তামিমের অবসর নিয়ে যা বলছেন সতীর্থরা
১১ জানুয়ারি ২০২৫
জাতীয় দলের হয়ে প্রায় ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন তামিম ইকবাল। দেশসেরা এই ওপেনারের বিদায়ে তাকে শুভেচ্ছা, শুভকামনা ও বিদায় জানিয়েছেন জাতীয় দলে এক সময়ের সতীর্থরা।
শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিজের অফিশিয়াল পেইজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। এরপর থেকেই ফেইসবুক পোস্টে তাকে ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাতে থাকেন তার সদ্য সাবেক সতীর্থরা।
তামিমের অবসর ঘোষণার খানিক পড়েই ফেইসবুক পোস্টে বাঁহাতি এই ব্যাটারের সঙ্গে নিজের স্মৃতিচারণ করেন মুশফিকুর রহিম। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশের জার্সিতে ৩৮৭টি ম্যাচ খেলেন তামিম। এর মধ্যে ৩৪৫টিতেই সতীর্থ হিসেবে পান মুশফিককে।
দীর্ঘ পথচলায় দুজনের ঘনিষ্ঠতা যেমন বেড়েছে, গাঢ় হয়েছে বন্ধুত্বও। আর প্রিয় বন্ধুর বিদায়ে গর্বিত মুশফিক লেখেন, “তোর অবসরে আমি শুধু এটুকুই জানাতে চাই, তোর প্রতিটি অর্জনে আমি কতটা গর্বিত, দোস্ত। তুই বাংলাদেশ ক্রিকেটের অসাধারণ একজন দূত এবং বিশ্বমানের ব্যাটার।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিমের সঙ্গে মোট ৭২ ইনিংসে জুটি বাঁধেন মুশফিক। এর মধ্যে ৫টি শতরানের ও ১৩টি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি আছে। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে মুশফিকের কাছে সবচেয়ে স্মরণীয় ২০১৮ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দশম উইকেটে ১৬ বলে ৩২ রানের জুটিটি।
সেদিন ম্যাচের শুরুতেই আঙুলে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। পরে শেষ উইকেটে মুশফিককে সঙ্গ দিতে ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে ও গ্লাভস কেটে আবারও ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। এরপর এক হাতে ব্যাট করে খেলেন কেবল একটি বল। বাকিটা সময় লঙ্কান বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত তিনি করেন ১৪৪ রান।
“দুবাইয়ে আমাদের জুটির কথা আমি সবসময় মনে রাখব। বিশেষ করে যখন তুই ভাঙা আঙুল নিয়ে ব্যাটিং করলি৷ এটি দেশের জন্য তোর নিবেদন ও খেলাটির প্রতি তোর ভালোবাসায় প্রমাণ দেয়।… অবসরের সিদ্ধান্তে শুভকামনা দোস্ত৷ মাঠে তোকে মিস করব। তবে ক্রিকেটের মাধ্যমে দারুণ একজন বন্ধু পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ।”
মুশফিকের পর ফেইসবুকে পোস্ট দেন তামিমের দীর্ঘদিনের সতীর্থ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানিয়ে অভিজ্ঞ এই ব্যাটার বলেন, “দীর্ঘ ও অসাধারণ ক্যারিয়ারে দারুণ সব অর্জনের জন্য অনেক অভিনন্দন, তামিম। তুমি অনেক কিছু অর্জন করেছ এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক অবদান রেখেছো।… তোমার সঙ্গে খেলা এবং মাঠ ও মাঠের বাইরে হাজারও স্মৃতি খুবই আনন্দময় ছিল। অবসর ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভকামনা। তোমার লেগ্যাসি সবসময় মনে রাখা হবে।”
অবসরের ঘোষণা দেওয়া পোস্টে তামিম জানান, চ্যাম্পিয়ন ট্রফির দলে ফেরার জন্য তাকে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শনিবার দুপুরে তামিমের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাঁহাতি এই ব্যাটার বলেন, “আপনার নেওয়া সিদ্ধান্তকে আমি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। ২০১৬ সালে আবাহনীর হয়ে প্রথমবার আপনার সঙ্গে ড্রেসিং রুম শেয়ার করা থেকে শুরু করে জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলার সুযোগ, আপনার কাছ থেকে শিখেছি অসংখ্য কিছু। আপনার ক্রিকেটীয় মেধা, সহ-খেলোয়াড়দের প্রতি আপনার যত্নশীলতা ও উদারতা আমাকে বারবার মুগ্ধ করেছে।”
“আমি গর্বিত যে এমন এক কিংবদন্তি ব্যাটারের সঙ্গে ড্রেসিং রুম ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি এবং জাতীয় দলে আপনার সঙ্গে খেলতে পেরেছি। দোয়া করি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের সময়গুলো আনন্দময় হোক।”
মন্তব্য করুন: