রুদ্ধশ্বাস সুপার ওভারে পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

রুদ্ধশ্বাস সুপার ওভারে পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার! অসাধারণ, দুর্দান্ত, স্মার্ট ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র্। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পর স্বাগতিকদের অবিশ্বাস্য রান চেজিংয়ে খেলা গড়াল সুপার ওভারে।  সেই সুপার ওভারেই ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি সবার মন জিতে নিল মোনাঙ্ক প্যাটেলের দল। অন্যদিকে বিব্রতকর পরাজয় দিয়ে শুরু হলো বাবর আজমদের বিশ্বকাপ অভিযান।

রান তাড়ায় বেশ ভালো শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ৬ষ্ঠ ওভারে দলীয় ৩৬ রানে আউট হন স্টিভেন টেলর (১২)। এরপর অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল আর আন্দ্রিস গুস মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৪৮ বলে ৬৮ রানের জুটি উপহার দেন। ২৬ বলে ৩৫ করা গুসকে বোল্ড করেন হারিস রউফ। এর আগেই ৩৪ বলে ৭ চার ১ ছক্কায় ফিফটি তুলে নেন মোনাঙ্ক। তবে ফিফটি পূরণের পর ৪ বল খেলে আর কোনো রান যোগ না করেই মোহাম্মদ আমিরের শিকার হন। এতে বড় ধাক্কা খায় যুক্তরাষ্ট্র।

শেষ পাঁচ ওভারে তাদের প্রয়োজন হয় ৪৫ রানের। দুই নতুন ব্যাটার অ্যারন জোন্স আর নিতিশ কুমার লড়াই করছিলেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। হারিস রউফের সেই ওভারে একটা ক্যাচও ফেলেছেন শাহিন আফ্রিদি। তৃতীয় বলে অ্যারন জোন্স মারেন ছক্কা। শেষ বলে দরকার হয় ৫ রানের। সেই বলে বাউন্ডারি এলে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ টাই হয়ে যায়। অবিচ্ছিন্ন থাকে অ্যারন জোন্স (৩৬*) আর নিতিশ কুমারের (১৪) চতুর্থ উইকেটে ৩৫ বলে ৪৮ রানের জুটি। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

মোহাম্মদ আমিরের করা সুপার ওভারে অ্যারন জোন্স আর হারমিত সিংয়ের ব্যাটে যুক্তরাষ্ট্র তোলে ১ উইকেটে ১৮ রান। সেই ওভারে তিনটি ওয়াইড দেন আমির। বাবর আজমকে এসময় বিড়বিড় করে কিছু বলতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের ব্যাটাররা মাঠে নামতেও বেশ দেরি করেছে। মাঠে এসময় অপেক্ষা করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটাররা। শেষ পর্যন্ত মাঠে নামেন ফখর জামান আর ইফতেখার আহমেদ। বোলিংয়ের দায়িত্বে সৌরভ নেত্রাবকার। প্রথম বলে রান না পেলেও পরেরটি সীমানাছাড়া করেন ইফতেখার। পরের বলটি ওয়াইড।

তৃতীয় বৈধ বলে ইফতিখার ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান। পরের বলে আবার ওয়াইড। চতুর্থ বৈধ বলে লেগ বাই থেকে বাউন্ডারি। পঞ্চম বলে আসে ২ রান। শেষ বলে ৭ রান দরকার পড়লেও শাদাব খান নিতে পারেন স্রেফ ১ রান। মোট ১৩ রান তুলতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। ৬ রানের অবিশ্বাস্য জয় তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। দুই ম্যাচে শতভাগ জয়ে তাদের পয়েন্ট হলো ৪। শেষ আটের লড়াইয়ে তারা সবার আগে চলে গেল।

এর আগে ডালাসে বৃহস্পতিবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকে্টে ১৫৯ রান তোলে পাকিস্তান। শুরু থেকেই তারা যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের তোপের মুখে পড়েছিল। দ্বিতীয় ওভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান (৯)। অপর ওপনার অধিনায়ক বাবর আজম ধীরগতিতে ব্যাট করতে থাকেন। পরবর্তী ব্যাটারদের মাঝে উসমান খান (৩), ফখর জামান (১১) দ্রুত আউট হয়ে যান। বল হাতে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন নোশতুশ কেনিজিগে। মিডল অর্ডারে অল-রাউন্ডার শাদাব খান খেলেন ২৫ বলে ১ চার ৩ ছক্কায় ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস।

তবে পারেননি আজম খান। কেনিজিগের তৃতীয় শিকার হয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন। বাবর যতটা আশা দেখা দেখিছিলেন, ততটা পূরণ করতে পারেননি। ৪৩ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৪৪ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে তিনি জসদীপ সিংয়ের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। শেষদিকে ইফতেখার আহমেদ ১৪ বলে করেন ১৮ রান। এছাড়া শাহিন শাহ আফ্রিদি ১৬ বলে ২৩* রান তুলে দলের স্কোর ১৫৯ রান পর্যন্ত টেনে নেন। ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন কেনিজিগে। দুটি নিয়েছেন সৌরভ।

মন্তব্য করুন: