যে কারণে সিমন্সকে কোচ হিসেবে বেছে নিয়েছে বিসিবি
১৫ অক্টোবর ২০২৪
চান্ডিক হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেওয়ার দিনই নতুন প্রধান কোচের নাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত টাইগারদের দায়িত্ব সামলাবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ক্রিকেটার ফিল সিমন্স। ক্যারিবিয়ানদের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো এই কোচকে সম্ভাব্য বিকল্পদের মধ্যে সেরা মনে হওয়ায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন ফারুক। সেখানেই জাতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে সিমন্সের কথা জানান তিনি।
প্রায় সাত বছর আগে বাংলাদেশের কোচ হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন সিমন্স। ২০১৭ সালে হাথুরুসিংহে প্রথম দফায় দলের দায়িত্ব ছাড়ার পর বিসিবিতে প্রেজেন্টেশন দিয়ে যান এই ক্যারিবিয়ান। তখন দায়িত্ব না পেলেও এবার হাথুরুসিংহের জায়গাটা পাচ্ছেন তিনি।
আপাতত আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্তই শান্ত-লিটনদের কোচ হিসেবে থাকবেন সিমন্স। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দায়িত্ব নিতে বুধবার ৬১ বছর বয়সী এই কোচের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বিভিন্ন আসরের কারণে বর্তমানে দীর্ঘ মেয়াদে ভালো মানের বিদেশি কোচ পাওয়া বেশ কঠিন কাজ বলে জানান ফারুক। তবে দায়িত্ব নেওয়ার দু’মাসের মধ্যে সিমন্সের মতো কোচ পেয়ে স্বস্তিতে আছেন বোর্ড সভাপতি।
“তিন-চারজন কোচের সঙ্গে কথা বলেছি, তার মধ্যে যাকে সেরা মনে হয়েছে… অনেক সময় হয় কী, আমি যেটা মনে করি, যখন আপনি কোচ হিসেবে সুপারস্টার, তখন কতটা মনোযোগ থাকে কাজে… তার চেয়ে বরং যারা সত্যিই পরিশ্রমী… তাকে (সিমন্স) আমি দেখেছি, কাজের ধরন… যখন জিম্বাবুয়ে খেলতে এসেছে। ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেছি, কখনও আলোচনা করেছি যে, কীভাবে সে চিন্তা করে, কীভাবে অনুপ্রাণিত করে (দলকে)। এসব দেখে আমার ভালো লেগেছে।”
১৯৮৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ২৬ টেস্ট ও ১৪৩ ওয়ানডে খেলেছেন সিমন্স। ওপেনিংসহ বিভিন্ন পজিশনে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি করতেন মিডিয়াম পেসও। ওয়ানডেতে বল হাতে আছে তার দারুণ এক কীর্তিও।
১৯৯২ সালে সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ ওভার বোলিং করে ৮ মেডেনসহ ৩ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছিলেন সিমন্স। ওয়ানডেতে ১০ ওভার বোলিং করে সবচেয়ে কম রান দেওয়ার বিশ্বরেকর্ডের দখল এখনও তারই আছে।
২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ের কোচ হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন সিমন্স। এরপর ২০০৭ সালে দায়িত্ব নেন আয়ারল্যান্ডের। এই দায়িত্বে ছিলেন ২০১৫ সাল পর্যন্ত। তার অধীনে দুর্দান্ত সাফল্য লাভ করে আইরিশরা। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর পাশাপাশি ২০১৫ আসরে হারায় তার দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
সে বছরই আইরিশদের দায়িত্ব ছেড়ে কোচ হন ক্যারিবিয়ানদের। পরের বছর তার কোচিংয়ে প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এই দায়িত্ব শেষে ২০১৭ সালে যোগ দেন আফগানিস্তান দলে । সেখান থেকে ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফায় আবারও ফেরেন ক্যারিবিয়ানদের কোচিং করাতে। ২০২২ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের ভরাডুবির পর শেষ হয় এই অধ্যায়। সবশেষ দায়িত্ব পালন করেন পাপুয়া নিউ গিনির হেড কোচ হিসেবে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে কোচ কিংবা পরামর্শকের ভূমিকায় ছিলেন সিমন্স।
মন্তব্য করুন: