ফাইনালে কে জিতবে, কে হারবে!
২৮ মে ২০২৩
আইপিএলের ষোড়শ আসরের ফাইনাল। শিরোপার লড়াইয়ে হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটানস বনাম মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। পান্ডিয়ায় টানা দ্বিতীয় শিরোপা নাকি ধোনির পঞ্চম? ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল।
তবে মাঠের লড়াইয়ে দলের হয়ে কোন ক্রিকেটার প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে? টস কি আলাদা গুরুত্ব পাবে?
গুজরাটের তুরুপের তাস ওপেনার শুভমান গিল। শেষ চার ম্যাচে তিনটি সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটার টুর্নামেন্টের শেষের দিকে এসে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছেন। ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন চেন্নাইয়ের জন্যও। বাউন্ডারি বৃষ্টিতে প্রতিপক্ষ বোলারদের করেছেন নাস্তানাবুদ। ১৬ ম্যাচ খেলে ৬০.৭৯ গড়ে ৮৫১ রান করেছেন। অরেঞ্জ ক্যাপ এখন তাঁরই দখলে। গুজরাটের জন্য বড় রান তাড়া করা অথবা বড় রান সংগ্রহে গিল দলের অন্যতম ভরসা।
এছাড়া গুজরাট কাপ্তান হার্দিক পান্ডিয়ার অলরাউন্ড নৈপুণ্য হতে পারে সুপার কিংসদের ভয়ের কারণ। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহাও।
গুজরাটের বোলিং বিভাগ নিঃস্বন্দেহে টুর্নামেন্টে সেরা। পার্পল ক্যাপের তালিকায় শীর্ষ তিনের তিনজনই গুজরাটের বোলার। ২৮ উইকেট নিয়ে মোহাম্মদ শামি প্রথম স্থানে। ২৭ উইকেট নিয়ে রশিদ খান দ্বিতীয়তে। এবং ২৪ উইকেট নিয়ে মোহিত শর্মা তৃতীয় স্থানে আছেন। নতুন আবিস্কার আফগান তরুণ লেগ স্পিনার নূর আহমেদও ভালো বল করছেন। এমন বোলিং লাইনআপ যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই ভয়ের কারণ হবে।
চেন্নাইয়ের ভয়ের কারণ শুধুমাত্র ব্যাটার গিলই নয়; বরং ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া থেকে বোলার শামি, রশিদরাও চেন্নাইয়ের পঞ্চম শিরোপা জয়ের বাঁধা হতে পারেন।
ডেভন কনওয়ে এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ওপেনিং জুটি চেন্নাইয়ের অন্যতম বড় শক্তি। প্রতিপক্ষ গুজরাটের জন্যও ভয়ের কারণ। কনওয়ে ১৪ ইনিংসে ৫২.০৮ গড়ে ৬২৫ রান করেছেন; সঙ্গী গায়কওয়াড ৪৩.৩৮ গড়ে ৫৬৪ রান। দলের হয়ে মিডল অর্ডার ব্যাটার শিবম দুবেও ভালো রান করেছেন এ মৌসুমে। সাথে আছে ক্যাপ্টেন কুল ধোনির অসাধারণ ফর্ম।
চেন্নাইয়ের বোলিংয়ে আছেন তুষার দেশপান্ডে। ১৫ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে দলের অন্যতম বোলার হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। আছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা এবং তরুণ বোলার মাথিশা পাথিরানা। ডেথ ওভারে বল করার জন্য প্রসিদ্ধ হয়েছেন পাথিরানা। এই মৌসুমে তাঁর উইকেট শিকারের বেশিরভাগ এসেছে ডেথ ওভারেই। ফলে, ঝোড়ো রান সংগ্রহে গুজরাটের বাঁধা হতে পারেন পাথিরানা। পেসার দীপক চাহারও গুজরাটের ভয়ের কারণ হতে পারেন।
ফাইনালে টস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের পিচে ব্যাটারদের আধিপত্য বরাবরই বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে প্রথমে ব্যাটিং করা ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে। আগে ব্যাটিং করে ১৮০র ওপরে রান করলে সেটি প্রতিপক্ষের জন্য তাড়া করা কঠিন হবে।
নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে খেলা ২৬টি ম্যাচে আগে ব্যাট করে জয় এসেছে ১৩টি ম্যাচে। পরে ব্যাট করে জয় ১৩ টিতে। তবে আইপিএল ২০২৩এ প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের গড় রান ১৮৭.২। এমন রানের আশেপাশে ফাইনালে টার্গেট আসলে সেটি প্রতিপক্ষের জন্য চাপের হবে।
দু-দলেরই বোলিং ভালো। যে দল পিচের সুবিধা আগে নিতে পারবে তাঁরাই কিছুটা এগিয়ে থাকবে। ফাইনাল ম্যাচের বাড়তি চাপ ব্যাটারদের পরের ইনিংসে আলাদা চাপে রাখবে। ফলে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করাটাই জয়ের জন্য উপযুক্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
মন্তব্য করুন: