সাকিব-তামিম-মাশরাফি নয়, বাংলাদেশের সমর্থক হতে আহ্বান তামিমের
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকাদের কথা উঠলে অবধারিতভাবেই সবার আগে উঠে আসবে সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মোর্তজা ও তামিম ইকবালের নাম। মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে এই তিন ক্রিকেটার তৈরি করেছেন লাখো ভক্ত-সমর্থকও। তবে নিজের বিদায়ী বার্তায় সমর্থকদের ব্যক্তির জন্য নয়, দেশের জন্য গলা ফাটানোর আহ্বান জানিয়েছেন তামিম।
শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের বিপিএলের শিরোপা লড়াইয়ে চিটাগং কিংসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় বরিশাল। ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৫৪ রান করে ম্যাচসেরা দলের অধিনায়ক তামিম।
বিপিএলের ফাইনালে গত ১০ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো তামিমকে সম্মাননা জানায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের শুরুতে এই আয়োজনে বাংলাদেশের হয়ে তামিমের তিন সংস্করণের জার্সি একটি সুদৃশ্য ফ্রেমে বাঁধাই করে তার হাতে তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। পরে তাকে দেওয়া হয় একটি ক্রেস্টও।
পরে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে তামিম ফিরে তাকান তার প্রায় দেড় যুগের ক্যারিয়ারে। শোনান ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনের গল্প।
“দারুণ এক ভ্রমণ ছিল আমার জন্য। ১৭ বছর প্রতিনিধিত্ব করেছি আমার দেশকে। শুরু হয়েছিল অনেক ছোট্টবেলায়। আমার চাচা (আকরাম খান) ছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক বাংলাদেশ যখন ট্রফি জয় করে (১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি), তখন দেখেছি গোটা দেশের আনন্দ ছিল ভিন্ন মাত্রার। সেদিনই ঠিক করেছিলাম, ক্রিকেটার হতে চাই।”
“সবসময়ই বলেছি, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমি জাতীয় দলে খেলব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি আমার সঙ্গে নেই। তবে আমি নিশ্চিত, দেশের জন্য যা করেছি, তিনি গর্বিতই হবেন।”
জাতীয় দলকে বিদায় জানালেও ছেলের জন্য এখনও ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান তামিম।
“দারুণ এক ভ্রমণ ছিল। কখনোই এভাবে শেষ হওয়ার কথা ছিল না। দুর্ভাগ্যজনক যে, এটাই হচ্ছে। তবে যতদিন খেলেছি, প্রতিটি মুহূর্ত ভালো লেগেছে। আর যতদিন খেলব, উপভোগ করার চেষ্টা করব। কারণ, আমার ঘরে এখন বড় এক ভক্ত আছে, আমার ছেলে।”
এক পর্যায়ে তামিমের স্ত্রী ও দুই সন্তান তার পাশে গিয়ে দাঁড়ান মঞ্চে। তাদেরকে পাশে নিয়ে দেশের ক্রিকেট সমর্থকদের নিজের শেষ বার্তাটি দেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজারের বেশি রান করা এই ব্যাটার।
"দেখুন, এখানে কোনো তামিমিয়ান, কোনো সাকিবিয়ান বা মাশরাফিয়ান নেই। শুধু একটাই সমর্থনের বিষয় আছে, বাংলাদেশ। এই ব্যাপারগুলো বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ধ্বংস করছে। তাই প্লিজ প্লিজ প্লিজ… এসব বন্ধ করুন। আপনারা আমার, সাকিবের অথবা মাশরাফির সমর্থক হতে পারেন বা অন্য কারও হতে পারেন। কিন্তু আমরা যখন খেলি, বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবেই খেলি। এগুলো বন্ধ করুন, কারণ এসব জিনিস তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস করে।”
“আমার পক্ষ থেকে এটিই শেষ বার্তা। আমরা সবাই বাংলাদেশি। আর কিছু নই। তাই দয়া করে দলকে সমর্থন করুন। এই দলটা খুবই তরুণ দল। তারা ভুল করবে। তারা ব্যর্থ হবে। তবে এটি আপনাদেরই দল। তাই সবাই একত্রে থাকুন। এখানে ব্যক্তিগত কিছু নেই। একটিই দল আছে, সেটা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।”
মন্তব্য করুন: