অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড সংগ্রহে চাপা পড়ল শ্রীলঙ্কা

উসমান খাজার দ্বিশতক এবং স্টিভ স্মিথ ও অভিষিক্ত জশ ইংলিসের শতকে আগেই রান পাহাড়ে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর অ্যালেক্স ক্যারির ব্যাটে এশিয়ার মাটিতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ল তারা। প্রায় দুইদিন ফিল্ডিং করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কানদের সামনে অপেক্ষা করছিল সফরকারীদের স্পিন বাধা। ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে শেষ বেলায় ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে থেকে দিনের খেলা শেষ করেছে স্বাগতিকরা।

বৃহস্পতিবার গলে বৃষ্টির কারণে আগে ভাগে দ্বিতীয় দিনের খেলা যখন শেষ হয় তখন শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৪৪ রান। এখনও তারা পিছিয়ে আছে ৬১০ রানে। এর আগে ৬ উইকেটে ৬৫৪ রান নিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া।

এতদিন এশিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল ৬১৭ রানের। ১৯৮০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফয়সালাবাদে এই রান করেছিল তারা। এছাড়া লঙ্কানদের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডও গড়েছে স্মিথের দল। ১৯৯৫ সালে পার্থের ওয়াকায় ৫ উইকেটে ৬১৭ রানে নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করেছিল অস্ট্রেলিয়া।

দলীয় রেকর্ডের দিনে অভিষেক টেস্টে কীর্তি গড়েছেন ইংলিসও। দ্বিতীয় দ্রুততম ব্যাটার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি গড়েন ২৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে তিনি বল খেলেন ৯০টি। এ তালিকায় সবার ওপরে আছেন শিখর ধাওয়ান। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের প্রথম টেস্টে ৮৫ বলে শতক হাঁকান ভারতের এই সাবেক এই ওপেনার।

এছাড়াও ডন ব্র্যাডম্যানের পর দ্বিতীয় অজি হিসেবে বেশি বয়সে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি গড়েন খাজা। ২৩২ রানের ইনিংসটি খেলার সময় তার বয়স ছিল ৩৮ বছর ৪২ দিন। অন্যদিকে গ্লেন ম্যাগ্রা ও ব্রেট লির পর তৃতীয় অস্ট্রেলিয়ান পেসার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন মিচেল স্টার্ক।

শেষ সেশনের অর্ধেকটা সময় বাকি থাকতে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে পাঠান স্মিথ। দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম আঘাত হানেন বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথিউ কুনেমান। এরপর আরেক ওপেনার দিমুথ করুনারত্নেকে (৭) তুলে নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের ৭০০তম শিকারটি ধরেন স্টার্ক। চাপে থাকা লঙ্কান শিবিরে তৃতীয় আঘাত হানেন ন্যাথান লায়ন। অভিজ্ঞ এই অফস্পিনার ফেরান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজকে।

৩০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা দলের হাল ধরার চেষ্টায় আছেন দিনেশ চান্দিমাল (৯*) ও কামিন্দু মেন্ডিস (১৩*)। এই দুই ব্যাটারের দৃঢ়তায় ১৫ ওভার শেষে খেলা বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত আর কোনো উইকেট হারায়নি স্বাগতিকরা।

এর আগে ২ উইকেটে ৩৩০ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করা খাজা ও স্মিথ স্বাচ্ছন্দেই রান তুলতে থাকেন। স্মিথকে ফিরিয়ে তৃতীয় উইকেটে ২৬৬ রানের এই জুটি ভাঙেন প্রভাত জয়াসুরিয়া। ক্যারিয়ারের ৩৫তম শতকে অজি অধিনায়ক ফেরেন ১৪১ রানে।

এরপর ক্রিজে এসে দ্রুত রান তুলতে থাকেন ইংলিস। অপর প্রান্ত ২৯০ বলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দ্বিশতকের দেখা পান খাজা। বাঁহাতি এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে চতুর্থ উইকেটে ১৪৬ রানের জুটিটি। সেঞ্চুরি হাঁকানোর খানিকবাদে ইংলিস ফেরার পর দলকে রেকর্ড সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন ক্যারি। শেষ পর্যন্ত এই উইকেটকিপার-ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ৪৬ রানে।