নির্বাচকদের আস্থা হারানোয় বাদ লিটন

১২ জানুয়ারি ২০২৫

নির্বাচকদের আস্থা হারানোয় বাদ লিটন

লম্বা সময় ধরে চলা ‘আউট অফ ফর্ম -এর কারণে শেষ পর্যন্ত জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন লিটন দাস। ডানহাতি এই ব্যাটারকে ছাড়াই আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে শুধু ব্যাটে রান না থাকার কারণেই নয়, নির্বাচকদের আস্থা হারানোয় তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকে ব্যাট হাতে ধুঁকছেন লিটন। শেষ সাত ইনিংসের মধ্যে ছয়বারই দুই অঙ্ক স্পর্শ করার আগেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। এর মধ্যে তিনবার ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। এই ফরম্যাটে সবশেষ ফিফটির দেখা পেয়েছেন ১৩ ম্যাচ আগে, ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে। আর সবশেষ সেঞ্চুরি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

২০২৩ সালের শুরু থেকে ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ৩৩ ইনিংসে ২১ দশমিক ৯০ গড়ে লিটনের রান ৮০৩। ফিফটি মাত্র পাঁচটি। এর মধ্যে শূন্য রানে আউট হয়েছেন আটবার।

রোববার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণার পর মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে লিটনের বাদ পড়া নিয়ে লিপু বলেন, “লিটন আউট অব ফর্ম। একজন ব্যাটার দীর্ঘদিন ধরে এই ফরম্যাটে রানের তীব্র খরায় ভুগছেন। আউটের প্যাটার্ন একইরকম। ক্রিকেটের সাদা বলের ফরম্যাটে পাওয়ারপ্লেতে যে সুবিধা নেওয়া দরকার ক্রিজে টিকে থাকতে পারছে না। পার্টনারের ওপর চাপ বাড়ছে। তিন নম্বর পজিশনে সে এক্সপোজড।

তারপরও অনেক আস্থা রেখেছিলাম। অনেকগুলো ম্যাচেই সাদা বলের ক্রিকেটে সুযোগ দিয়েছি। মাঝখানে শ্রীলঙ্কার সাথে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে রাখিনি দলে। অনেক সময় একজন ব্যাটার ফর্মের বাইরে থাকলেও আস্থার জায়গা থেকে দলে রাখা হয়। আমার মনে হয় এ মুহূর্তে সে এই অবস্থানে নেই।

২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে মাত্র পাঁচবার পঞ্চাশের দেখা পেয়েছেন লিটনচ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ওপেনিং জুটি হিসেবে অনেকটাই নিশ্চিত সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। সে হিসেবে শুরুর একাদশেই লিটনের জায়গা ছিল না বলে জানান প্রধান নির্বাচক।

সৌম্য ও তামিম জুটি হিসেবে ভালো করছে। এই দুজনই সম্ভবত ইনিংস শুরু করবে। তাই প্রথম একাদশে তার (লিটন) জায়গা নেই। তার ক্লাস নিয়ে সন্দেহ নেই। তার মেধা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ফর্মে সংকট দেখা দিলে সেখান থেকে বের করতে যদি কাজ করতে পারি তাহলে তাকে ভালোভাবে বের করে আনতে পারব। আমাদের বিশেষজ্ঞরা কাজ করার সুযোগ পাবে এই সময়ে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে দুবাইয়ে খেলবে বাংলাদেশ। এই মাঠে ভারতের বিপক্ষে ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন লিটন। তবে দল নির্বাচনে নির্বাচকদের কাছে মূল বিবেচনায় ছিল বর্তমান পারফরম্যান্সই। একই সঙ্গে মাথায় ছিল নিউ জিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের ভেন্যু রাওয়ালপিন্ডির উইকেট।

লিটনের অতীত পারফরম্যান্স, ইতিহাস অবশ্যই দেখা হয়। নিকট অতীত বেশি দেখা হয়। উইন্ডিজে আমরা সব ম্যাচেই রান করেছি। দুই ম্যাচে তিনশ পেরিয়েছি। উইকেট খুব ভালো ছিল সেন্ট কিটসে। একটা ব্যাটার যখন সেখানেও সফল হতে না পারে তাহলে তার ওপর আস্থা রাখা কঠিন হয়ে যায়।

একই সঙ্গে আমি ভিন্ন জায়গায় চলে যাবো এখন আমাদের দুটো গুরুত্বপূর্ণ খেলা আছে রাওয়ালপিন্ডিতে। রাওয়ালপিন্ডির ইতিহাস যদি দেখেন খেলব। খুব ভালো ব্যাটিং উইকেট। বিশেষ করে ২০২৩ সালে আপনারা দেখেছেন নিউ জিল্যান্ড ৩৩৬ করেও হেরে গেছে। টপ অর্ডারই রান করেছে। অর্থাৎ ওপর থেকেই রান আসতে হবে। আমাদের তো টপ-অর্ডার নিয়ে ব্যাটিং শঙ্কায় আছিই। এটা অস্বীকার করলে হবে না। তাই নিশ্চিতভাবে একজন আউট অব ফর্ম ব্যাটারকে নেওয়াটা আমরা যৌক্তিক মনে করিনি।

মন্তব্য করুন: