ফারুকের বোর্ডে ‘স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না’ ফাহিম

৫ জানুয়ারি ২০২৫

ফারুকের বোর্ডে ‘স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না’ ফাহিম

সরকার পরিবর্তনের পর ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেটের দায়িত্ব নিয়েছেন চার মাসেরও বেশি সময় আগে। তার সঙ্গে একই সময়ে বিসিবির পরিচালক হিসেবে আসা নাজমুল আবেদীন ফাহিম অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। এছাড়াও বিসিবি সভাপতির বিরুদ্ধে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার আন্দোলনের আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২১ আগস্ট বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব পান ফারুক।

বোর্ডে পরিবর্তনের পর দেশের ক্রিকেটে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। উল্টো নানা অব্যস্থাপনার মাঝে গত ৩০ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে বিপিএলের একাদশ আসর। এর মাঝেই দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে, ফাহিমের সঙ্গে ফারুকের বাজে ব্যবহারের বিষয়টি।

এই নিয়ে রোববার যমুনা টিভিতে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে ফাহিম জানান, বোর্ড সভাপতির একটি মন্তব্যে তিনি মর্মাহত হয়েছেন।

"ওরকম একটা মন্তব্য আমি নির্দিষ্ট করে বলতে চাই না মন্তব্যটা কি ছিল। তবে সেটা আমাকে খুবই মর্মাহত করেছে। সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে এই মুহূর্তে ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হয়তো সেভাবে আমাকে তার আস্থাভাজন হিসেবে নিচ্ছেন না। আমি জানি না প্রেসিডেন্ট কেনো একটা কমেন্ট করেছেন আমার ব্যাপারে। যেটা শুনে আমি ভীষণ অবাকও হয়েছিলাম। এবং স্বাভাবিকভাবেই আমি মোটেও আশা করিনি সেরকম একটা মন্তব্য।

বিসিবির কাজে কোনো অগ্রগতি না আসার কারণগুলোও তুলে ধরেন দেশের ক্রিকেটের অভিজ্ঞ কোচ ফাহিম। বোর্ডের হয়ে কোনো ভূমিকা রাখতে না পারায় নিজের হতাশাও প্রকাশ করেন।

আমরা এখনও আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলোকে দাঁড় করাতে পারিনি। তাতে যা হয়েছেসেই দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার সুযোগটা এখনও হয়নি। তাতে (বোর্ড) যতটা গতিশীল হতে পারত, সেই গতিশীলতা আসেনি।

আমার যেই ভূমিকা রাখার সুযোগ ছিল, সেই ভূমিকা রাখার সুযোগগুলো এই মুহূর্তে সেভাবে আমি পাচ্ছি না। যে সব বিষয়গুলো আমার জানা প্রয়োজন, যে সব বিষয়ে আমার অবদান রাখার সুযোগ আছে, সে সব বিষয় যে করতে পারছি তা না।

এসব কারণে বোর্ডে থাকার চেয়ে বাইরের থাকাকেই সমীচীন বলে মনে করেন ফাহিম।

আমার অনেক সময় মনে হয় যে, আমি বোর্ডে না থাকলে বোধ হয় ভালো। কারণ বোর্ডের বাইরে থেকে আমি যে ধরণের ভূমিকা রাখতে পারি, আলাপ-আলোচনা করতে পারি, সেটা বোর্ডের মধ্যে থেকে আমার পক্ষে করা সম্ভব না। আমি যদি বোর্ডে থাকি আমাকে কাজ করতে হবে। যদি কাজ করতে না পারি তাহলে ভালো হবে বাইরে থাকা। বাইরে থাকলে আমি হয়তো কী হতে পারে, না পারে, কী হওয়া উচিত ছিল এগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। তাই বোর্ডে থাকাটা আমার জন্য খুব একটা জরুরি না।

এক অর্থে তাই, যদি কাজ করার সুযোগ না থাকেনিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার না থাকে, কারণ আমার মনে হয় খুব জরুরি স্বাধীনভাবে কাজ করাটা। নিজের চিন্তাভাবনাটাকে মেলে ধরার সুযোগ থাকাটা।

ফাহিমের এই সাক্ষাৎকার প্রচারের পর একই দিন সিলেটে বিসিবি সভাপতি ফারুক দাবি করেন, কাজের চাপের মধ্যে দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।

(ফাহিম) পদত্যাগ করতে চায়নি। বলেছে কাজ করা কঠিন। পদত্যাগ করতে চায় এমন কিছু শুনিনি। যাই হোক, ফাহিম ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যমুনা টিভির সঙ্গে আমি কথা বলেছি। ফাহিম ভাই আমার সঙ্গে ছিল।

নতুন বোর্ড বলতে তো ফাহিম ভাই আর আমাকেই বোঝায়। বাকি সবাই তো পুরনো। যখন কাজের মাত্রা বেশি লোক সংখ্যা কম তখন অনেক দিকে নজর দিতে হয়। তখন ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। জিনিস থেকেই উনি হয়তো চিন্তা করেছেন কাজ ঠিকমতো করতে পারছেন না।

মন্তব্য করুন: