আইপিএল ফাইনালে কোটি কোটি রুপি
২৭ মে ২০২৩
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গেছে আইপিএল। সেটি মাঠের ক্রিকেটে যেমন, তেমনি অর্থের ঝনঝনানিতেও। প্রাইজমানিতেও বাকি ক্রিকেটীয় টুর্নামেন্টগুলো ছাড়িয়ে গেছে আইপিএল। তা এবারের আসরের প্রাইজমানি কেমন?
২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা আইপিএল শুধুমাত্র ক্রিকেটের ধারণাই বদলে দেয়নি পুরুস্কারের অর্থের ক্ষেত্রেও এনেছে বড় পরিবর্তন।
প্রথম দুই মৌসুমে বিজয়ী দল পেয়েছিল ৪.৮ কোটি রুপি। রানার-আপ দল ২.৪ কোটি রুপি। সে সময়ে কোনো ক্রিকেট ইভেন্টের জন্য সর্বোচ্চ পুরস্কারের অর্থ ছিল এটি। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এই ষোড়শ মৌসুমে এসেও আইপিএলের প্রাইজমানি ক্রিকেটীয় ইভেন্টে সর্বোচ্চ।
শুরুর মৌসুম থেকে গেল মৌসুমে এসে পুরস্কার মূল্য প্রায় ৪ গুন বেড়েছে। গত আসরেই চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটানস পেয়েছিল ২০ কোটি রুপি। রানার-আপ রাজস্থান রয়্যালস ১৩ কোটি রুপি। এছাড়া খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য ছিল আরও অনেক পুরস্কার।
এবারের মৌসুমে শুধু দলের জন্য মোট পুরস্কারের পরিমাণ ৪৬.৫ কোটি রুপি। চ্যাম্পিয়ন ও রানার-আপ মিলিয়ে ৩৩ কোটি রুপি। অর্থাৎ, গুজরাট টাইটানস এবং চেন্নাই সুপার কিংসের মধ্যে ফাইনালের বিজয়ী দল পাবে ২০ কোটি রুপি। পরাজিত দল ১৩ কোটি রুপি। আর তৃতীয় স্থানে থাকা দল ৭ কোটি রুপি এবং চতুর্থ দলটি ৬.৫ কোটি রুপি।
তবে আইপিএলকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্যক্তিগত পুরস্কারের সংখ্যা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটার তো অরেঞ্জ ক্যাপ পাচ্ছেনই; সঙ্গে প্রাইজমানি ১৫ লাখ রুপি। প্রায় নিশ্চিতভাবেই এই মৌসুমের অরেঞ্জ ক্যাপ গুজরাটের শুভমান গিলের। যদিও ফাইনাল এখনো বাকি কিন্তু তাঁর ৮৫১ রান টপকে যাওয়াটা অন্য কারও জন্য অসম্ভব। ফাইনালের দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে গিলের কাছাকাছি রান চেন্নাইয়ের ডেভন কনওয়ের। গিল যদি ফাইনালে কোনো রান না করেও আউট হন তবুও তাঁর রান টপকে যেতে কনওয়েকে করতে হবে ২২৭ রান। যা অসম্ভব।
সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী পার্পল ক্যাপ পাওয়া ক্রিকেটারও পাবেন ১৫ লাখ রুপি। যে দৌড়ে গুজরাটের তিন সতীর্থ। মোহাম্মদ শামি, রশিদ খান এবং মোহিত শর্মা। তিন জনের উইকেটের সংখ্যা যথাক্রমে - ২৮, ২৭ এবং ২৪। তাই ফাইনালের ভালো পারফরম্যান্সে পার্পল ক্যাপ জিততে পারেন এই তিনজনের যে কেউ।
টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় পাবেন ২০ লাখ রুপি। এই উদীয়মান খেলোয়াড় হিসেবে কাদের বিবেচনায় নেয়া হবে? প্রথমত, ক্রিকেটারের জন্ম পহেলা এপ্রিল ১৯৯৭-এর পর হতে হবে। দ্বিতীয়ত, এই মৌসুমের আগে ২৫টির বেশি আইপিএল ম্যাচ খেলা যাবে না। তৃতীয়ত, জাতীয় দলের হয়ে পাঁচটির বেশি টেস্ট এবং ২০টির বেশি ওয়ানডে খেলার রেকর্ড থাকা যাবে না। চুতর্থত, এর আগে যাঁরা এই পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁরা আর বিবেচিত হবেন না।
এসব মিলিয়ে রাজস্থান রয়্যালসের যশস্বী জয়সওয়াল, কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিংকু সিং এবং স্পিন বোলার সুয়াশ শর্মা সেরা উদীয়মানের খেতাব জয়ের দৌড়ে থাকবেন। তাঁরা তিনজনই এই মৌসুমে নিজেরদের প্রতিভা দিয়ে প্রমাণ করেছেন।
মৌসুমের সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড় পাবেন ১২ লাখ রুপি। এখানে অবশ্য হিসেবটা একেবারে কাগজ-কলমে। মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার (এমভিপি) চার্টে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যাঁর, পুরস্কারটিও তাঁর। এই চার্টে একটি বিশেষ রেটিং সিস্টেম রয়েছে। যার অধীনে ক্রিকেটাররা ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ের জন্য পয়েন্ট অর্জন করেন। ফাইনালের আগ পর্যন্ত ৩২০.৫ পয়েন্ট নিয়ে রাজস্থানের জয়সওয়াল এ তালিকার শীর্ষে। প্রায় সমান পয়েন্ট গুজরাটের রশিদ খানের; ভগ্নাংশ ব্যবধানে কেবল পিছিয়ে। আর তৃতীয়তে ৩০১ পয়েন্ট নিয়ে গুজরাটের পেসার শামি।
ফাইনালে তো জয়সওয়াল খেলবেন না। রশিদ-শামি খেলবেন। পয়েন্ট বাড়িয়ে নেবার সুযোগ তাঁদের সামনে। যেহেতু ভগ্নাংশে পিছিয়ে দ্বিতীয়তে রশিদ, তাই আইপিএলের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটি হয়তো জিতবেন তিনিই।
অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে আছে পাওয়ার প্লেয়ার অব দ্য সিজন, সুপার স্ট্রাইকার অব দ্য সিজন এবং গেম চেঞ্জার অব দ্য সিজন। এসবের আর্থিক পুরস্কার ১৫ লাখ এবং ১২ লাখ রুপি।
আইপিএলে এত এত অর্থ। দলীয় ও ব্যক্তিগত। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। আগামী মৌসুম থেকে প্রাইজমানি আরো বাড়ানোর ঘোষণা এরইমধ্যে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। কতটা বাড়বে? সময়ই বলবে তা।
মন্তব্য করুন: