পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস
২৫ আগস্ট ২০২৪
ব্যাটারদের দৃঢ়তায় চতুর্থ দিন পর্যন্ত রাওয়ালপিন্ডি টেস্টকে ড্রয়ের পথে রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে পঞ্চম দিন সেই মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন বোলাররা। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে কেবল ১৪৬ রানেই গুটিয়ে গেছে পাকিস্তান। ৩০ রানের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো টেস্টে হারাল বাংলাদেশ।
এই জয়ের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্টের ১২টিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ। একমাত্র ড্রটি আসে ২০১৫ সালে খুলনাতে।
রোববার শেষ দিনে পেসারদের দাপটের পর সাকিব ও মিরাজের ঘূর্ণিতে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। তবে মোহাম্মদ রিজওয়ানের পাল্টা আক্রমণের ফিফটিতে লিড পায় স্বাগতিকরা। এই উইকেটকিপার-ব্যাটার আউট হতেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া কেবল সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় নাজমুল হোসেন শান্তর দলের জন্য।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬ ওভার ৩ বলে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন জাকির হাসান (১৫*) ও সাদমান ইসলাম (৯*)।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সৌদ শাকিল (১৪১) ও রিজওয়ানের (১৭১) জোড়া শতকে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। জবাবে শুরুতে দুই উইকেট হারালেও বাংলাদেশের হাল ধরেন সাদমান ও মুমিনুল হক (৫০)। তৃতীয় উইকেটে বাঁহাতি এই দুই ব্যাটারের ৯৪ রানের জুটিতে শুরু ধাক্কা সামাল দেয় টাইগাররা। এরপর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি গড়ে শতকের দিকে এগুতে থাকেন সাদমান। তবে ৯৩ রানে বাঁহাতি এই ওপেনারকে সাজঘরে ফেরান মোহাম্মদ আলী।
ব্যাট হাতে সুবিধা করতে না পারা সাকিবও ফেরেন দ্রুত। এরপর লিটন দাস ও মিরাজকে নিয়ে দুটি শতরানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন মুশফিক। ষষ্ঠ উইকেটে লিটনের (৫৬) সঙ্গে ১১৪ রানের জুটির পর সপ্তম উইকেটে মিরাজের সঙ্গে গড়েন রেকর্ড জুটি।
তবে ক্যারিয়ারের চতুর্থ দ্বিশতক থেকে ৯ রান দূরে থাকতে অভিজ্ঞ এই ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ১৯৬ রানের জুটিটি। ম্যাচসেরা মুশফিক থামেন ৩৪১ বলে ২২ চার ও এক ছক্কায় ১৯১ রানে। শেষ পর্যন্ত মিরাজের ৭৭ রানের সুবাদে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থামে ৫৬৫ রানে।
১১৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু থেকেই বোলারদের চাপে নাকাল হতে থাকে পাকিস্তান ব্যাটাররা। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল রিজওয়ানই। তিনি করেন ৫১ রান। বাংলাদেশের হয়ে ৪ টি উইকেট নেন মিরাজ, সাকিবের শিকার ৩টি। শরিফুল, হাসান ও নাহিদের শিকার একটি করে উইকেট।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক এই জয়টিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি উৎসর্গ করেন অধিনায়ক শান্ত।
এর আগে পাকিস্তানের মাটিতে ২০০৩ সালের মুলতান টেস্টে জয়ের খুব কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে আসতে হয় বাংলাদেশকে। ইনজামাম-উল-হকের সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটের জয় নিয়ে মান বাঁচায় স্বাগতিকরা।
দেশের বাইরে এটি বাংলাদেশের সপ্তম টেস্ট জয়। এর আগে সবশেষ ২০২২ সালে ইবাদত হোসেনের পেস তোপে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতেছিল টাইগাররা।
মন্তব্য করুন: