নিজের ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে ওঠার গল্প।

বগুড়ার ছেলে তানজিদের বাবা সরকারি চাকরিজীবী। অন্য সব বাবার মতো তিনিও চাইতেন ছেলে পড়াশোনা করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু তানজিদের ঝোঁক ছিল ক্রিকেটে। তাই তার ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে ওঠার পথ মসৃণ ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিসিবির পাঠানো ভিডিওবার্তায় তানজিদ বলেন, সব মাবাবাই চান তার ছেলে পড়াশোনা করে অনেক ভালো কিছু হবে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমার মাবাবাও সেই স্বপ্নই দেখেছিল।

তানজিদ বলতে থাকেন, গ্রাম থেকে শহরে নিয়ে এসেছিলাম পড়াশোনা করার জন্য। জিলা স্কুলে পড়াশোনা করি। খেলার ওপর অনেক ঝোঁক ছিল। যখনই ছুটি পেতাম কিংবা পড়াশোনার ফাঁকে যেটুকু সময় পেতাম, খেলাধুলা করেছি। স্কুল শেষে বাসায় টিচার (গৃহশিক্ষক) আসতেন। রাতেও টিচার আসতেন। সময় পাওয়া খুব কঠিন ছিল। আম্মু আমাকে বলতেন, স্কুল থেকে আসার পর যদি আমি টিচারদের পড়াটা শেষ করতে পারি, তাহলে আমাকে খেলতে দেবেন।

মায়ের দেওয়া শর্ত নিয়ে তানজিদ আরও বলেন, আম্মু আমাকে আরেকটি কথা বলতেন, যদি আমি লেখাপড়ায় ভালো করতে পারি, তাহলে আমাকে একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেবেন, ব্যাট-বল কিনে দেবেন। আমিও পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই ছিলাম। রেজাল্ট ভালো করতাম। এসব শর্ত পূরণ করলে আম্মু আমাকে খেলতে দিতেন।

মা একটু নমনীয় হলেও তানজিদের বাবা ক্রিকেট খেলার কথা শুনলেই রেগে যেতেন। তানজিদের ভাষায়, আব্বু অফিস থেকে ফিরে হয়তো দেখতেন, আমি বাসায় নেই। টিচার এসে বসে আছেন। আমি মাঠে খেলতে গিয়েছি। বাবা এ জন্য অনেক রাগ করতেন। বাবা যে কঠোর হতেন, এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। এখন আমার মাবাবা অনেক সমর্থন দেন। ভালো ও খারাপ দুই সময়েই সমর্থন দেন।

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে হুট করেই ডাক পেয়েছিলেন তানজিদ। এবার ডাক পেলেন টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপেও। দেশের হয়ে খেলাটাই তার কাছে সবচেয়ে গর্বের, আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে বিশ্বকাপে খেলতে পেরেছি। একটি ব্যাপার বিশ্বাস করি যে, হয়তো নিজে তেমন ভালো করতে পারিনি। কিন্তু যে বিষয়গুলো আমি দুই বছর পর শিখতাম, সেগুলো আমি হয়তো বিশ্বকাপে খেলার মাধ্যমে শিখেছি। বড় বড় খেলোয়াড়ের পরিণত মানসিকতা দেখেছি, যেটা আমাকে পরবর্তী সময়ে অনেক সাহায্য করবে।

মন্তব্য করুন: