হোয়াইটওয়াশড হয়ে বোলিংয়ে সমস্যা দেখছেন মিরাজ
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলীর ফিফটি। ছিল দুটি শতরানের জুটি। সব মিলিয়ে বড় সংগ্রহই পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বোলারদের রঙহীন দিনে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে গেছে সফরকারীরা। আর হোয়াইটওয়াশড হয়ে নিজেদের ভুলগুলো ধরতে পেরেছেন অধিনায়ক মিরাজ।
বৃহস্পতিবার সেন্ট কিটসে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩২১ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে অভিষিক্ত আমির অ্যান্টনি জাঙ্গুর ঝড়ো শতকে ২৫ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ক্যারিবিয়ানরা। এই মাঠের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড এটি।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেটের জয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা ১১ ম্যাচ পর জয়ের দেখা পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের ম্যাচে ৭ উইকেটের দাপুটে জয়ে ১০ বছর পর টাইগারদের বিপক্ষে সিরিজ নিজেদের করে নেয়। আর শেষ ম্যাচের জয়ে ১০ বছর পর বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করল তারা।
প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটাররা খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও এদিন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে উন্নতির ছাপ ছিল যথেষ্ট। সৌম্য, মিরাজ, রিয়াদ ও জাকের সবাই ফিফটি তুলে নেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ওপেনিংয়ে নেমে ৭৩ বলে ৭৩ রান করেন সৌম্য। চারে নামা মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৭৩ বলে ৭৭ রান। সিরিজে তৃতীয় ফিফটিতে ৬৩ বলে ৮৪ রানে রিয়াদ এবং ৫৭ বলে ৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন জাকের ।
৯ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে ১২৭ বলে ১৩৬ রান যোগ করেন সৌম্য ও মিরাজ। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে ১১৭ বলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ১৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন রিয়াদ ও জাকের।
রান তাড়ায় নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে শুরুটা দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারাত শুরু করে তারা। ধারহীন বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে স্বাগতিকদের দাপুটে জয় এনে দেন কেসি কার্টি-জাঙ্গুরা।
৩১ রানে তৃতীয় উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে ৮৬ রানে। এরপর অভিষিক্ত জাঙ্গুকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ১১৫ বলে ১৩২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন ৯৫ রান করা কার্টি। দ্রুত ষষ্ঠ উইকেট হারালেও সপ্তম উইকেটে গুদাকেশ মোটিকে নিয়ে ৫৩ বলে ৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জয় এনে দেন জাঙ্গু। অভিষিক্ত সেঞ্চুরিতে ৮৩ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বড় পুঁজি নিয়েও হারের পেছনে মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট না নিতে পারাকে দায় দিয়ে মিরাজ বলেন, “আমাদের বোলারদের জন্য খুব কঠিন দিন ছিল। ব্যাটাররা ভালো করেছে। আমরা ভালো জুটি পেয়েছি। সৌম্য, জাকের ও মাহমুদউল্লাহ – সবাই ভালো করেছে। বোলিংয়ে আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। মাঝের ওভারে উইকেট নিতে পারিনি। এটি আমাদের জন্য সমস্যার ছিল।”
আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে এটিই ছিল বাংলাদেশের শেষ ওয়ানডে সিরিজ। গত মাসে আফগানিস্তানের কাছে তারা ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে। সব মিলিয়ে সবশেষ ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে হারের পর উন্নতির জায়গাগুলো স্পষ্ট হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
“এই সিরিজের পরই আমাদের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আমরা জানি, আমাদের কোথায় উন্নতি প্রয়োজন। আশা করছি, সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে আমরা বুঝতে পারব কীভাবে সেসব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।”
মন্তব্য করুন: