উইন্ডিজের দাপটে ওয়ানডে সিরিজ হারল বাংলাদেশ
১১ ডিসেম্বর ২০২৪
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তানজিম হাসান সাকিবের অষ্টম উইকেটের রেকর্ড জুটিতে কিছুটা লড়াই করার মতো সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেন্ট কিটসের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সেটি হয়ে যায় একদমই মামুলি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেটের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
মঙ্গলবার সেন্ট কিটসে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় মেহেদী হাসান মিরাজের দল। জবাবে ব্র্যান্ডন কিংয়ের ঝড়ো ফিফটিতে ৭৯ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ক্যারিবিয়ানরা।
রান তাড়ায় শতরানের উদ্বোধনী জুটিতে স্বাগতিকদের জয়ের পথ সহজ করে দেন কিং ও এভিন লুইস। আগ্রাসী মেজাজের ব্যাটার লুইস তার স্বভাববিরোধী ইনিংস খেলেও শুরু থেকেই বোলারদের আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন কিং। ৫২ বলে ডানহাতি এই ব্যাটার তুলে নেন ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি। তবে ফিফটির পথে থাকা লুইসের (৪৯) ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ১০৯ রানের জুটি ভেঙে টাইগারদের কিছুটা স্বস্তি দেন রিশাদ হোসেন। অবশ্য আরও আগে এই জুটি ভাঙার এসেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু মিরাজের করা ১৪তম ওভারে ২৮ রানে থাকা লুইসের ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন সৌম্য সরকার। সে সময় ক্যারিবিয়ানদের সংগ্রহ ছিল ৭৫ রান।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর কেসি কার্টিকে নিয়ে সফরকারীদের ওপর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন কিং। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৮ বলে এই জুটি যোগ করে আরও ৬৬ রান। দারুণ এক ইয়র্কার ডেলিভারিতে ৭৬ বলে ৮২ রান করা কিংয়ের স্টাম্প ভেঙে এই জুটি থামান নাহিদ রানা।
এরপর পার্ট-টাইম স্পিনে আফিফ হোসেন কার্টিকে (৪৫) ফেরালেও অধিনায়ক শাই হোপ (১৭*) ও শারফেইন রাদারফোর্ডের (২৪*) ব্যাটে জয় পেতে অসুবিধা হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু তরুণ এই ওপেনারকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়ে সৌম্য সরকার (২) ফিরলে ভাঙে ২৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর ক্রিজে এসে বেশ অস্বস্তিতে থাকা লিটন দাস ব্যাটে-বলে টাইমিং না মেলাতে পেরে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৯ বলে ৪ রান করে। পরের ওভারে বোল্ড হন আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো অধিনায়ক মিরাজ (১)। তিনটি উইকেটই নেন জেইডেন সিলস।
তবে অপর প্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও স্বাচ্ছন্দেই রান তুলতে থাকেন তানজিদ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দুই ছক্কায় তোলেন ১৮ রান। তবে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকা বাঁহাতি এই ব্যাটার। ফিফটির দেখা পাননি। প্রথম ওয়ানডের মতো প্রায় একই ভাবে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ৩৩ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৬ রান করে বেশ হতাশ হয়েই মাঠ ছাড়েন এই তরুণ।
৬৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর আফিফ ও মাহমুদউল্লাহর জুটিতে বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আফিফ (২৪) ফিরলে এই জুটি থেকে ৩৬ রানের বেশি আসেনি। পরের ১৫ রান যোগ করতে জাকের আলী (৩) ও রিশাদ হোসেনের (০) উইকেট হারিয়ে দেড়শ’র আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে টাইগাররা।
সেখান থেকে অষ্টম উইকেটে ৯২ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে দলের সংগ্রহ দুইশ পার করান মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম। ভেঙে দেন দেশের হয়ে এই উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুন ও সাইফউদ্দিনের ৮৪ রানের জুটির আগের রেকর্ড।
৪৫ রান করা তানজিম ফিরলে ভাঙে ১০৬ বলের জুটিটি। টানা তিন ওয়ানডেতে ফিফটি তুলে নেওয়া মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ৬২ রান করে। শেষ উইকেটে শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ ১৮ রান যোগ করার পর ৪৫ ওভার ৫ বলে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
একই মাঠে আগামী বৃহস্পতিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য করুন: