রেকর্ডের মালা গেঁথে শেষ অ্যান্ডারসনের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার
১২ জুলাই ২০২৪
লর্ডসেই শুরু, লর্ডসেই শেষ। মাঝে কেটে গেছে ২১টি বসন্ত। ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকের সময় কে-ই বা ভেবেছিল একটা সময় জেমস অ্যান্ডারসনই হবেন টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেসারদের একজন? ১৮৮ টেস্ট আর ৭০৪ উইকেট শিকার করে ক্রিকেটের রাজকীয় ফরম্যাট থেকে ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার বিদায় নিয়েছেন টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় আর পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়ে।
শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিনের শুরুটা হয় দুই দলের ক্রিকেটাররা অ্যান্ডারসনকে গার্ড অব অনার জানানোর মাধ্যমে। জয় দিয়ে এই কিংবদন্তিকে বিদায় জানাতে আগের দিনই মঞ্চ প্রস্তুত করে রেখেছিল ইংলিশ পেসাররা।
জশুয়া ডা সিলভাকে ক্যারিয়ারের শেষ শিকারে পরিণত করে দিনের প্রথম আঘাতটা হানেন অ্যান্ডারসন। আগের দিন ক্যারিবিয়ান দ্বিতীয় ইনিংসেও উইকেট শিকারের শুরুটা করেছিলেন তিনি। দারুণ এক ইনসুইং ডেলিভারিতে মিডল স্ট্যাম্প ভাঙেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েইটের। এরপর দিনের শেষ ভাগে তুলে নেন অ্যালিক অ্যাথানেজের উইকেট।
বল হাতে ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে ১৬ ওভারে ৭ মেডেনে ৩২ রান খরচায় অ্যান্ডারসন তুলে নেন ৩ উইকেট। আর প্রথম ইনিংসে নেন ১ উইকেট।
২০০৩ সালের ২৩ মে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনে উইকেটের খাতা খোলেন ওপেনার মার্ক ভারমিউলেনকে বোল্ড করে। আর ২০২৪ সালের ১২ জুলাই ডি সিলভাকে কট বিহান্ড করে ৭০৪টি উইকেট নিয়ে ২১ বছর ১ মাস ২১ দিন পর সেই খাতা বন্ধ করলেন অ্যান্ডারসন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৯ দেশের ৪১৬ জন ভিন্ন খেলোয়াড়ের বিপক্ষে মাঠে নামেন অ্যান্ডারসন। সবচেয়ে বেশি ৩৯টি করে ম্যাচ খেলেছেন অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে। সবচেয়ে বেশি ১৪৯ উইকেট নিয়েছেন ভারতের বিপক্ষে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার উইকেট ১১৭টি।
টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮৮ ম্যাচে মাঠে নামা অ্যান্ডারসন বোলিং করেন ৩৫০ ইনিংসে। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন ৩২ বার। আর ম্যাচে ১০ উইকেট তিনবার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নেন ইনিংস সেরা ৪২ রানে ৭ উইকেট।
ক্যারিয়ারের ৭০৪ উইকেটের মধ্যে ৪৩৮ উইকেটই তিনি নেন নিজ দেশ ইংল্যান্ডে। সবচেয়ে বেশি ১২৩ উইকেট নেন লর্ডসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৮ উইকেট অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে।
টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের দিক দিয়ে অ্যান্ডারসনের উপরে আছেন কেবল মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮০০) ও শেন ওয়ার্ন (৭০৮)। শুধু তাই নয়, একমাত্র পেসার হিসেবে টেস্টে ৭০০ উইকেট নেওয়ার মাইলফলকও এই ইংলিশ ক্রিকেটারের। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৪০ হাজার ৩৭ বল করে গড়েছেন প্রথম পেসার হিসেবে ৪০ হাজার বল করার কীর্তিও।
মন্তব্য করুন: