আইপিএল ফাইনালের সেরা ৫ পারফরমার
২৯ মে ২০২৩
এবারের আইপিএল শেষ প্রায়। বাকি কেবল ফাইনাল। সেখানে কি দেখা যাবে অসাধারণ কোনো পারফরম্যান্স?
আগের ১৫ ফাইনালে অমন দুর্দান্ত অনেক পারফরম্যান্স আছে। ব্যাটে; বলে। আইপিএলের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের অমন সেরা পাঁচে চোখ ফেরানো যাক।
২০১২ : মানবিন্দর বিসলার ম্যাচ জয়ী ইনিংস
সেবার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংসের প্রতিপক্ষ গৌতম গম্ভীরের কলকাতা নাইট রাইডার্স। মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাইয়ের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের কারণে খেলার কৌশলে পরিবর্তন আনে কলকাতা।
বিদেশী খেলোয়াড় ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে বসিয়ে আরেকজন বোলার নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেকেআর। একাদশে আসেন ব্রেট লি। আর ম্যাককালামের জায়গায় ব্যাটসমান হিসেবে মানবিন্দর বিসলা।
অসি ফাস্ট বোলার ব্রেট লি ভালো করতে পারেননি। ৪২ রান দিয়ে পাননি কোনো উইকেট। কিন্তু বিসলা বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে এক রকম পুষিয়ে দেন তা।
চেন্নাই ১৯০ রানের টার্গেট দেয় কলকাতার সামনে। সেই সময়ের সেরা টি-টোয়েন্টি বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও ডোয়াইন ব্রাভোদের বোলিং লাইনের বিপরীতে এত রান তাড়া সহজ ছিল না। সেটি সম্ভব করেছেন বিসলা। ৪৮ বলে আটটি চার ও পাঁচ ছক্কায় খেলেন ৮৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। প্রথমবারের মতো আইপিএল শিরোপা জেতে শাহরুখ খানের দল। আর অনবদ্য ব্যাটিং ইনিংসের জন্য ম্যান অব দ্য ম্যাচ বিসলা।
২০১৩ : কাইরন পোলার্ডের বিস্ফোরণ
এই ফাইনালের মঞ্চ কলকাতার ইডেন গার্ডেন। তৈরি শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চ। মুখোমুখি মুম্বাই ইন্ডিয়ানস এবং আগের আসরের রানারআপ চেন্নাই সুপার কিংস।
মুম্বাই তখনও কোনো আইপিএল শিরোপা জেতেনি। প্রথমে ব্যাট করতে নামা মুম্বাইকে চাপে রেখেছিল ধোনির চেন্নাই। দলের কোনো ব্যাটসম্যানই সেভাবে রান করতে পারছিলেন না। কিন্তু সেদিন একটি ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইরন পোলার্ড।
ডেথ ওভারে ঝোড়ো ব্যাটিং করেন পোলার্ড। ৩২ বলে করেন ৬০ রান। যেখানে দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০-র কাছাকাছি, সেখানে পোলার্ড ১৮৭ রেটে রান করেছিলেন। তাঁর ব্যাটিংয়ে ভর করে চেন্নাইকে ১৪৯ রানের টার্গেট দেয় মুম্বাই। কিন্তু ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় ধোনির দল। ২৩ রানের জয় মুম্বাইয়ের। প্রথমবারের মত শিরোপাও জেতে মুম্বাই। আর ম্যাচসেরা? কাইরন পোলার্ড!
২০০৮ : ইউসুফ পাঠানের ম্যাচ জয়ী অলরাউন্ডার পারফরমেন্স
আইপিএলের প্রথম আসরের ফাইনাল। চেন্নাই সুপার কিংসের মুখোমুখি রাজস্থান রয়্যালস। দুদলের সামনেই ইতিহাস তৈরীর সাক্ষী।
এই ম্যাচে ব্যাটে-বলে দারুণ পারফরম্যান্স ইউসুফ পাঠানের।
প্রথম ব্যাট করতে এসে ১৬৩ রানে থামে চেন্নাইয়ের ইনিংস। ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন ইউসুফ পাঠান।
রান তাড়া করতে নেমে ৪২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পরে রাজস্থান। কিন্তু দিনটি ছিল ইউসুফ পাঠানের। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অর্ধশতক করেন সেদিন তিনি। ৩৯ বলে ৫৬ রানের একটি ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন। হন ম্যাচসেরা। আর প্রথম মৌসুমেই বিজয়ী হয়ে আইপিএল ইতিহাসে জায়গা করে নেয় রাজস্থান।
২০১১ : ম্যাচের প্রথম ওভারেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সাফল্য
২০১১ সালের আইপিএল মৌসুম ছিল ইউনিভার্স বস খ্যাত ক্রিস গেইলের। তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নাস্তানাবুদ প্রায় প্রতিটি দলের বোলার। সেই মৌসুমে শুধু গেইলের ব্যাটিংয়ে ভর করে ফাইনালে পৌঁছায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ফলে গেইলের ওপরে অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল আরসিবি।
ফাইনালে চেন্নাইয়ের মুখোমুখি টিম আরসিবি। টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথম ইনিংসে বিশাল ২০৬ রানের টার্গেট দেয় ধোনির দল। তবে গেইলের মত খেলোয়াড় থাকার কারণে এই টার্গেটও অসম্ভব মনে হচ্ছিল না।
কিন্তু কৌশলি ধোনির আগেই পরিকল্পনা ছিল গেইলকে আটকানোর। প্রথম ওভারেই বল তুলে দেন অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের হাতে। ওভারের চতুর্থ বলেই আসে সাফল্য। আউট হন গেইল। আর এতেই জয়ের রাস্তা সহজ হয়ে যায় চেন্নাইয়ের জন্য। ৫৮ রানের বিশাল জয়ে শিরোপা জেতে সুপার কিংস। ৪ ওভারে ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নিয়ে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন অশ্বিন।
২০০৯ : চার উইকেট নিয়েও পরাজিত দলে অনিল কুম্বলে
২০০৯ মৌসুমের আইপিএল ফাইনাল। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরেই ফাইনালে বেঙ্গালুরু। প্রতিপক্ষ ডেকান চার্জার্স।
দারুণ খেলে ফাইনালে আরসিবি। সেই মৌসুমে দলকে জেতানোর সব চেস্টা করেছিলেন অভিজ্ঞ স্পিনার ও দলের অধিনায়ক অনিল কুম্বলে।
ফাইনালে চার ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন কুম্বলে। তাঁর অসাধারণ বোলিংয়ে মাত্র ১৪৩ রানে থামে চার্জার্স। এমন কম টার্গেটে জয় একরকম নিশ্চিত ভেবেছিলো বেঙ্গালুরু। কিন্তু মাত্র ১৩৭ রানে থামে বেঙ্গালুরুর ইনিংস। ৬ রানে হারে তাঁরা। শিরোপা অধরাই থেকে যায় চ্যালেঞ্জার্সদের। তবে অসাধারণ বোলিংয়ের জন্য ম্যাচসেরা হন কুম্বলে।
মন্তব্য করুন: