স্মিথের দাবি, ‘১০০ ভাগ আউট’ ছিলেন কোহলি

৩ জানুয়ারি ২০২৫

স্মিথের দাবি, ‘১০০ ভাগ আউট’ ছিলেন কোহলি

থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারও বিতর্কের জন্ম হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-ভারতের চলমান টেস্ট সিরিজে। মেলবোর্ন টেস্টে যশস্বী জয়সোয়ালকে আউটের সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়েছিল আলোচনা। এবার সিডনি টেস্টে হলো বিরাট কোহলিকে আউট না দেওয়া নিয়ে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথের দাবি, শতভাগ আউট ছিলেন ভারতের তারকা ব্যাটার।

শুক্রবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের অষ্টম ওভারের ঘটনা এটি। আগের বলেই জয়সোয়ালকে সাজঘরে ফেরান স্কট বোল্যান্ড। ১৭ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বেশ চাপের মধ্যে ছিল ভারত। ক্রিজে আসা মাত্রই কোহলির প্রথম বলটি ব্যাটের কানায় লেগে চলে গেল দ্বিতীয় স্লিপের দিকে।

সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা স্মিথ ক্যাচটি নিতে গিয়ে ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়েন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা অবস্থায় বলটি উপরের দিকে ছুঁড়ে দেন। এরপর তা তালুবন্দী করেন মার্নাস লাবুশেন। কোহলিকে প্রথম বলে ফেরানোর উল্লাসে মেতে ওঠে পুরো অস্ট্রেলিয়া দল।

ক্রিজে এসে প্রথম বলেই স্লিপে ক্যাচ তোলেন কোহলিকিন্তু ক্যাচটি নিয়ে মাঠের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত ও মাইকেল গফের সন্দেহ থাকায় তারা তা থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠিয়ে দেন। সেখানে দায়িত্বে থাকা আম্পায়ার জোয়েল উইলসন কয়েকবার রিপ্লে দেখে জানান, স্মিথের হাত থেকে বল ওপরে ওঠার আগেই মাটি স্পর্শ করেছে। এরপর কোহলিকে নটআউট ঘোষণা করা হয়।

মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতিতে ফক্স স্পোর্টসকে স্মিথ জানান, ক্যাচের বৈধতা নিয়ে তার মনের মধ্যে কোনো সংশয় নেই।

“১০০ ভাগ (ক্যাচ ছিল)… অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই ১০০ ভাগ (আউট)। তবে আম্পায়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। আমরাও সামনে তাকাচ্ছি।”

দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সতীর্থের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে এই ম্যাচ দিয়ে টেস্ট অভিষেক হওয়া বোউ ওয়েবস্টারও। সে সময় তিনি তৃতীয় স্লিপে দাঁড়িয়েছিলেন।

“আমি এটা ভালোভাবে দেখেছি। আমার মনে হয়, আমি যেখানে ছিলাম সে জায়গা থেকে এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে তা আউট ছিল। অবশ্যই আপনি যখন রিপ্লেতে এটি ধীরগতিতে দেখবেন, তখন মনে হবে কিছু ঘাস বল ছুঁয়েছিল।”

কোহলির ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টায় স্মিথথার্ড আম্পায়ারের নটআউট সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিষয়ে নিজের মতামত জানান টানা পাঁচবার আইসিসিরি সেরা আম্পায়ারের খেতাব পাওয়া সাইমন টফেল। চ্যানেল সেভেনে সাবেক এই আম্পায়ার বলেন, “টিভি আম্পায়ার এখানে দুটি ব্যাপার দেখছেন। একটি হলো, ফিল্ডারের আঙুল বলের নিচে ছিল। এখানে তিনি সন্তুষ্ট।”

“তবে তিনি (আম্পায়ার) বিশ্বাস করেন, যে ছবিগুলো তিনি দেখেছেন, তাতে তার কাছে পরিষ্কার মনে হয়েছে যে, বল মাটি স্পর্শ করেছে। এখানেই মূল চ্যালেঞ্জ, স্লো-মো দিয়ে ধীরগতিতে দেখলে। সত্যিকারের গতিতে দেখলে মনে হয়, এটা ঠিক আছে (ক্যাচ হয়েছে)। তবে তৃতীয় আম্পায়ার এখানে কী করেছেন, তা নিশ্চিতভাবেই বুঝতে পারছি আমি। তিনি বিশ্বাস করেন, বল মাটিতে স্পর্শ করতে দেখেছেন তিনি এবং সেভাবেই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

“এমনিতেই ন্যায্য ক্যাচের ক্ষেত্রে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, বলের নিচে আঙুল থাকলেই সেটাকে যথেষ্ট বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে এখানে সমস্যা হলো, এখন আর মাঠের আম্পায়ারদের সফট সিগন্যাল নেওয়ার নিয়ম নেই। এখন ব্যাপারটি পুরোপুরি টেলিভিশন আম্পায়ারের ওপর।

অবশ্য এদিনও নিজের ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন কোহলি। ৬৯ বল খেলে ১৭ রান করে আবারও অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। বোল্যান্ডের বলেই এবার তৃতীয় স্লিপে তার ক্যাচ নেন ওয়েবস্টার।

মন্তব্য করুন: