যেসব কীর্তি গড়ে জাতীয় দলকে বিদায় জানালেন তামিম

১১ জানুয়ারি ২০২৫

যেসব কীর্তি গড়ে জাতীয় দলকে বিদায় জানালেন তামিম

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর আগে জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন প্রায় দেড় বছর। তবে এ সময়ের মধ্যেও দুই-একটি ছাড়া দেশের ক্রিকেটের অনেক কীর্তিতেই তামিম ইকবালকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি কেউ। আর তাই বিদায় বেলাতেও ব্যাটিংয়ের অনেক কীর্তিতে সবার ওপরে থেকেই জাতীয় দলের জার্সি একেবারেই তুলে রাখলেন তিনি।

দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সফল ব্যাটার হিসেবে পরিচিত তামিম দীর্ঘদিন ছিলেন তিন ফরম্যাট মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান-সংগ্রাহক। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ক্যারিয়ার শেষে বাঁহাতি এই ব্যাটারের রান ১৫ হাজার ২৪৯, যার মধ্যে বিশ্ব একাদশের হয়ে করেন ৫৭ রান।

তবে সম্প্রতি এই তালিকায় তাকে ছাড়িয়ে গেছেন মুশফিকুর রহিম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডানহাতি এই ব্যাটারের রান এখন ১৫ হাজার ৩০০।

টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি – তিন ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটার তামিম। ২০১৬ সালের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে অনন্য এই কীর্তি গড়েন তিনি।

তিন ফরম্যাট মিলিয়ে সেঞ্চুরি হাঁকানোর দিক দিয়ে তামিমের ধারের কাছেও নেই কেউ। তিনি ক্যারিয়ার শেষ করেছেন ২৫টি সেঞ্চুরি নিয়ে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০টি শতক মুশফিকের।

ওয়ানডেতে ৮ হাজার রান করা একমাত্র বাংলাদেশি হলেন তামিম। ২৪৩ ম্যাচে ৩৬ দশমিক ৬৫ গড়ে ক্যারিয়ার শেষে করেছেন ৮ হাজার ৩৫৭ রান নিয়ে। দুইয়ে থাকা মুশফিকের নামের পাশে ৭ হাজার ৭৯৩ রান।

ওয়ানডেতে ছক্কার সেঞ্চুরি করা দেশের প্রথম ব্যাটারও তামিম। এই ফরম্যাটে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সবশেষ মাঠে নামা এই ব্যাটারের ক্যারিয়ার থেমেছে ১০৩ ছক্কায়। গত বছর ডিসেম্বরে তাকে টপকে ১০৭ ছক্কা নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে এখন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড তামিমের। ২০০৮ সালে ১৯ বছর ২ দিন বয়সে আয়ারল্যন্ডের বিপক্ষে ১২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

লর্ডসে টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকানো একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার তামিমওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে একাধিক দেড়শছোঁয়া ইনিংস খেলা একমাত্র ব্যাটার তামিম। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেশের হয়ে সর্বপ্রথম ১৫০ বা এর বেশি রানের ইনিংস খেলেন তিনি। সেবার বাঁহাতি এই ওপেনার করেছিলেন ১৫৪ রান। প্রায় ১১ বছর দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড ছিল এটি। ২০২০ সালে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ১৫৮ রান করে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙেন তামিম। ১৭৬ রান করে এই রেকর্ডের মালিক এখন লিটন দাস।

টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে ফিফটি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটার তামিম। দেশের ইতিহাসের একমাত্র ব্যাটার হিসেবে লর্ডসে টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তিও তার।

২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০৬ রানের ইনিংস খেলার পথে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তামিম। টেস্ট ইতিহাসে কোনো দলের দ্বিতীয় ইনিংসে এটিই ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।

এতসব রেকর্ডের ভীড়ে বিব্রতকর একটি রেকর্ডেরও শীর্ষে তামিম। প্রায় ১৮ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৩৬ বার রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ৩৩ শূন্য নিয়ে এই তালিকায় তার পরের অবস্থানে আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

তামিমের নেতৃত্বে ৩৭টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জয় এসেছে ২১টিতে, হার ১৪টি। তার অধীনে সাফল্যের হার ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশকে অন্তত ৫ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়কদের মধ্যে সেরা সাফল্যের হার তামিমেরই।

মন্তব্য করুন: