বিশ্বকাপের সেরা বোলিং আক্রমণ কি বাংলাদেশেরই?
১৮ জুন ২০২৪
এবারের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে চলছে বোলারদের জয় জয়কার। প্রত্যেক ম্যাচেই বোলারদের অবদানে পাল্টে যাচ্ছে ম্যাচের চিত্র। প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে রাখার পাশাপাশি ছোট লক্ষ্য তাড়াতেও ব্যাটারদের ঘাম ছোটাচ্ছেন তারা। এই যেমন এক বোলিং ইউনিটের নৈপুণ্যেই সুপার এইটের টিকিট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। ফলে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে আসরের সেরা বোলিং আক্রমণ বাংলাদেশের কি না? পরিসংখ্যান মতে আসলেই তাই।
বিশ্বকাপের সুপার এইট নিশ্চিত করা আট দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের তালিকার দুই নম্বরে আছে বাংলাদেশ। তবে পুরো টুর্নামেন্টের হিসেবে তিনে। তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেনদের নিয়ে গড়া টাইগার বোলিং আক্রমণের এখন পর্যন্ত শিকার ৩৩ উইকেট। এর মধ্যে ৩০টিই নিয়েছেন এই চার বোলার।
অন্যদিকে ৩৫ উইকেট নিয়ে এই তালিকার সবার ওপরে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের তিন মূল বোলার – আলজারি জোসেফ, আকিল হোসেন ও গুদাকেশ মোটির মোট শিকার ২৫টি। এছাড়া যৌথভাবে তালিকার তিনে থাকা অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা গ্রুপ পর্বে নিয়েছেন ৩০টি করে উইকেট।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ মূলত নির্ভর ছিল তাসকিন, তানজিম, মুস্তাফিজ ও রিশাদের ওপর। বৈচিত্রপূর্ণ এই বোলিংয়ে চার ম্যাচে মাঠে নেমে দলের তিন জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন তারা। পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে হোক কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট শিকার, সবদিক দিয়েই বেশ এগিয়ে এই চার বোলার।
এই তালিকায় বেশ এগিয়ে তানজিম। ৮ গড় এবং ওভার প্রতি ৪ দশমিক ৮০ রান দিয়ে ৯ উইকেট নিয়ে উইকেট শিকারির তালিকার দুইয়ে আছেন ডানহাতি এই পেসার। ৭ দশমিক ৭১ গড় এবং ৩ দশমিক ৩৭ ইকোনমিতে মুস্তাফিজের শিকার ৭ উইকেট। সমান উইকেট নিয়েছেন তাসকিন ও রিশাদও।
সুপার এইটের টিকিট নিশ্চিত করার ম্যাচে ১০৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরেও বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ২১ রানে। তানজিমের আগুন ঝরানো বোলিংয়ে শুরুতেই দিশেহারা হয়ে পড়ে নেপাল ব্যাটারা। টানা ৪ ওভারের স্পেলে ৭ রানে ৪ উইকেট তুলে নেন তরুণ এই পেসার। এরপর বাকি কাজটুকু সারেন মুস্তাফিজ। ডেথ ওভারে বাঁহাতি এই পেসারের ভেল্কিতে ৮৫ রানেই গুটিয়ে যায় নেপাল। ৪ ওভারে কাটার মাস্টার ৭ রানের খরচায় তুলে নেন ৩ উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও দারুণ উজ্জ্বল ছিলেন তানজিম। পাওয়ারপ্লেতে ৩ উইকেট শিকার করে ভেঙে দেন প্রোটিয়া টপ-অর্ডার। প্রতি ম্যাচে উইকেট শিকার করা তাসকিনও ছিলেন দুর্দান্ত। তিনি শিকার করেন ২টি। তবে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হারতে হয় ৪ রানে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হন রিশাদ। লঙ্কান ইনিংসের ১৫তম ওভারে ডানহাতি এই লেগ স্পিনারে জোড়া আঘাতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ১৮তম ওভারে হাইনরিখ ক্লাসেনকে ফিরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় সংগ্রহের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান তিনি। পরের ম্যাচে জয়ের দারুণ অবস্থানে থাকা নেদারল্যান্ডসের ১৫তম ওভারে জোড়া উইকেট শিকার করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। এরপর নিজের শেষ দুই ওভারে মুস্তাফিজ ৪ রান দিয়ে নেন এক উইকেট। বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ২৫ রানে।
ব্যাটারদের ব্যর্থতার এক বিশ্বকাপে বল হাতে প্রতিনিয়ত জ্বলে ওঠা বোলারদের সামনে সুযোগ আছে বাংলাদেশকে সেমি-ফাইনালে তোলার। সেক্ষেত্রে সহযোগিতা লাগবে নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাসের টপ-অর্ডারেরও।
মন্তব্য করুন: