পাওয়েলকে থামিয়ে বাংলাদেশকে জেতালেন হাসান
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
শামীম হোসেন পাটোয়ারির শেষ দিকের ঝড়ে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে শেখ মাহেদীর ঘূর্ণি যাদুতে শুরুতেই দিশেহারা হয়ে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে রভম্যান পাওয়েলের ঝড়ে জয় প্রায় মুঠোয় ভরে ফেলেছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু শেষ ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককে তুলে নিয়ে টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ রানের জয় এনে দিয়েছেন হাসান মাহমুদ।
শেষ ওভারে ক্যারিবিয়ানদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১০ রান, বাংলাদেশের ২ উইকেট। ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে ৩৫ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬০ করা পাওয়েলকে কট বিহাইন্ড করিয়ে টাইগারদের স্বস্তি এনে দেন হাসান। এরপর পঞ্চম বলে আলজারি জোসেফের মিডল স্টাম্প ভেঙে ডানহাতি এই পেসার ক্যারিবিয়ানদের গুটিয়ে দেন।
বাংলাদেশ সময় সোমবার সেন্ট ভিনসেন্টে সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৪৭ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম সাত ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে গিয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। তবে অষ্টম উইকেটে পাওয়েল- রোমারিও শেফার্ডের ৩৩ বলে ৬৭ রানের জুটিতে জয়ের পথে ফেরে তারা। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের ইনিংস থামে ১৪০ রানে।
হতাশার ওয়ানডে সিরিজের শেষে ৬ বছর পর ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টিতে জয়ের আরেক নায়ক মাহেদী। ৪ ওভারের অফ-স্পিনে একাই গুঁড়িয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ ও মিডল-অর্ডার। ১৩ রানে শিকার করেন ৪ উইকেট। এর আগে ব্যাট হাতে দলের খাতায় যোগ করেন ২৪ বলে ২৬ রান।
ব্র্যান্ডন কিংকে দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে ক্যারিবিয়ান ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। এরপরের গল্পটা শুধুই মাহেদীর। বল হাতে নিয়েই শুরুতে তুলে নেন নিকোলাস পুরানকে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফেরান ১২ বলে ২০ রান করে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা জনসন চার্লসকে। পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে আবারও জোড়া আঘাত হানেন মাহেদী। কট বিহাইন্ড করে তুলে নেন আন্দ্রে ফ্লেচার ও রোস্টন চেজকে।
৩৮ রানে ৫ উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানদের হাল ধরার চেষ্টায় থাকা পাওয়েলকে সঙ্গ দিতে পারেননি গুদাকেশ মোটি ও আকিল হোসেনের কেউই। ৩ রানের ব্যবধানে এই দুই ব্যাটারকে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন।
৬১ রানে ৭ উইকেট তুলে নেওয়ার পর মনে হচ্ছিল সহজেই ম্যাচ জিতে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু পাওয়েল ও শেফার্ডের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে তার বিপরীতটা হতে যাচ্ছিল। ১৪ থেকে ১৬তম ওভারে ৫০ রান তুলে ম্যাচ নিজেদের দিকে টেনে নেন এই দুই ব্যাটার। তবে ১৮তম ওভারে এই জুটি ভেঙে সে পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান তাসকিন আহমেদ। ১৯তম ওভারে ৮ রান দেন তানজিম। আর শেষ ওভারে কাজটি সারেন হাসান।
এর আগে ব্যাটিংয়ে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তৃতীয় ওভারেই তানজিদ হাসান তামিম (৬) ও লিটনকে (০) তুলে নিয়ে দলকে চাপে ফেলেন আকিল। ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকা লিটন ফেরেন প্রথম বলেই। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ফেরেন আফিফ হোসেনও (৮)।
চতুর্থ উইকেটে জাকের আলীকে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন সৌম্য সরকার। লং অনে পাওয়েলের দুর্দান্ত ক্যাচে ২৭ রান করা জাকের ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এরপরই কমে আসে রানের গতিও। ১৫তম ওভার শেষে ৪৩ রান করা সৌম্য যখন ফেরেন তখন দলের রান ছিল ৯৬। এরপরই ক্রিজে এসে ঝড় তোলেন শামীম। ৩ ছক্কা ও এক চারে ১৩ বলে ২৭ রান তুলে দলকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
একই মাঠে বাংলাদেশ সময় আগামী বুধবার সকাল ৬টায় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে দু’দল।
[বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সংযোজন করা হয়েছে]
মন্তব্য করুন: