টেস্ট ক্রিকেটে দুই-স্তরের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ক্লাইভ লয়েড 

৭ জানুয়ারি ২০২৫

টেস্ট ক্রিকেটে দুই-স্তরের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ক্লাইভ লয়েড 

টেস্ট ক্রিকেটে দুই-স্তরের কাঠামো প্রস্তাব নিয়ে নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্লাইভ লয়েড। প্রথম দুই বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়কের মতে, সাদা পোশাকের ক্রিকেটে দুর্বল দলগুলোর জন্য শীর্ষ দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ নিশ্চিত করাই বেশি জরুরি। 

অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড সোমবার এক প্রতিবেদনে জানায়, চলতি মাসে ক্রিকেট বিশ্বে ‘তিন মোড়ল হিসেবে পরিচিত ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডগুলো টেস্ট ক্রিকেটকে দুই বিভাগে বিভক্ত করার বিষয়ে আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহর সঙ্গে আলোচনায় বসবে। প্রস্তাবটি কার্যকর হলে ওই তিন দেশ একে অপরের বিপক্ষে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সোনালী যুগের অধিনায়ক লয়েড প্রস্তাবটির কঠোর সমালোচনা করে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যেসব দেশ অনেক পরিশ্রম করে টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জন করেছে, তাদের জন্য এটি হবে অত্যন্ত হতাশাজনক। এখন তারা নিম্ন স্তরে নিজেদের মধ্যে খেলবে। ভালো দলগুলোর বিপক্ষে না খেললে কীভাবে তারা উন্নতি করবে?”

বিশ্বব্যাপী টি-টুয়েন্টি লিগের জনপ্রিয়তার কারণে টেস্ট ক্রিকেট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তবে এখনও টেস্ট ফরম্যাট উত্তেজনাপূর্ণ নাটকীয় ম্যাচের উপহার দিচ্ছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যকার বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি এর দারুণ একটি উদাহরণ। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দেখতে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে রেকর্ড সংখ্যক দর্শক মাঠে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন।

টেস্টের দুই-স্তর কাঠামোর বিষয়ে আগে থেকেই কথা বলে আসা ভারতের সাবেক কোচ রবী শাস্ত্রীর মতে, শীর্ষ দলগুলোর মধ্যে বেশি ম্যাচ হলে প্রতিযোগিতার মান বৃদ্ধি পাবে। 

তবে দুই-স্তরের টেস্ট কাঠামো চালু করা হলে তা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের জন্য বেশ ক্ষতিকর হবে বলে সতর্ক করেন ৮০ বছর বয়সী লয়েড। এর ফলে আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ার পাশাপাশি ১৫টি দ্বীপরাষ্ট্র নিয়ে গড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ভেঙে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। 

"আমাদের দ্বীপগুলো দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলেছে। আমরা এটা অনেক বছর ধরে করে আসছি। আমরা বছরের পর বছর অনেক দেশের জন্য অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি করেছি। তাদের উচিত এটার স্বীকৃতি দেওয়া। কিন্তু এখন আমাদের সহায়তা প্রয়োজন, যেটা আমরা পাবো না।

নতুন প্রস্তাবনায় প্রথম স্তরে সাতটি দল থাকতে পারে। এগুলো হলোঅস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জিল্যান্ড, পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় স্তরে থাকা বাকি পাঁচটি দল হলোবাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান আয়ারল্যান্ড।

তবে প্রস্তাবিত কাঠামোয় দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে উন্নীত হওয়া এবং প্রথম স্তর থেকে দ্বিতীয় স্তরে অবনমিত হওয়ার নিয়ম রাখা হবে কিনা তা নিয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।

মন্তব্য করুন: