আইপিএলের নতুন ৫
২৮ মে ২০২৩
আইপিএলে প্রতি আসরেই আলো ছড়ান অনেক নতুন ক্রিকেটার। বড় মঞ্চে চেনান নিজেদের। আইপিএলের পারফরম্যান্স তাঁদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পথ তৈরী করে দেয়। অথবা সেখানে ভালো করার প্রেরণা যোগায়।
এবারের আইপিএলও ব্যতিক্রম নয়। তা অমন নজরকাড়া পাঁচ তরুণ কারা? কেমন পারফম্যান্স তাঁদের?
যশস্বী জয়সওয়াল
২০২০ অনূর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে তিনি প্রতিভার পরিচয় দিয়েছিলেন। এরপর খুব একটা আলোচনায় ছিলেন না। কিন্তু নিজেকে আবার পরিচয় করিয়ে দিলেন এবারের আইপিএলে। নিজেকে যেন আবিস্কার করালেন নতুনভাবে।
চলতি মৌসুমে নিজের ব্যাটিং প্রদর্শনে আইপিএলে ঝড় তুলেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ১৪ ম্যাচে করেছেন ৬২৫ রান। গড় ৪৮.০৭। স্ট্রাইক রেট ১৬৩.৬১। আছে ১টি সেঞ্চুরি এবং ৫টি হাফ-সেঞ্চুরি। অবিশ্বাস্য স্ট্রাইক রেটের সঙ্গে ধারাবাহিকতার যুগলবন্দীতে জয়সওয়ালই কি এ আইপিএলের সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করা তরুণ?
আইপিএলের একাধিক রেকর্ডও ভেঙেছেন জয়সওয়াল। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ১৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। যে ইনিংসটি টেনে নেন সেঞ্চুরি পর্যন্ত। আইপিএলের এক মৌসুমে জাতীয় দলে না খেলা ব্যাটারের সর্বোচ্চ রানের ১৫ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙেছেন। আছেন টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়ের দৌড়ে।
রিংকু সিং
ম্যাচের শেষ পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কায় দলকে জেতানো। অবিশ্বাস্য বললেও তো সবটা বলা হয় না। ওই ইনিংসেই আলোচনায় আসেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিংকু সিং। ২০১৮ সাল থেকে আইপিএলে থাকলেও সুযোগ তেমন পান নি। যখন পেয়েছেন, গড়পড়তার চেয়ে ভালো মনে হয়নি। এবার নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন সব দিক দিয়েই।
রিংকুর কীর্তি কেবল ওই পাঁচ ছক্কায় শেষ না। বরং কেকেআর মিডল অর্ডারে ভরসা হয়ে ছিলেন আসরজুড়ে। ১৪ ম্যাচে ৪৭৪ রান করেছেন। গড় ৫৯.২৫। স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৫২। দুর্দান্ত এই ব্যাটিং এমনকি ভারতীয় দলের দরজাটাও খুলে দিতে পারে রিংকুর জন্য।
তিলক ভার্মা
গত মৌসুমের আইপিএল তিলক ভার্মার ব্যাটিং গড় ছিল ৩৬.০৯; স্ট্রাইক রেট ১৩১.০২। খুব খারাপ না হলেও খুব ভাল কি বলা যাবে? অন্তত আইপিএল মানদণ্ডে?
মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের এই ব্যাটসম্যানের এই মৌসুমের ব্যাটিং গড় ৪৫.৬৭। স্ট্রাইক রেট ১৫৮.৩৮। উন্নতি তো বটেই। ইনজুরি জর্জর মৌসুমে ৯ ম্যাচে ২৭৪ রানও মন্দ কী!
বেশ কিছু দারুণ ইনিংস আছে ভার্মার। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসটি যেমন। এমনকি যে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে মুম্বাই, সে ম্যাচেও ১৪ বলে ৪৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছিলেন এই বাঁহাতি।
মুম্বাই ফাইনালে যেতে পারেনি কিন্তু ভার্মাকে নতুন করে আবিষ্কার করেছে। পরিচিত করিয়েছে তাঁর ব্যাটিং প্রতিভার সাথে।
মাথিশা পাথিরানা
তাঁকে ডাকা হয় 'বেবি মালিঙ্গা'। কারণ বোলিং একশন অনেকটাই শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গার মতো। এবারের আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে দারুণ করছেন এই মাথিশা পাথিরানা।
গেল মৌসুমে খেলেন মাত্র দুই ম্যাচ। নেন দুই উইকেট। কিন্তু এ মৌসুমে সুপার কিংস অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বিশ্বস্ত বোলার হয়ে ওঠেন তিনি। বিশেষত ডেথ ওভারে।
পাথিরানা এই মৌসুমে ১০ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ১৬-২০ ওভারের মধ্যেই ১৪ শিকার। ডেথ ওভারে এবারের আইপিএলের যে কোনও বোলারের চেয়ে বেশি উইকেট তাঁর। এছাড়া এই পেসারের ইকোনমিও চমকে দেয়ার মত। শেষের দিকে এত বোলিং করেও ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন মাত্র ৭.৫৬।
নূর আহমেদ
এমনিতেই লেগ স্পিনার রশিদ খানকে সামলাতে খাবি খেতে হয় ব্যাটসম্যানদের। এরই মধ্যে আরেক নতুন আফগান স্পিনার আইপিএল মাতাচ্ছেন গুজরাট টাইটানসের হয়ে। নূর আহমেদ।
রশিদ খানের ছায়ায় নতুন এই আবিষ্কার নূর আহমেদও লেগ স্পিনার। তবে তিনি বাঁহাতি। অর্থাৎ, চায়নাম্যান। এই মৌসুমে ১২ ম্যাচে নূর নিয়েছেন ১৪ উইকেট। ইকোনমি ৭.৯৬।
নূর অ্যাটাকিং বোলার। ব্রেক থ্রু এনে দেন প্রায়শ। বাঁহাতি এই আফগান লেগস্পিনারকে এই আইপিএল চেনালো নতুন করে।
মন্তব্য করুন: