১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশের জয়

৪ ডিসেম্বর ২০২৪

১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশের জয়

জাকের আলীর ব্যাটে বড় লিড নিয়ে জয়ের ভিতটা আগেই পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর বল হাতে বাকি কাজটুকু সারলেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ নাহিদ রানার পেসত্রয়ী। আর এতেই ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। ১০১ রানের জয়ে সমতায় সিরিজ শেষ করেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।

জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বাংলাদেশের দেওয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে এই মাঠের সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কিন্তু মঙ্গলবার ম্যাচের চতুর্থ দিনই তাইজুলের ঘূর্ণিতে কাবু হয়ে ১৮৫ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেন তাইজুল।

এর আগে দিনের প্রথম সেশনে জাকেরের ৯১ রানের আক্রমণাত্মক এক ইনিংসের সুবাদে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৮ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। দুই ইনিংস মিলিয়ে উইকেট এবং ব্যাট হাতে অবদান রাখায় ম্যাচসেরা হন তাইজুল। আর ১১ উইকেট নিয়ে জেইডেন সিলসের সঙ্গে সিরিজ সেরার পুরস্কার ভাগাভাগি করেন তাসকিন।

রান তাড়ায় মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির আগে মিকাইল লুইসকে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন তাইজুল। বিরতির পর কেসি কার্টিকে কট বিহাইন্ড ধরেন তাসকিন। তৃতীয় উইকেটে কাভেম হজকে নিয়ে জুটি গড়ে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা চালান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েইট। কিন্তু এই জুটিকে ৪৫ রানের বেশি করতে দেননি তাইজুল। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েইটকে (৪৩) ফিরিয়ে টাইগারদের স্বস্তি দেন। পরের ওভারে আলিক অ্যাথানেজকে বোল্ড করেন তিনি।

অপর প্রান্তে বাংলাদেশের জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন হজ। তবে ফিফটি হাঁকানোর পর ৫৫ রান করা এই ব্যাটারকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল। এরপর বাংলাদেশের জয় কেবল সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। পরের ৪২ রান যোগ করতেই ক্যারিবিয়ানদের শেষ উইকেট তুলে নেন বোলাররা, জাস্টিন গ্রিভসের স্টাম্প ভেঙে যার শুরুটা করেন তাসকিন।

এরপর জশুয়া দা সিলভাকে তুলে নিয়ে ক্যারিয়ারে ১৫তম বারের মতো ইনিংসে উইকেট শিকার করেন তাইজুল। দেশের বাইরে এটি তার চতুর্থ উইকেট শিকার। ৪৯তম ওভারে আলজারি জোসেফ কেমার রোচকে ফিরিয়ে জোড়া আঘাত হানেন হাসান। পরের ওভারে দারুণ এক ইয়োর্কার ডেলিভারিতে শামার জোসেফের মিডল স্টাম্প ভেঙে ক্যারিবিয়ানদের গুটিয়ে দেন নাহিদ।

২২ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলারের তাণ্ডবে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হওয়ার পরেও নাহিদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৮ রানের লিড পায় মিরাজের দল। প্রথমবারের মতো ইনিংসে উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের গুটিয়ে দেন ১৪৬ রানে।

আগামী রোববার সেন্ট কিটসে শুরু হবে দুদলের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।

এর আগে ২০০৯ সালে গ্রেনাডায় খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট জিতেছিল টাইগাররা। সেবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল সাকিব আল হাসানের দল।

মন্তব্য করুন: